ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অভিজিৎ ও ফারাবী

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ১০ মার্চ ২০১৫

সম্পাদক সমীপে

এখনও প্রমাণিত নয়, কিন্তু অভিজিৎ হত্যাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে ফারাবীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শফিউর রহমান ফারাবী নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীর সদস্য। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তিও হয়েছিলেন। কিন্তু পড়ালেখা শেষ করতে পারেননি। সে সময় নিষিদ্ধ এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তখন তার এক বছর জেলও হয়। ব্লগার রাজীব হত্যার পর এই ফারাবী উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান। তার স্বজনরা জানায় হিজবুত তাহরীর থেকে তাকে ফিরতে বলে কিন্তু সে শোনেনি। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অভিজিৎ হত্যার পর কয়েকটি ওয়েব সাইটে তথ্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, এই হত্যাকা-ের সঙ্গে ফারাবী জড়িত। অভিজিৎ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতরা গ্রেফতার এবং বিচারের মাধ্যমে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় কি না, এটাই দেখার বিষয়। কিন্তু প্রশ্ন এখানে নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, ফারাবীর হত্যার বিচার হলেই কি তা যথেষ্ট। ফারাবীর মতো একজন তরুণ কেন আর একজন তরুণকে হত্যার জন্য উদ্ভুদ্ধ হচ্ছে তা আমাদের তলিয়ে দেখতে হবে। ফারাবী একজন মেধাবী ছাত্র। সে কি জানেনি বা পড়ালেখা করেনি যে, ইসলামের আদর্শের দৃষ্টিতে হত্যাকে ঘৃণার চোখে দেখা হয়েছে। সাম্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ ইসলামের মূল মন্ত্র। মহানবী তাঁর শত্রুদের কখনও আহত করা তো পরের কথা গালিও দেননি। ফারাবী কিভাবে হিংস্র হয়ে উঠেছে। যারা তাকে হত্যায় উদ্ধুদ্ধ করছে তারা কখনও ইসলামের আদর্শের অনুসরণীয় লোক নয়। আমরা মানবিক হয়ে উঠব। আমরা যেন কারও অভিমতকে হত্যা করে থামিয়ে না দেই। যুক্তি দিয়ে যেন সব মতামতের জবাব দিতে শিখি। মানবতাবোধ যেন সবার ভেতরে জাগ্রত হয়। অভিজিৎ যেন হয়- কোন প্রতিহিংসার শেষ শিকার। নাজনীন বেগম আসাদ এ্যাভিনিউ, ঢাকা। সাবধান হতে হবে ষড়যন্ত্রের নেটওয়ার্ক গ্রাম-গঞ্জে, যানবাহনে, মসজিদ-মাদ্রাসা, পথে, চায়ের দোকানে ছড়িয়ে পড়ছে। আওয়ামী লীগ তথা সরকার পাহাড়সম ওজনের সমতুল্য গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপি, জামায়াত-শিবির ও যুদ্ধাপরাধীরা এবং ওদের দোসর বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রয়োজীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। সড়কপথে বাসে-ক্যাসেটে যুদ্ধাপরাধীসহ কতিপয় কথিত আলেমদের ওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়। যুদ্ধাপরাধী কথিত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর উস্কানিমূলক ওয়াজ এখনও প্রকাশ্য বাজানো হয়। গ্রাম-গঞ্জে ইসলাম প্রচার ওয়াজের নামে ফাঁকে ফাঁকে রাজনৈতিক কাজটি করা হয়। সরকার, আওয়ামী লীগ ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য সরাসরি প্রচার করছে শত শত লোকের উপস্থিতিতে। যেসব প্রভাবশালী বক্তিরা রাজনৈতিক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করে থাকে, স্থানীয় আওয়ামী ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানা কমিটি তাদের প্রতি নজরদারি এবং অনুসন্ধান করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এসব অতি পুরনো ঘটনা যা চলমান। অনেক মসজিদে শুক্রবার খুতবার ফাঁকে ফাঁকে সরকারের বিরুদ্ধে ও সাম্প্রদায়িকতার উস্কানি দেয়া হয় মুসল্লিদের উপস্থিতিতে। মাদ্রাসায় গোপন তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও সেদিকে ধর্মের কথা বলার মারনে মানুষ উদাসিনতা দেখা দেয়। প্রতিটি ওয়ার্ড সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি অযোগ্য ও অসচেতন হওয়াতে এরা নীরব ভূমিকা পালন করছে। এলাকার প্রতিটি মাদ্রাসা ও মসজিদে শিক্ষক এবং ইমামদের কর্মকা- পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। কিছু কিছু এলাকায় হেফাজতের গোপন তৎপরতা লক্ষণীয়। নানা উছিলায় মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের দলবদ্ধভাবে হাটে-বাজারে, সভা, মিছিল, সমাবেশে উপস্থিতি লক্ষণীয়। তাই সাবার এখন সাবধান হওয়ার সময় এসেছে। দেশে ধর্মীয় কর্মকান্ডের নামে কেউ যেন জঙ্গীবাদকে লালন করতে না পারে সেই বিষয়ে সরকারকে সচেত নতে হবে। প্রয়োজনে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। এম আলী, শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ।
×