ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

জয়নুল গ্যালারিতে ৪৭ শিল্পীর প্রাচ্য চিত্রকলা প্রদর্শনী শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৭ মার্চ ২০১৫

জয়নুল গ্যালারিতে ৪৭ শিল্পীর প্রাচ্য চিত্রকলা প্রদর্শনী শুরু আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রাচ্যধারার চিত্রকলাকে নতুনভাবে সমসাময়িক ভাবনায় উপস্থাপনে কাজ করে যাচ্ছে ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টাডি গ্রুপ। ২০০৯ সালে প্রথম ২১ শিল্পীর চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি। সেই ধারাবাহিকতায় প্রাচ্যরীতিতে চিত্রিত সমকালীন ৪৭ শিল্পীর পঞ্চম প্রাচ্যচিত্রকলা প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস ও মাহিন গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। সভাপতিত্ব করবেন চারুকলা অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক সৈয়দ আবুল বারক আলভী। প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচ্যকলা বিষয়ে শিক্ষাপ্রাপ্ত প্রবীণ ও নবীন শিল্পীবৃন্দ এবং সমকালীন কয়েকজন শিল্পী ও দুইজন অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রাচ্যচিত্র চর্চাকারী শিল্পী। চিত্রকর্মে শিল্পাচার্য অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবর্তিত ওয়াশ পদ্ধতির চিত্রকর্মই বেশি স্থান পাবে। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেন তাজুল ইসলাম, জাঁ-নেসার ওসমান, জাহিদ মুস্তাফা, ড. রশীদ আমীন, জি সি ত্রিবেদী ড. সুশান্ত কুমার অধিকারী, শঙ্কর মজুমদার, তারিক ফেরদৌস খান, ড. মলয় বালা, সুনীত কুমার, সীমা ইসলাম, কান্তিদেব অধিকারী, জাহাঙ্গীর আলম, মতুরাম চৌধুরী, গোপাল চন্দ্র সাহা, সুমন বৈদ্য, নায়লা হুমায়ারা, মহসীন কবীর, আশরাফা সনেট, বিকাশ আনন্দ সেতু, সুমন কুমার সরকার, তানজিমা তাবাচ্ছুম এশা, মুস্তাকিনা তারিন, অমিত নন্দী, শারমিন আক্তার, আইরিন সুলতানা লিজা, নাহিদা নিশা, সানজিদা আক্তার, নিপা রানী সরকার, চন্দন কুমার সরকার, সুস্মিতা সাহা রিমি, হাসিবা ইয়াসমিন, এম এ হোসাইন, ইতি রাজবংশী, পদ্মাবতী ঢালী, ঋদিতা আনিশা, হরেন্দ্রনাথ রায়, তানভিক জাহান, তৌহিদা হক, হাসুরা আক্তার কাজী নওরীন মিশা, তানিয়া আক্তার, তাজমুল হোসাইন, সৈয়দা আফসানা, সামিনা জামান, আফরোজা শাম্মী ও মামুনুর রশিদ। আগামী ২৩ মার্চ পর্যন্ত চলবে সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনী। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবে মঞ্চস্থ ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ি ॥ ২০০৫ সালের ১১ এপ্রিলের ঘটনা। গভীর রাতে সাভারের পলাশবাড়িতে ধসে পড়ে স্পেকট্রাম সোয়েটার এ্যান্ড নিটিং ফ্যাক্টরি। কারখানাটিতে নাইট শিফটে কর্মরত শতাধিক কর্মীর মধ্যে ওই ঘটনায় নিহত হয় প্রায় ৬৪ জন। ঝুঁকি মোকাবিলার কোন ব্যবস্থা ছাড়াই ঘটনার তিন বছর আগে ফ্যাক্টরিটি তৈরি হয়েছিল একটি জলাভূমির ওপর। মানবিক সৃষ্ট দুর্যোগের এ ঘটনা অবলম্বনে প্রাচ্যনাট নির্মিত মঞ্চনাটক ‘ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ি’। ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিটিউট (আইটিআই) ও শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব ও নাট্য সংলাপের পঞ্চম দিন সোমবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় নাটকটি। প্রযোজনাটির রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন আজাদ আবুল কালাম। একই দিন একাডেমির অন্য দুটি হলে আরও দুটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে সেন্টার ফর এশিয়ার থিয়েটার (সিএটি) পরিবেশন করে ‘ম্যাকাব্রে’ ও স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয়ে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের প্রযোজনা ‘প্রমিথিউস’। ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ি নাটকটির চরিত্র তারাভান সেদিনের নাইট শিফটে কাজ করতে আসা কর্মীদেরই প্রতিচ্ছবি। নাটকটি গ্রন্থিত হয় তার স্মৃতিচক্র, স্বপ্নচক্র আর জীবনচক্রের রোমন্থনে। যে কোন সময় মাথার ওপর ছাদ ভেঙ্গে পড়ে পিষে দেবে তার জীবন, এমনকি তার নড়ার উপায়টুকুও নেই। এ রকম অবস্থায় সে যেন একপ্রকার তার সমগ্র জীবনের পাওয়া-না পাওয়ার হিসাব মিলিয়ে নেয়। সেই হিসাব প্রতিনিধিত্ব করে তারই মতো শত শত তারাভানের, যাদের অনেকেই এভাবে মরে যায়, আবার কেউ কেউ বেঁচে থাকে কারখানার মেশিনের মতো নির্বাক আজ্ঞাবহ হয়ে, দাস হয়ে। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন পারভীন সুলতানা, মোহাম্মদ রফিক, রিফাত আহমেদ, গোপী দেবনাথ প্রমুখ। নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে সিএটি পরিবেশন করেন ম্যাকাব্রে। আনিকা মাহিন রচিত ও কামালউদ্দিন নীলুর নিদের্শিত এই নাটকটিতে বাচিক কিংবা আঙ্গিক অভিনয়ের পাশাপাশি দর্শক মুগ্ধ হয়ে দেখল ভিডিওগ্রাফি, মাল্টিস্ক্রিন প্রজেকশন টেকনোলজিসহ ত্রিমাত্রিক প্রজেকশন, এ্যানিমেশন, স্থাপনাশিল্প। আর নাটকের গল্পটি মানুষের গভীরে থাকা মুক্তির আকাক্সক্ষা। যেখানে দেখা গেল মানুষের বন্দীদশার চিত্র। বর্তমান বিশ্বের রাজনীতির ভেতরে গেঁথে থাকা চলমান সহিংসতা ও মানুষের অসহায়তার চিত্রও ছিল নাটকে। কুশীলবরা ছিলেনÑ সেতু আজাদ, মেহমুদ সিদ্দিকী, মেসবাউল করিম, বাপ্পি আমিন, সুপ্রিয়া দাস, আনিকা মাহিন, চন্দ্র বর্মণ, মুনা মর্জিনা, হোসেন ইসমাইল প্রমুখ। প্রচলিত লোকগাঁথার সঙ্গে আধুনিক বিশ্বের অনাচার আর ক্ষমতার দ্বন্দ্বকে তুলে ধরা হয়েছে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের প্রমিথিউস নাটকে। স্টুডিও থিয়েটারে নাটকটি পরিবেশন করে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়। ক্ষমতা প্রতিযোগিতার বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছেন একজন প্রমিথিউস, যে শূন্য থেকে চৈতন্য এনে ফুঁ দিয়ে ভরিয়ে দেবে চিত্ত। নির্দেশনা দেবে নতুন নেতৃত্বের। গ্রিক দেবতা জিউস নাটকে যতটা না ঈশ্বর, তার চেয়ে বেশি ফেরাউন, হিটলার ও লর্ড ক্লাইভের প্রতিচ্ছবি। অনাচারের স্বর্গরাষ্ট্র ছেড়ে সাধারণ মাটির পৃথিবীতে সমতা সাম্য প্রতিষ্ঠায় আসবেন প্রমিথিউস। গ্রিক নাটক প্রমিথিউস বাউন্ডকে উপজীব্য করে এমন এক গল্প সাজিয়েছেন প্রমিথিউসের রচিতা আনন জামান। নির্দেশনায় ছিলেন মোস্তাফিজুর নূর ইমরান। অভিনয় করেন মীর জাহিদ হাসান, শাহনেওয়াজ, জাহিদুল, উৎপল চক্রবর্তী, মঞ্জুরুল করিম মিশু, পলি বিশ্বাস, রাসেল আহমেদ, সৈয়দ ফেরদৌস ইকরাম, ইকবাল চৌধুরী, এনামুল, সোনিয়া, শাপলা, সাথী, তন্নি, শিশির, রিফাত, জানেসার, সামিউল, প্রবীর, রাফিন, রাজিব হোসেন, আরিফ, পূর্ণিমা সাহা ও ইমতু রাতিশ। উৎসবের ষষ্ঠ দিন আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনটি নাটকের প্রদর্শনী হবে। প্রধান মিলনায়তনে চীন নাট্যদল ইয়াংফু প্রমোশন এ্যান্ড প্রটেশন সেন্টার পরিবেশন করবে ‘গ্যাম্বলার ওয়াং প্রিপেয়ার্স দ্য নিউ ইয়ার’ এবং ‘রোমান্স ইন বিটিং দ্য বার্ডস’। পরীক্ষণ হলে আরশীনগর ‘সে রাতে পূর্ণিমা ছিল’ ও স্টুডিও থিয়েটার হলে পদাতিক বাংলাদেশ ‘পোড়ামাটি’। সত্যেন সেন গণসঙ্গীত উৎসব ॥ ‘পথে পথে মিছিলের প্রতিরোধ, জনতার ঐক্যকে গড়েছি’ সেøাগানে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে আগামী ২৭ ও ২৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠ সত্যেন সেন গণসঙ্গীত উৎসব ও জাতীয় গণসঙ্গীত প্রতিযোগিতা ২০১৫’। এ উপলক্ষে সারাদেশের প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা বিভাগীয় পর্যায়। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে সকাল ১০টায় শুরু হবে এ প্রতিযোগিতা। ঢাকা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা অংশ নেবেন বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায়। বিচারক থাকবেন মাহমুদ সেলিম, শাহ জামাল তোতা এবং সোহানা আহমেদ। বিভাগীয় পর্যায়ে বিজয়ী শিল্পীরা আগামী ২৭ মার্চ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় চূড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ভারতের গণসঙ্গীতশিল্পী শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার। দুই দিনের উৎসবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কয়েকজন কণ্ঠসৈনিককে উদীচীর পক্ষ থেকে সম্মাননা জানানো হবে।
×