ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মন্ত্রিসভায় স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনকে অনুদান দেয়ার প্রস্তাব

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১০ মার্চ ২০১৫

মন্ত্রিসভায় স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনকে অনুদান দেয়ার প্রস্তাব

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনগুলোকে অনুদান দেয়ার বিধান রেখে পূর্ণাঙ্গ আইন করার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘যুবকল্যাণ তহবিল আইন, ২০১৫’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, সামরিক শাসনামলে জারিকৃত অধ্যাদেশগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আবশ্যকীয়গুলো আইনে পরিণত করার সিদ্ধান্ত ছিল। ‘দ্য ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার ফান্ড অর্ডিন্যান্স-১৯৮৫’ এর বাংলা ভার্সন করে আইনটি অনুমোদন দেয়া হয়। সামরিক শাসনামলে জারি করা ‘দি ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার ফান্ড অর্ডিনেন্স ১৯৮৫’ দিয়ে এতদিন যুবকল্যাণ তহবিল পরিচালিত হয়ে এসেছে। মন্ত্রিসভার নির্দেশ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বাংলায় এই আইন করার প্রস্তাব উপস্থাপন করে। এ আইনের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনগুলোকে প্রকল্পভিত্তিক অনুদান দেয়া হচ্ছিল। বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনগুলোকে এখন প্রকল্পভিত্তিক অনুদান দেয়া হয়। এজন্য অনুদান দিতে আলাদা তহবিল গঠন করা হয়েছিল। ১৯৮৫ সালে এ তহবিল যখন হয় তখন ১৫ কোটি টাকা সিড মানি দেয় সরকার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে রেখে তার মুনাফা থেকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়। ১৯৮৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার যুব সংগঠনকে প্রায় ১২ কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ আইনের ফলে শিক্ষা, বিজ্ঞান, কারিগরি, ক্রীড়া, কলা ও সংস্কৃতি কাজের জন্য যুব সংগঠনকে অনুদান দেয়া যাবে। এর আগে সামরিক শাসনামলের অধ্যাদেশের মাধ্যমে যুব সংগঠনকে অনুদান দেয়া হতো। অন্য খাত থেকেও তহবিলে টাকা নেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো- কোন কোন কাজের জন্য অনুদান দেয়া যাবে তা বলা রয়েছে। আইনে অডিটের বিষয়ও রয়েছে। সরকারের অনুমোদন নিয়ে যুব মন্ত্রণালয় ইচ্ছা করলে অন্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুদান নিতে পারবে। দুই স্তরের পরিচালনা পদ্ধতি রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, একটি সিলেকশন কমিটি, এর প্রধান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রয়েছেন। প্রস্তাবগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোন সংগঠনকে কত টাকা অনুদান দেয়া যায় তার সুপারিশ করবেন কমিটি। এ সুপারিশ অনুমোদন করবেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে পরিচালনা বোর্ড। তবে ওই মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী থাকলে তিনি বোর্ডের সদস্য হবেন। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবও পরিচালনা বোর্ডের সদস্য হবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পরিচালনা বোর্ড ইচ্ছা করলে তহবিল পরিচালনার জন্য নীতিমালা করতে পারবেন। সরকার ইচ্ছা করলে পরিচালনার জন্য বিধিমালা করতে পারবে। তহবিল পরিচালনার জন্য আইনের বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করা যাবে। এপিএ স্বাক্ষর ॥ এক বছরে কত টার্গেট অর্জন করবেÑ সে বিষয়ে ৩৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ‘এ্যানুয়াল পারফরম্যান্স এগ্রিমেন্ট (এপিএ)’ স্বাক্ষরিত হয়েছে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগের সচিবের সঙ্গে এপিএ স্বাক্ষরিত হয়। বৈঠকে শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রথম ১০টি এপিএ স্বাক্ষরিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অভিজ্ঞতার আলোকে প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এক বছরে কী পারফর্ম করবে তা নিয়ে একটি খসড়া তৈরি করে। সেই প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের (সংস্কার ও সমন্বয়) নেতৃত্বে কমিটি অনুমোদন দিয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। মন্ত্রণালয় থেকে আবার চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়। টার্গেট অর্জনে সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা এপিএ স্বাক্ষর করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এপিএ’র ফলে একদিকে পারফরম্যান্স বাড়বে, অন্যদিকে জবাবদিহিতাও নিশ্চিত হবে। কে কোন কাজ করবে তাও বলা রয়েছে এপিএতে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কর্মকর্তারা যতœবান হবেন এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন। এর মধ্যদিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সমন্বয় হবে। প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের ওনারশিপ হিসেবে মন্ত্রীদের কাজের প্রশংসা করে আশাপ্রকাশ করেছেন কাজগুলো আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। স্বাক্ষরের জন্য ৩৮টি এপিএ উপস্থাপন করা হলেও ধর্মসচিব এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব দেশের বাইরে থাকায় তা স্বাক্ষরিত হয়নি। একইসঙ্গে অর্থ বিভাগের সচিব সোমবার বিদেশ থেকে আসায় স্বাক্ষরিত হয়নি সেটিও। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ তিনটি এপিএ পরবর্তীতে অনানুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হবে। ঈশ্বরদীতে উড়োজাহাজ চান ভূমিমন্ত্রী ॥ মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চালুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন। দীর্ঘদিন ধরে ওই বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিসভার এক সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভূমিমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি রানওয়ের জন্য জায়গা দিতে পারবেন কি না। ভূমিমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলে একমাস আগে প্লেনের টিকিট বুকিং হতো। এখন চলাচলই করছে না। এ সময় তিনি দ্রুত উড়োজাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন। মন খারাপ মন্ত্রিসভার সদস্যদের ॥ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ম্যাচের শুরুতে উইকেটের পতনে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য আলোচনা করেন। এ সময় তারা বলেন, শুরুতেই ২/৩টা উইকেট গেল। এ নিয়ে মন্ত্রিসভার কয়েক সদস্যের মন খারাপ ছিল বলে জানান একজন সদস্য।
×