ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কে আছো জোয়ান হও আগুয়ান

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৮ মার্চ ২০১৫

কে আছো জোয়ান হও আগুয়ান

(২য় পর্ব) তাই টিভি টকার সেজে, এনজিওর প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বা পত্রিকায় নিবন্ধ ফেঁদে এরা জনগণকে যারপরনাই বিভ্রান্ত করতে পেরেছে। কিন্তু মিথ্যাচার ও দুষ্কর্ম সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় এখন জনগণের এক বৃহত্তর অংশ তাদের এসব ধাপ্পাবাজি বুঝতে পারছে। অর্থাৎ এদের দেশবিরোধী মতলব ক্রমান্বয়ে জনসাধারণের চোখে ধরা পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু ২০১৩তে জামায়াত-হেফাজতি তা-বের সময় এসব এনজিও, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিকদের মুখোশটা খসে পড়ে। হেফাজতিদের পানি পান করিয়ে দোজাহানের নেকি হাসিলের চেষ্টায় সেদিন জাতি দেশের সবচেয়ে বড় সং জেনারেল এরশাদ ও কাজী জাফর প্রমুখের ভ-ামি প্রত্যক্ষ করেছে। যা হোক, হেফাজতি ও জামায়াতিদের নাড়ি পোঁতা আছে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশে। আর তাও এখন প্রকাশ পাচ্ছে। আদতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত হতে পারায় এই অপশক্তি তাদের দুরভিসন্ধি চরিতার্থ করার কাজে সদা তৎপর থাকতে পারছে। এদের এই সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আওয়ামী লীগও কম দায়ী নয়। আর এদের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশবিরোধী জেনারেল জিয়া ও তার বিএনপি এবং স্বৈরাচারী এরশাদের পৃষ্ঠপোষকতায়। অভিযোগ আছে যে, আওয়ামী লীগ যেসব ব্যক্তিকে টিভি চ্যানেল, কমিউনিটি রেডিও বা অন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে তাদের এক বৃহৎ অংশ এসবের লাইসেন্স বিক্রি করেছে বিএনপি-জামায়াতি ব্যবসায়ীদের কাছে। ফলে টিভি চ্যানেলের এক বড় অংশ আজ আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। টিভি চ্যানেলে এসে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসের সাফাই যারা গায় কিংবা প্রকাশ্যে এই সন্ত্রাসী কর্মকা-ের উস্কানি দেয় সরকার কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না? কেন এদের আইনে সোপর্দ করা হয় না? তথ্যমন্ত্রী এগুলোকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রমাণ হিসেবে জাহির করে আত্মপ্রসাদ লাভ করতে পারেন; কিন্তু বাস্তব সত্য এই যে, এ ধরনের প্রচারণার সুযোগ দান সরকারের দুর্বলতা বা সন্ত্রাসীদের সঙ্গে এক প্রকার আপোসকামিতারই নামান্তর! সন্ত্রাসকে টিভিতে বসে যারা জায়েজ করে কিংবা এ ধরনের জায়েজ করার সুযোগ যে সমস্ত চ্যানেল তৈরি করে দেয় তাদের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না? কেন সন্ত্রাসের উস্কানিদাতারা আটক হবে না? গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে এদের ছাড় দেয়া হলে তা মহাসঙ্কট ডেকে আনবেÑ এই সহজ কথাটি যদি সরকারের নীতিনির্ধারকরা মাথায় না রাখেন তাহলে সমূহ বিপদ। কোন কোন টিভি চ্যানেলের মালিক ও নীতিনির্ধারক আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে চিহ্নিত। এরা অবশ্যই আওয়ামী লীগের কাছ থেকে এই চ্যানেলের লাইসেন্স লাভ করেছেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এদের আবার তাদের চ্যানেলে টকশোর নামে কিংবা তদন্ত প্রতিবেদনের নামে প্রকারান্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপশক্তিকে জায়গা করে দিতে দেখা যাচ্ছে। গোলাম আযমের জানাজার লাইভ টেলিকাস্ট, খালেদা জিয়ার দলীয় অফিস পরিদর্শনের লাইভ টেলিকাস্ট কিংবা সন্ত্রাসী কর্মকা-ের সঙ্গে যুক্ত বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের নিছক দুর্বৃত্ত হিসেবে চিহ্নিত করার মধ্য দিয়ে এরা দেশের বর্তমান সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। এসব চ্যানেল-কর্তা কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও সরকারী মহলের কাছে এতই আদরণীয় যে অনেক ক্ষেত্রে এরাই সরকারী নীতি-নির্ধারণে ভূমিকা রাখছে বলে শোনা যায়। আর সে ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রে সরকারের জন্য ক্ষতিকর প্রতীয়মান হয় এমন অভিযোগও রয়েছে বিস্তর। দেশের সঙ্কটে গোলাম আযমের ছেলের বক্তব্য প্রচার বা স্বাধীনতাবিরোধীদের টকশোতে জড়ো করে দেশ-রাষ্ট্র-সরকার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বক্তব্য উপস্থাপনের যারা সুযোগ করে দেয় তারা কোনক্রমে জাতির কল্যাণকর বলে বিবেচিত হতে পারে না। দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পরিবর্তে এই দায়িত্বহীন সাংবাদিকতা চলছে অবাধে। সংবাদপত্র, সাংবাদিক বা গণমাধ্যম যদি বুঝে না বুঝে সন্ত্রাস কিংবা দেশবিরোধী অপকর্মের উস্কানিদাতা হয় তাহলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নামে তাদের যা ইচ্ছে তাই করতে দেয়ার অর্থ দাঁড়াবে সরকারের নীতিহীনতা ও দুর্বলতা। টিভির টকশোর কিংবা সংবাদ প্রচারের ব্যাপারে সেন্সরশিপ নয়, সরকারকে এ বিষয়ক সাংবিধানিক বিধিবিধান প্রয়োগ করতে হবে কঠোরভাবে। মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করে, বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে তারেক গংদের মিথ্যাচারকে প্রচারিত হবার সুযোগ করে দেয় এমন সংবাদপত্র বা চ্যানেলের অস্তিত্ব নিশ্চয় কাম্য হতে পারে না কারও। দেশের মূল ভিত্তি, রাষ্ট্রের মূল দর্শন, জাতীয় নেতাদের ভূমিকা এবং পাকিস্তান আমলে জাতির দীর্ঘ সংগ্রামের প্রতি যারা কটাক্ষ করে তাদের কথা প্রচারের সুযোগ দানকারীরা বা প্রচারণাকারীরা আইনের চোখে অপরাধী। সরকারের সমালোচনা এক জিনিস আর জাতিসত্তার ও স্বাধীন বাংলাদেশের মৌল ভিত্তিতে আঘাত হানা সম্পূর্ণভাবে অন্য জিনিস। মিডিয়ার স্বাধীনতা বা ভাইব্র্যান্ট গণতন্ত্রের নামে এদের জায়গা করে দেয়া রীতিমতো রাষ্ট্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। মিডিয়াকে অবশ্যই দায়িত্বশীল হতে হবে। নিয়মনীতি ইত্যাদি মেনে কাজ করতে হবে। বিডিআর বিদ্রোহের সময় আমরা কোন কোন অতি উৎসাহী সাংবাদিককে বিদ্রোহীদের বক্তব্য সরাসরি প্রচারের যে দায়িত্বহীন আয়োজন দেখেছি তা সাংবাদিকতা পেশার প্রতি চরম অবমাননা বৈ নয়। পরে এসব সাংবাদিকই দেশে ‘খ্যাতিমান’, ‘কীর্তিমান’ ও ‘ধৃতিমান’রূপে সরকারী মহলের কাছে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছেন। এই যে মূল্যায়ন তা এসব মহলের স্বার্থমগ্নতা, মতলববাজি এবং তাদের চরম দীনতা ও অজ্ঞতা প্রকাশ করে মাত্র। আজকের এই ঘোরতর সন্ত্রাসের ব্যাপারেও আমরা এক শ্রেণীর অতি উৎসাহী সাংবাদিক ও টকারের সাক্ষাত পাচ্ছি যারা সর্ববিচারেই জাতি-বিনাশী ভূমিকায় অবতীর্ণ। এদের লেজ কোন্ পর্যন্ত বিস্তৃত তা সন্ধান করে দেখতে হবে এবং সে লেজ কেটে দিতে হবে। সম্প্রতি মিডিয়া টাইকুন ফালুকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। কেমন করে এই লালু-ফালুরা ৪/৫ বছরের মধ্যে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে জনগণের চোখের সামনে তা প্রমাণসহ উপস্থাপন করা জরুরী। কিন্তু মুশকিল এই যে, এ ধরনের ফালু-লালুর অস্তিত্ব আওয়ামী লীগেও যে পাওয়া যাবে না সে ভরসা কোথায়। আদতে এক কঠিন কঠোর দুর্র্বৃত্তায়নের যাঁতাকলে বন্দী করে ফেলা হয়েছে এদেশের মানুষকে। সেই ৪৭ সাল থেকে এদেশের হতদরিদ্র ভাগ্য-বিড়ম্বিত মানুষ ইস্কান্দার মির্জা, ওমরাও খান, আইয়ুব, ইয়াহিয়া, টিক্কা খান আর গণবিরোধী আমলাদের, স্বার্থপর রাজনীতিকদের ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে, বুকের রক্ত ঝরিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আজ তাদের সে স্বাধীনতা হরণ করে নিতে উদ্যত ওই পাকিস্তানী আমলের গণবিরোধী চক্রের উত্তরসূরীরা। সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব