ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৭:৫৩, ৯ মার্চ ২০১৫

 নির্দিষ্ট সময়ের  মধ্যে প্রকল্প  বাস্তবায়নের  নির্দেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) আওতায় বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্পের গুণগতমান বজায় রেখে তা সময় মতো শেষ করার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। রবিবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সকল মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা অণুবিভাগের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য হুমায়ুন খালিদ, আইএমডির সচিব শহিদ উল্লা খান ও পরিকল্পনা সচিব সফিকুল আজম প্রমুখ। মন্ত্রী এ সময় প্রকল্প বাস্তবায়নে সব ধরনের অপচয় রোধে দিকনির্দেশনা দিয়ে বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হলে প্রকল্পের সময় বৃদ্ধি হবে না। আর সময় বৃদ্ধি না হলে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে যায়। এতে অপচয় এমনিতেই কমে আসে। এ বৈঠকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কয়েকটি নির্দেশনা দেয়া হয়। এর মধ্যে চাহিদার ভিত্তিতে প্রকল্প নিতে হবে। প্রকল্পের বৈদেশিক অর্থ সহজে পেতে পরিকল্পনা কমিশনকে ভূমিকা নিতে হবে। টেন্ডারের ভেটিং হতে আইন মন্ত্রণালয় ও সিডি ভ্যাট নির্ধারণ সংক্রান্ত কাজ হতে এনবিআর এ বেশ সময় লাগে। এই সময় কমাতে হবে। প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ ও জনবল নিয়োগে অনেক সময় লাগে, সেটি দূর করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে যেখানেই সমস্যা হোক তা সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনকে অবহিত করতে হবে। আইএমইডির সক্ষমতা বাড়নোর ওপর জোর দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন বাজেটে অর্থ অপচয় কমাতে হবে। প্রকল্প নেয়ার ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির নির্ভরশীল কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অর্থনীতির সব সূচক ভাল; রেমিটেন্স, রফতানি এডিপির বাস্তবায়ন গত অর্থবছরের তুলনায়ও ভাল। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সামষ্টিক অর্থনীতিতে ক্ষতিকর কোন প্রভাব নেই। আগামী অর্থবছর থেকে কি ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়া হবে- সভায় তারও একটি স্পষ্ট রূপরেখা দেন পরিকল্পনা মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। একই সঙ্গে শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতভিত্তিক প্রকল্পেও আমরা বিনিয়োগ করব। এ তিনটি খাতে বিনিয়োগ আমরা আগামীর জন্য বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করছি। এ ছাড়া দারিদ্র্যবিমোচন ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে আমরা আরও বেশি প্রকল্প হাতে নেব। আমরা বিশ্বাস করি, এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ একদিকে যেমন ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশে পরিণত হবে তেমনি গড়ে উঠবে জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতি ও প্রযুক্তিভিত্তিক তথ্য ভা-ার। ফলে বাস্তবায়িত হবে ২০২১, ২০৩০ ও ২০৪১ সালের কাক্সিক্ষত স্বপ্ন। মন্ত্রী প্রকল্প গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আপনাদের নতুন নতুন উদ্ভাবনী প্রকল্প হাতে নিতে হবে। আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে, আমরা এমন প্রকল্প হাতে নেব যেখানে বিনিয়োগ করলে স্বল্পতম সুফল পাওয়া যায় এবং অর্থনীতিতে বহুমুখী ধনাত্মক প্রভাব ফেলে। তাহলে অর্থনীতিতে উৎপাদনশীলতা বাড়বে ও কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধিও বাড়বে। সারাদেশে প্রকল্প বণ্টন যেন সুষম হয়, সভায় সে দিকে খেয়াল রাখতেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, প্রকল্পের সুষম বণ্টন আমাদের নিশ্চিত করতেই হবে। উপকূলীয় অঞ্চল, নদী ভাঙন অঞ্চল, হাওড়-বাঁওড়, পার্বত্য অঞ্চল ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর দিকে বিশেষ নজর দিতেই হবে। এ সব এলাকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে আমাদের আরও প্রকল্প হাতে নিতে হবে।
×