ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকায় ক্রুইফ, সঙ্গে জার্মান গোলরক্ষক কোচ

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১২ মার্চ ২০১৫

ঢাকায় ক্রুইফ, সঙ্গে জার্মান গোলরক্ষক কোচ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এএফসি অনুর্ধ-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ অনুর্ধ-২৩ জাতীয় দলের (যুব দল) দায়িত্ব নিতে আবারও ঢাকায় আসছেন ডাচ্ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। সবকিছু ঠিক থাকলে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় তার্কিশ এয়ারলাইন্সের বিমানে করে ঢাকায় আসার কথা রয়েছে তাঁর। দেশে পৌঁছে দলের দায়িত্ব বুঝে নেবেন তিনি। আপাতত ঢাকার কোন একটি হোটেলে উঠবেন তিনি। ১৪ মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন করাবেন যুব দলের ফুটবলারদের। এরপর ১৫ মার্চ দলকে নিয়ে চলে যাবেন সাভারের জিরানির বিকেএসপিতে। সেখানে অনুশীলন চলবে আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত। ক্রুইফ এবার এবার সঙ্গে করে একজন গোলরক্ষক কোচ নিয়ে আসবেন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রটোকল অফিসার হামিদুজ্জামান নোমান এই গোলরক্ষক প্রশিক্ষককে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাবেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে- জাতিতে ডয়েস (জার্মানদের জাতীয়তা) এবং হল্যান্ডে কাজ করার কারণে বাফুফে প্রথমে শোয়েচলারকে ডাচ্ ভেবেছিল। পরে এই ভুল ধরা পড়ে। ৩৬ বছর বয়স্ক (জন্ম : ১৯৭৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর) গোলরক্ষক কোচের নাম ক্রিস্টিয়ান শোয়েচলার। ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী জার্মানির এই গোলরক্ষক কোচ ইউরোপিয়ান (উয়েফা), আফ্রিকান (সিএফ) এবং এশিয়ান (এএফসি) সংস্থাগুলোর ক্লাব ও জাতীয় দলগুলোতে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। কাজ করেছেন সুদানের আল-মেরিখ স্পোর্টিং ক্লাব (২০০৯-১০), লেবানন জাতীয় ফুটবল দল (২০১২-১৩) এবং সর্বশেষ সৌদি আরবের ইত্তিফাক ফুটবল ক্লাবে (২০১৩)। আল-মেরিখের হয়ে কাজ করার সময় তার ক্লাব ২০১০ সালে জেতে ‘সুদান কাপ।’ এছাড়া দলটি সিএএফ চ্যাম্পিয়ন্স লীগের মূলপর্বে উত্তীর্ণ হয়। শোয়েচলার ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের মূলপর্বে লেবাননকে উন্নীত করার লক্ষ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত হন ২০১২ সালে। তবে মূলপর্বে লেবনান যেতে না পারলেও দলটি তাদের ইতিহাসের সেরা সাফল্য পায় বাছাইপর্বে ইরানকে ১-০ গোলে হারিয়ে। ইরানের পর্তুগীজ কোচ কালোর্স কুইরোজ লেবানন দলের গোলরক্ষক আব্বাস হাসানের ভূয়সী প্রশংসা করতে বাধ্য হন। প্রকৃতপক্ষে আব্বাসের এই প্রশংসার কৃতিত্ব যায় শোয়েচলারের ঝুলিতেই। শোয়েচলার নিজ দেশের জার্মান স্পোর্ট ইউনিভার্সিটি কলোগনে থেকে পড়াশোনা করেছেন স্পোর্টস সাইন্স বিষয় নিয়ে। জার্মান ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন (ডিএফবি) এবং রয়্যাল ডাচ্ ফুটবল একাডেমি এ্যাসোসিয়েশন (কেএনভিপি) থেকে গোলকিপিংসংক্রান্ত সনদপত্র লাভ করেন। ২০০৮-০৯ পর্যন্ত কাজ করেন জার্মান গোলকিপার স্কুলে। এছাড়া ২০০০-০৮ পর্যন্ত কাজ করেন জার্মান ফুটবল একাডেমিতে। শোয়েচলারের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট ঘেঁটে জানা গেছে, তাঁর রয়েছে কোচ হিসেবে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু ২০০৯ সালের আগে কোথায় কাজ করেছেন, তার কোন বিবরণ নেই! অনুর্ধ-২৩ আসর শুরু হওয়ার আগে বাংলাদেশ দল কোন প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে কি না, খেললে কয়টি- এমন প্রশ্নের জবাবে দলের সহকারী কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেন, ‘ক্রুইফ দেশে এসে দায়িত্ব নেয়ার পর এটা তিনিই ঠিক করবেন।’ ছদিন আগেই ক্যাম্প শুরু হওয়াতে দলের খেলোয়াড়দের ফিটনেস বৃদ্ধি করতে নিশ্চয়ই বাড়তি সময় পাচ্ছেন? ‘আসলে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও ফেডারেশন কাপে খেলার কারণে খেলোয়াড়রা সবাই খেলার মধ্যেই ছিল। ফলে তাদের ফিটনেস ঠিকই আছে। তবে অনেক খেলোয়াড় আছে, যারা নিয়মিত খেলতে পারেনি বা সাইডবেঞ্চে বসে ছিল। তাদের নিয়ে একটু সমস্যা হতে পারে। তবে বাড়তি সময় পাওয়াতে অবশ্যই ভাল হবে এতে।’ টিটুর উত্তর। এখন দেখার বিষয়, ঘরের মাঠে এএফসি অনুর্ধ-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ দলের মূলপর্বে যাওয়ার লক্ষ্য পূরণ হয় কিনা এবং জার্মান গোলরক্ষক কোচ ক্রিস্টিয়ান শোয়েচলারের অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়ে গোলরক্ষক হিসেবে ভাল নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে পারেন কিনা রাসেল মাহমুদ লিটনরা।
×