ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঝুঁকি নিয়ে এসএমইতে অর্থায়ন করছে ব্যাংক

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৫ মার্চ ২০১৫

ঝুঁকি নিয়ে এসএমইতে অর্থায়ন করছে ব্যাংক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এসএমইতে গুচ্ছ অর্থায়নের বিষয়ে কোন দিকনির্দেশনা অথবা নীতিমালা নেই। এটা তদারকি করার কোন প্রশাসনও নেই। তাই ব্যাংকগুলো ঝুঁকি নিয়েই গুচ্ছ অর্থায়ন করছে। ব্যাংকগুলো এসএমই খাতে যে পরিমাণ অর্থায়ন করছে তার মাত্র দুই শতাংশ গুচ্ছ অর্থায়ন হচ্ছে। এই অর্থায়নের ৭২ শতাংশই আবার শীর্ষ ৫ ব্যাংকের দখলে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যআয়ের দেশে পরিণত করতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে (এসএমই) অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্য পূরণে এসএমই’র উন্নয়নে প্রয়োজন এ খাতে গুচ্ছ (ক্লাস্টার) অর্থায়ন। শনিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত ‘এসএমই ক্লাস্টার (গুচ্ছ ভিত্তিক) উন্নয়ন: ব্যাংকের অর্থায়ন’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তরা এসব কথা বলেন। বিআইবিএম’র মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর মো. আবুল কাসেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহমুদ হোসেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মোঃ ইহসানুল করিম, বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই বিভাগের উপদেষ্টা সুকোমল সিংহ চৌধুরী প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএম’র অধ্যাপক ও পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শাহ মোঃ এহসান হাবিব। এ সময় তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো এসএমই খাতে যে পরিমাণ অর্থায়ন করছে তার মাত্র দুই শতাংশ গুচ্ছ অর্থায়ন হচ্ছে। ২০১৩ সালের হিসাবমতে ব্যাংকগুলো এসএমইতে ৯০ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা অর্থায়ন করেছে। যার মধ্যে গুচ্ছ অর্থায়ন মাত্র দুই হাজার কোটি টাকার মতো। আর গুচ্ছ অর্থায়নের ৭২ শতাংশই শীর্ষ ৫ ব্যাংকের। এরমধ্যে উত্তরা ব্যাংক ৩৮.০২ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ১৭.১১ শতাংশ, দি সিটি ব্যাংক ৬.০৭ শতাংশ, এবি ব্যাংক ৫.৯৮ শতাংশ এবং যমুনা ব্যাংক ৪.১৪ শতাংশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের ব্যাংকগুলো যেসব নিয়মনীতির মধ্যে থেকে ঋণ বিতরণ করে, এসএমই কেন্দ্রিক নয়। বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক। ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মোমতাজ উদ্দিন বলেন, ব্যাংকগুলো এসএমই উদ্যোক্তদের যথাযথভাবে মূল্যয়ন করে না। তাদের এই মনোভাবে পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি বলেন, দেশের মোট এসএমই ঋণের দুই শতাংশ গুচ্ছ অর্থায়ন হয়েছে, এটি ভালো খবর। এর অর্থ হলো ব্যাংকগুলো এসএমইতে গুচ্ছ অর্থায়ন করছে। তবে এই অর্থ এসএমই ছাড়া অন্য খাতে যাচ্ছে কিনা সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি করতে হবে। ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহমুদ হোসেন বলেন, যথাযথ ধারণা না থাকায় ক্লাস্টার ভিত্তিক অর্থায়নে ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে কিছুটা সঙ্কোচ কাজ করে। তবে শীর্ষ ৫ ব্যাংকের গুচ্ছ অর্থায়ন প্রমাণ করে এসএমইতে গুচ্ছ অর্থায়ন বেশ ফলপ্রসূ। ক্ষুদ্র ও মাঝারি অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানকেই ঋণ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। তবে এভাবে একক প্রতিষ্ঠানের চেয়ে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানকে গুচ্ছভাবে ঋণ দিলে বেশি কার্যকর হয়। এতে পশ্চাৎপদ খাতগুলোও বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায়।
×