অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দুই দিনের সূচকের উর্ধগতির পর আবারও বড় ধরনের ধাক্কা খেল পুঁজিবাজার। দেশে উৎপাদিত সব ধরনের জ্বালানি তেলের দর ব্যাপকভাবে কমানোর কারণে শুরুর দরপতন আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি পুঁজিবাজার। যদিও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মাত্র তিনটি কোম্পানি এই ধরনের তেল উৎপাদন করে থাকে। কিন্তু ভোক্তা পর্যায়ে দাম না কমলেও আতঙ্কের কারণে বিনিয়োগকারীরা প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রির পরিমাণ বাড়িয়েছেন। এই সুযোগে একটি পক্ষ আবারও শেয়ারের ক্রয়াদেশও বাড়িয়েছেন। যার কারণে দিনশেষে প্রধান বাজারে লেনদেন বেড়ে ফের তিন শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। দিনশেষে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় ৭৬ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে। সেখানে সব ধরনের সূচকই কমেছে প্রায় ১ শতাংশ। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও একই পরিস্থিতি বিরাজ করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, জ্বালানি খাতের আলোচিত কোম্পানি শাহজিবাজার পাওয়ারের মতো কোম্পানির দর কমার কারণে সার্বিক বাজারকেই প্রভাবিত হয়েছে। দিনটিতে শুধু লিন্ডে বাংলাদেশ ছাড়া সবকটি জ্বালানি খাতের কোম্পানিই দর কমেছে। যার কারণে পুরো বাজারেই এক ধরনের নেতিবাচক প্রবণতা ছিল। জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোর বেশ বড় মূলধনী কোম্পানি। তাই পুঁজিবাজারে উত্থানের ক্ষেত্রে যেমন এই খাতের ভূমিকা রয়েছে, তেমনি পতনের ক্ষেত্রেও এই খাতকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বুধবার ডিএসইতে ৩১০ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন এ বাজারে লেনদেন হয়েছিল ২৫৫ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার। এই হিসেবে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৫৫ কোটি টাকার বা ২২ শতাংশ।
এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নেয় ৩০৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৩টির, কমেছে ২৩৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টির শেয়ার দর।
সকালে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে লেনদেন শুরুর পর ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ৬৩ পয়েন্ট কমে নেমে গেছে ৪ হাজার ৫৮৫ পয়েন্টে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১০৫ পয়েন্টে। ডিএস ৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৭১৬ পয়েন্টে।
সারাদিনে ২৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন করে ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে শাশা ডেনিমস। আর ২৩ কোটি টাকার লেনদেন করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। এছাড়া অন্যান্য কোম্পানিগুলো হলো : ইফাদ অটোস, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, এসিআই, গ্রামীণফোন, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল, স্কয়ার ফার্মা, সামিট এ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড এবং হাইডেলবার্গ সিমেন্ট।
এদিকে ঢাকার বাজারের মতো অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও সারাদিনই নেতিবাচক প্রবণতা ছিল।
সকালে ইতিবাচক শুরুর পরও দিনশেষে সিএসই সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৬১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪৩ পয়েন্টে। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৩৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩০টির, কমেছে ১৭৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টির।