ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় রাতে ভয়ঙ্কর বিএনপি-জামায়াত ক্যাডাররা

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ১৬ মার্চ ২০১৫

বগুড়ায় রাতে ভয়ঙ্কর বিএনপি-জামায়াত ক্যাডাররা

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ার গোকুল এলাকায় বিএনপি ও জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা রাতের সন্ত্রাস হিসেবে সাধারণ লোকজনের কাছে ভীতিকর হয়ে উঠছে। নাশকতা প্রতিরোধে এলাকাবাসী সোচ্চার হওয়ায় ক্যাডাররা আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থকসহ সাধারণ লোকজনের বাড়িঘরে প্রায়ই হামলা চালাচ্ছে। জামায়াত-বিএনপি ক্যাডারদের হামলা থেকে সাধারণ লোকজনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও রেহাই পাচ্ছে না। এমনকি নার্সারির কয়েক হাজার চারাগাছ পর্যন্ত ইতোপূর্বে কেটে ফেলা হয়েছে। হামলার সর্বশেষ ঘটনা ঘটে শনিবার রাতে মিনহাজ নামে এক আওয়ামী লীগ সমর্থকের বাড়িতে ২০/২৫ জনের সন্ত্রাসী ক্যাডার হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাড়িঘরের আসবাবপত্র কোপানোসহ ব্যাপক ভাংচুর ও বাড়ির লোকজনকে মারপিট করে। এ ঘটনায় আহত হয় ৩ জন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও ঘটনায় জড়িত কেউ আটক হয়নি। স্থানীয় সূত্র জানায়, বিএনপি-জামায়াতের হরতাল অবরোধে বগুড়া সদরের গোকুল এলাকায় সবচেয়ে বেশি যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়। এতে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় সাধারণ লোকজন নাশকতা বিরোধী কমিটি গঠন করে রাতে মহাসড়ক প্রহরা দেয়া শুরু করে। এর জের ধরে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ সাধারণ লোকজনের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাতের আঁধারে হামলা চলে। ১০ ফেব্রুয়ারি গোকুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি আব্দুর রহিমের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের মধ্যে দিয়ে বিএনপি-জামায়াত সাধারণ লোকজনের বাড়িঘরে হামলা শুরু করে। আব্দুর রহিম ছাড়াও তার আত্মীয় মোমিনের বাড়িতেও ওই সময় পেট্রোলবোমা হামলা চালায় বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা। রহিমের বাড়িতে পরে আরও দু’দফা হামলা হয়। এ ঘটনায় এলাকাবাসী সন্ত্রাসীদের মোকাবিলায় বৈঠক করে একটি কমিটি গঠন করলে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এর পর থেকে তারা এলাকার ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ লোকজনকে নানাভাবে ভীতি ও হুমকি দিতে থাকে। ২১ ফেব্রয়ারি রাতে মোখলেছুর রহমান নামে এক ব্যক্তির নার্সারিতে ক্যাডাররা ধারালো অস্ত্র হাতে হামলা চালিয়ে প্রায় ৫ হাজার গাছ কেটে ফেলে। তার অপরাধ ছিল আওয়ামী লীগ নেতা রহিমের বাড়িতে হামলার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে নাশকতা রোধে মহাসড়ক ও মহল্লায় রাতের পাহারা দেয়া দলে অংশ নেয়। নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ তৎপরতা চালালেও বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি। ১২ মার্চ একই এলাকার আব্দুল মালেকের বাড়ি ভাংচুরসহ ককটেল হামলা হয়, ১৩ মার্চ সাবেক ইউপি সদস্য আলতাফ আলী ম-লের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর ছাড়াও সম্প্রতি শাজাহান নামে এক ব্যক্তিসহ কয়েক জন বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়। আর সর্বশেষ হামলা হয় মিনহাজের বাড়িতে। হামলার শিকার বেশির ভাগ লোকজনই আওয়ামী লীগ সমর্থক। নাশকতা প্রতিরোধে সোচ্চার হওয়ায় এই হামলা ঘটছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। এসব ঘটনায় গোকুল এলাকার সাধারণ লোকজন বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগÑ যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কয়েকজন ধরা পড়লেও বাড়ি ঘরে হামলাকারীরা ধরা পড়ছে না। এ ব্যাপারে বগুড়ার পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, গোকুল এলাকার সন্ত্রাসীদের ধরতে সেখানে একটি পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। তবে আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। তিনি জানান, সন্ত্রাসী নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
×