দুর্বৃত্ত-দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং ক্ষমাহীন কতখানি তার ওপর নির্ভর করছে অনেকাংশে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত। ছাত্রলীগ-যুবলীগ আজ কোন রাজনৈতিক সত্তার প্রতিভূ নয় বরং আদর্শচ্যুত, দিকভ্রষ্ট ও মানুষের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সংস্থায় রূপান্তরিত হয়েছে। সুস্থ রাজনীতির চর্চা নেই, আদর্শ-মূল্যবোধের কোন অনুশীলন নেই, ইতিহাস চর্চার কোন ব্যবস্থা নেই কোথাও। ফলে এর পরিণতি যে ঘোর অমানিশা ডেকে আনবে এতে আর বিচিত্র কি! আওয়ামী লীগ নীতি-আদর্শের চর্চায় যদি অবিলম্বে না ফিরতে পারে, গণতন্ত্রকে শুধু মুখের বুলি না করে সাংগঠনিকভাবে তার অনুশীলন শুরু না করে তবে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি আবার এই দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে হয়ত! জনগণের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্তি কমে যাচ্ছে দিনকে দিন। কিন্তু কেন? দলের মধ্যে এমন কি কেউই নেই যিনি এটি নিয়ে বিশ্লেষণ করবেন এবং পথের দিশা বাতলাবেন। রাজনৈতিক দলের মূল শক্তি তার নীতি-আদর্শের চর্চা আর মূল ভিত্তি হচ্ছে জনগণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে দেশের অনেক মৌলিক বিষয়ে হাত দিয়েছেন এবং সেগুলোকে পুনরায় ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট রয়েছেন। তবে এজন্য তাঁর যে আদর্শনিষ্ঠ বিপুল কর্মী বাহিনী দরকার তা কতটুকু আছে সেটি দেখার বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ইচ্ছা, সৎ সাহস, সামর্থ্য ও মানসিক দৃঢ়তা প্রশ্নাতীত; কিন্তু এই মহাদুর্যোগকালে অপশক্তির মোকাবেলায় যে সাংগঠনিক ভিত্তি আর জনসম্পৃক্তি প্রয়োজন সেদিকে মনোনিবেশ করা সকলের আশু কর্তব্য। দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফের ভূমিকা কেন পরিষ্কার নয়? দল পরিচালনায় দৃঢ়চেতা ব্যক্তিত্ব আর ভগ্নমনোরথ আদর্শনিষ্ঠ কর্মীদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে কার্যকর উদ্যোগ কেন চোখে পড়ে না? মন্ত্রীদের অধিকাংশকে কেবল বাগাড়ম্বর করতে দেখা যাচ্ছে। আদর্শের চর্চা তাদের ক’জনের মাঝে আছে সেটিও তো বড় এক প্রশ্ন বৈ নয়! মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলাটা এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় দাবি। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে সকল প্রকার সঙ্কীর্ণতা এবং কর্তৃত্বের মানসিকতা ঝেড়ে ফেলে দল-মত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আস্থাশীল সব ব্যক্তি, সংগঠনকে এক কাতারে এনে দাঁড় করাতে হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ অনেক বেশি কার্যকর বলে বিবেচিত হবে। বিএনপি-জামায়াতের আসল উদ্দেশ্য ও মতলব বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের মেধাবী তরুণদের কাজে লাগাতে হবে স্বাধীনতাবিরোধীদের মুখোশ উন্মোচনকারী দলিল-দস্তাবেজ সংগ্রহ, প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ, লিফলেট-বুকলেট-পোস্টার ইত্যাদি তৈরি করতে। মোদ্দাকথা, দেশব্যাপী একটি বিশাল সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞ গড়ে তুলতে হবে। আর একটি বিষয় জনগণের কাছে পরিষ্কার করা জরুরী তা এই যে, খালেদা জিয়ার দুর্নীতিবাজ পুত্র তারেক রহমান আর সদ্য প্রয়াত অপর পুত্র কোকোর পরিবারের বর্তমান আয়ের উৎস কি? তারেক সেই যে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেল সেখানে তার কি চিকিৎসা চলছে? এই এতগুলো বছরের চিকিৎসা ও বাসাভাড়াসহ জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহ তারা করছে কিভাবে? লন্ডনে যে বিলাসবহুল বাড়িতে তারেক থাকে তার ভাড়া কত? বাংলাদেশে তার ব্যবসা-বাণিজ্য কি আছে- কে বা কারা সেগুলো দেখাশোনা করে? তারেক দুর্র্নীতিবাজ না হলে লন্ডনে এই বিপুল খরচ নির্বাহ করা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে কি করে- জনমনে এমন প্রশ্ন আছে। মায়ের শাসনামলে দুর্র্নীতির মাধ্যমে তারেক বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ না করলে ইউরোপে এমন শান-শওকতের সঙ্গে বসবাস করতে পারত না নিশ্চয়ই। অবশ্যই এসব কথা তুললে তারেক-খালেদার ভাড়াটিয়া বুদ্ধিজীবী-সাংবাদিক টকশোতে আর পত্রিকায় তারেক-কোকোদের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র এবং তারা জিয়াউর রহমানের ছেঁড়া গেঞ্জি ও ভাঙ্গা স্যুটকেসের কাহিনী নতুন মোড়কে উপস্থাপন করতে থাকবে। দেশের নিরপেক্ষতার ভেকধারী পত্রিকার এক সম্পাদক আবার এসব মিথ্যা-আবর্জনাপূর্ণ লেখা ফলাও করে ছাপবেন জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে। যা তিনি সম্প্রতি দুর্নীতিবাজ কোকোকে রক্ষার জন্য করেছেন নিজের পালিত কলামনিস্টদের দিয়ে কলাম লিখিয়ে। আসলে বাংলাদেশ এক বিচিত্র দেশ। তাই কোকোর মতো এক অখ্যাত অশিক্ষিত দুর্নীতিবাজের পক্ষেও কলম ধরার লোক এখানে পাওয়া যায়। তারেকের মতো অশালীন, লোভী, অশিক্ষিত, মহা দাঙ্গাবাজ ও মহাদুর্নীতিবাজের হয়ে টিভিতে গলা ফাটানোর আর পত্রিকায় নিবন্ধ রচনার জন্য ভাড়াটিয়া বুদ্ধিজীবীর অভাব হয় না। খালেদা ও জামায়াতের মানবতাবিরোধী অপরাধের সাফাই গাওয়ার জন্য আগ বাড়িয়ে বসে থাকে এদের এক উল্লেখযোগ্য অংশ। লন্ডনে বসে তারেক যেসব বাহাদুরি দেখাচ্ছে এর উৎসমূলে আছে দুর্নীতির টাকা, দেশবিরোধী দুর্র্নীতিবাজদের প্রত্যক্ষ মদদ, ইংল্যান্ডে বসবাসরত মৌলবাদীদের সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা ইত্যাদি। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রায়ই দেখা যায় বাংলাদেশ বিষয়ে কোন কোন ব্রিটিশ মন্ত্রী-এমপিকে হিতোপদেশ দিতে। তারা বাংলাদেশের বর্তমান সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণের জন্যও আমাদের সরকারকে চাপ দেন মাঝে মাঝে। আমি বুঝতে পারি না যে, তারেক রহমান যে লন্ডনের মাটিতে বসে বাংলাদেশবিরোধী সন্ত্রাসী অপতৎপরতায় লিপ্ত এ তথ্য কি স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড বা ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার গোচরে নেই! থেকে থাকলে তাদের মাটিতে বসে এসব অপকীর্তি করার লাইসেন্স বা অনুমতি ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে কেন? ব্রিটেন তো আন্তর্জাতিক জঙ্গী-সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের অন্যতম পার্টনার। তাহলে বাংলাদেশে সন্ত্রাস আমদানিতে সক্রিয় তারেক ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিবৃত্ত করতে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ নৈতিক দায় বোধ করছেন না কেন? ব্রিটেনে একাত্তরের বাংলাদেশের গণহত্যার অন্যতম এক নায়ক চৌধুরী মঈনুদ্দীন এত দাপটে থাকে কি করে? বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ সরকারের কাছে এই বিষয়গুলোর সদুত্তর চাই আমরা। ইরাক যুদ্ধে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের প্রতারণামূলক আচরণের কথা নিশ্চয়ই আমরা ভুলে যাইনি। আজ লন্ডনে বসে তারেক যেসব রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত তা কোন সভ্যদেশের কর্তৃপক্ষ গণতন্ত্রের বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে চলতে দিতে পারে কি? যদি পারে, তাহলে বুঝতে হবে যে, গণতন্ত্রকে নিজ নিজ কায়েমি স্বার্থে ব্যবহারই এসব গণতন্ত্রপ্রেমী দেশের কর্তৃপক্ষের মূল উদ্দেশ্য। আর তাই গণতন্ত্র আজ জনগণ দ্বারা, জনগণের জন্য ও জনগণ কর্তৃক শাসন-ব্যবস্থা প্রবর্তনের গালভরা বুলিতে পরিণত হয়েছে মাত্র। ঠিক এরকম অবস্থায় চারপাশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে আমরা ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি- ‘কে আছো জোয়ান হও আগুয়ান, হাঁকিছে ভবিষ্যৎ।’ লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক
×