ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিদেশী ক্রেতাদের অনুপস্থিতি ॥ দাম দেড়গুণ বেশি

অভ্যন্তরীণ চাহিদায় নিম্নমানের চায়ে সয়লাব চট্টগ্রামের নিলাম বাজার

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৮ মার্চ ২০১৫

অভ্যন্তরীণ চাহিদায় নিম্নমানের চায়ে সয়লাব চট্টগ্রামের নিলাম বাজার

মহসিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম অফিস ॥ নিম্নমানের চা’তে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে স্থানীয় বাজার। বিভিন্ন বিপণন কোম্পানির প্যাকেটজাত চায়ের ক্ষেত্রেও একই। নিলাম বাজার থেকে নিম্নমানের চা প্রত্যাহারের পরিবর্তে বিক্রির হার বেড়ে গেছে। আর মৌসুমের শেষদিকের নিম্নমানের এসব চা কিনে নিচ্ছে স্থানীয় ক্রেতারা। স্থানীয় বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি এবং নিলাম বাজারে পাকিস্তানসহ বিদেশী ক্রেতাদের অনুপস্থিতির কারণে নিম্নমানের চা ঢুকে পড়ছে বাজারে। এর আগে এ ধরনের চায়ের প্রধান ক্রেতা ছিল বিদেশীরা। দেশে উৎপাদিত এ ধরনের ৯০ ভাগ চা চট্টগ্রামের একমাত্র নিলাম বাজারে আনার পর বিদেশে রফতানি হতো। স্থানীয় বাজারে উন্নতমানের চায়ের চাহিদা বরাবরই। কিন্তু দাম কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে নিম্নমানের চা ঢুকে পড়েছে। চায়ের নিলাম বাজার সূত্র জানিয়েছে, মৌসুমের আর ৪টি নিলাম সপ্তাহ বাকি রয়েছে। গত মঙ্গলবার ৪১তম নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ নিলামে ৯০ ভাগ চা ছিল নিম্নমানের। সাধারণত, মৌসুমের শেষদিকে চায়ের মান থাকে নিম্নগামী। অধিক বয়ষ্ক পাতা এবং খরা, বৃষ্টিহীন ও কুয়াশার কারণে পাতার অবস্থা ভাল থাকে না। এ ধরনের চা নিলামে আনা হলেও স্থানীয় ক্রেতাদের খুব বেশি চাহিদা থাকে না। মূলত এসব চায়ের ক্রেতা পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের ক্রেতারা। নিম্নমানের চায়ের যথেষ্ট কদর রয়েছে সেখানে। কিন্তু এ বছর ঘটেছে ব্যতিক্রম। অন্য বছর নিম্নমানের চায়ের দর নিলামে নেমে আসত কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে ৫৫ টাকায়। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকায়। নিলামে নিম্নমানের চায়ের দর বেড়ে গেছে। মূলত স্থানীয় ক্রেতাদের অস্বাভাবিক চাপ থাকার কারণে নিম্নমানের চা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ক্রেতারা এসব চা আর কিনছে না। উন্নতমানের চায়ের দর নিলাম বাজারে কেজিপ্রতি ২২৫ থেকে ২৫০ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এ ধরনের চায়ের মজুদও কম। চট্টগ্রাম, সিলেট এবং উত্তরবঙ্গের পঞ্চগড়ের চা বাগান থেকে উন্নতমানের চা আসছে না। নিলামে আনা চায়ের মধ্যে মাত্র ১০ ভাগ চা উন্নতমানের। এসব চা বিক্রির পাশাপাশি নিম্নমানের চা বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় ব্রোকাররাই জানিয়েছেন সাম্প্রতিক সময়ে আভ্যন্তরীণ বাজারে নিম্নমানের চা বাজারজাত হচ্ছে। আগে এসব চা স্থানীয় বাজারে আসত না। বিভিন্ন প্যাকেটয়াসরাও তাদের নিজস্ব বিপণনের জন্য নিম্নমানের চা বাজারজাত করছে। ফলে বাজারে এখন ভালমানের চায়ের সরবরাহ হ্রাস পাচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন বিপণন কোম্পানিগুলো উচ্চ হারে মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে দাম অপরিবর্তিত রেখে। ব্রোকাররা জানিয়েছেন, চা রফতানি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। সে সঙ্গে আভ্যন্তরীণ বাজারে চায়ের ঘাটতিও সৃষ্টি হচ্ছে। দু’বছর আগে চায়ের উৎপাদন ৬৩ মিলিয়ন কেজি হলেও তা আবার হ্রাস পেয়ে ৫৮ মিলিয়নে নেমে এসেছে। এর সঙ্গে আবার যোগ হয়েছে খরাজনিত কারণে চায়ের মানে নিম্নমুখিতা। দামও বেড়ে যাওয়ায় বিদেশী ক্রেতারা আসছে না।
×