ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হাটহাজারীতে পেট্রোল বোমায় মানুষ হত্যার পরিকল্পনা ছিল যুবদলের

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১২ মার্চ ২০১৫

হাটহাজারীতে পেট্রোল বোমায় মানুষ হত্যার পরিকল্পনা ছিল যুবদলের

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের হাটহাজারীর চারিয়া এলাকায় পেট্রোলবোমা নিক্ষেপে অটোরিক্সা চালকসহ ২ জনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনার নেপথ্যে নির্দেশ ও পরিকল্পনায় ছিল স্থানীয় যুবদল। নেতাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে অটোরিক্সাতে পেট্রোলবোমা ছুড়ে মারার ঘটনা। বুধবার চট্টগ্রামের একটি আদালতে এক আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে বেরিয়ে আসে এই তথ্য। এমরান হোসেন (২৮) নামের এ আসামি জবানবন্দীতে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে, যারা সকলেই যুবদলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এমরান নিজেও একজন যুবদলকর্মী। আদালত সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের বিচারিক হাকিম ইশরাত জাহানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে এমরান। এর আগে একই ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছিলেন ইকবাল হোসেন (২৮) এবং রবিউল হোসেন (৩২) নামের আরও দু’জন। তাদের বক্তব্যেও ঘটনার নেপথ্যে স্থানীয় যুবদলের পরিকল্পনার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আদালতে দেয়া জবানবন্দীতে এমরান হোসেন জানিয়েছে, পেট্রোল বোমা হামলার সময় তারা ঘটনাস্থলে ১৫ জন ছিলেন। এরমধ্যে তিনি ১২ জনের নামও প্রকাশ করেছেন। বাকি যে ৩ জনের নাম পরিচয় জানা নেই তাদের দেখলে চিনবেন বলে উল্লেখ করেন। পেট্রোলবোমা হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এমরান জানায়, সব হয়েছে স্থানীয় যুবদল নেতাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে দলের স্থানীয় নেতারা এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ রাত সাড়ে দশটার দিকে হাটহাজারীর চারিয়া বুড়িপুকুর পাড় এলাকায় হরতালকারীদের পেট্রোলবোমার আগুনে দগ্ধ হন অটোরিক্সাচালক সাবেক আহমেদ (২৮) ও যাত্রী দিনমজুর রণজিৎ নাথ (৩০)। এরমধ্যে ৫ মে চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান রণজিৎ। আর গত মঙ্গলবার সাবের আহমদও মারা যান। এ ঘটনায় ৫ মার্চ হাটহাজারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন পুলিশের এসআই আবদুর রাজ্জাক। এতে হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউপি সদস্য বিএনপি এয়াকুবসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়। সহিংস এ ঘটনার মামলায় এ পর্যন্ত মোট ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জে যুবদল কর্মীর স্বীকারোক্তি ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, কিশোরগঞ্জ সদরের চৌদ্দশত ইউনিয়নের কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কের সুলতানপুরে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমা হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে যুবদল কর্মী মেহেদী হাসান উজ্জ্বল। তিনি কিশোরগঞ্জ সদরের টুটিয়ারচর গ্রামের ফেরদৌস মিয়ার ছেলে এবং স্থানীয় যুবদলের সক্রিয় কর্মী বলে জানা গেছে। বুধবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ ১নং আমল গ্রহণকারী আদালতের বিচারক আলাউল আকবরের কাছে হাজির হয়ে ১৬৪ ধারায় তিনি এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে সেখানকার পুলিশের সহায়তায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে কিশোরগঞ্জে নিয়ে আসে। আদালতে জবানবন্দীর পর তাকে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বুধবার (৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদরের সুলতানপুরে যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসের ১০ জন অগ্নিদগ্ধসহ অন্তত ১৫ যাত্রী আহত হয়। এতে পুড়ে মারা যায় বাসে থাকা ৫ ছাগলসহ দেড় শতাধিক মুরগি। এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ বাদী হয়ে চিহ্নিত ১৩ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে।
×