ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

পুঁজিবাজারে সূচকের সঙ্গে লেনদেনের পতন

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৮ মার্চ ২০১৫

পুঁজিবাজারে সূচকের সঙ্গে লেনদেনের পতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সূচকের পতন অব্যাহত রয়েছে। গত সপ্তাহেও এটির কোন ব্যতিক্রম ঘটেনি। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের হরতাল-অবরোধের হিংসাত্মক কর্মসূচীর কারণে উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে এতিমখানার দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ পুঁজিবাজারকে কিছুটা হলেও প্রভাবিত করেছে, যে কারণে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বীমার মতো কোম্পানিগুলোর লোভনীয় লভ্যাংশও বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে লেনদেনে গতি ও সূচক হারাচ্ছে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জ। গত সপ্তাহে টানা পাঁচ দিনে সূচকের পতনের সঙ্গে ডিএসই লেনদেন হারিয়েছে মোট ১১ শতাংশ। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গত দুই মাসজুড়ে সরকারবিরোধী হিংসাত্মক রাজনৈতিক কর্মসূচীর কারণে পুঁজিবাজারে এক ধরনের অস্থির আচরণ দেখা গেছে। এর মাঝেই একশ্রেণীর কৌশলী বিনিয়োগকারী বাজারে শেয়ার কিনেছেন, তাঁরা পুুঁজিবাজারে কিছুটা উর্ধগতির সুযোগে শেয়ার বিক্রির আদেশ বাড়িয়েছেন। অনেকে আবারও নতুন করে পোর্টফলিও বা পত্রকোষ সাজাচ্ছেন, এ কারণে বাজারে দ্রুত উত্থান-পতন অব্যাহত রয়েছে। বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে গেল সপ্তাহে মোট ৩২০টি কোম্পানির ৩১ কোটি ৮৫ লাখ ৭৯ হাজার ৩৬০টি সিকিউরিটিজের লেনদেন হয়। এর বাজার দর ছিল ১ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৩টি, কমেছে ২৫০টি ও অপরিবর্তিত ছিল ১৫টি এবং ২টি কোম্পানির লেনদেন হয়নি। এ সময় আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন কমেছে ১১ শতাংশ। ডিএসইতে গেল সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৯৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৬৪ পয়েন্টে। গত রবিবার এ সূচকের পরিমাণ ৪ হাজার ৭৬৩ পয়েন্ট। মোট ২ দশমিক ০৬ শতাংশ হারে গত সপ্তাহে ডিএসই সূচকটি হারিয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচিত সূচক ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের চেয়ে ৪১ পয়েন্ট কমে দঁঁঁঁাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৩০ পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৭৭২ পয়েন্ট। অর্থাৎ মোট ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ হারে সূচক হারিয়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূল্য কমেছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। গত রবিবার ডিএসইর মোট বাজার মূলধনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার তা কমে দাঁড়ায় ৩ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ হারে ডিএসই বাজার মূলধন হারিয়েছে। ডিএসইতে গেল সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে এগিয়ে ছিল শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সামিট এলায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড, শাশা ডেনিমস লিমিটেড, হিডেল বার্গ সিমেন্ট, গ্রামীণফোন লিমিটেড, মবিল যমুনা বিডি ও স্কয়ার ফার্মা। ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলো হলো- শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, মিথুন নিটিং, সিনো বাংলা ইন্ড্রাস্টিজ, আলহাজ টেক্সটাইল, ইফাদ অটোস, ফার কেমিক্যাল, সামিট এলায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে দর হ্রাসের তালিকায় ছিলÑ ইউসিবিএল, প্রাইম ফাইন্যান্স, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, মডার্ন ইন্স্যুরেন্স, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, ইমাম বাটন, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, এবি ব্যাংক, ফনিক্স ফাইন্যান্স ও ম্যাকসন্স স্পিনিং।
×