ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিলবোর্ড ও ব্যানারে ছেয়ে যাচ্ছে নগরী

চসিক নির্বাচনের জোর হাওয়া বইছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৭ মার্চ ২০১৫

চসিক নির্বাচনের জোর হাওয়া বইছে

মোয়াজ্জেমুল হক/হাসান নাসির ॥ দিন যতই ঘনিয়ে আসছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনী হাওয়া ততই জোরালোভাবে বইতে শুরু করেছে। অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হচ্ছে, ২০ দলীয় জোট এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক আর না করুক সরকার এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে তৎপর। সঙ্গতকারণে নির্বাচন কমিশন তাদের যাবতীয় প্রস্তুতিও সম্পন্ন করার কাজে ব্যাপকভাবে মনোনিবেশ করেছে। এখন শুধু তফসিল ঘোষণার বাকি। ইতোপূর্বে আগামী মে-জুন মাসের মধ্যে এ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জল্পনা-কল্পনা করা হয়ে থাকলেও সর্বশেষ সোমবার পুলিশের আইজি জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরামর্শ প্রদান করেছেন। এদিকে, তফসিল ঘোষিত না হলেও ভোট গ্রহণের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশনা এসে গেছে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। আগামী জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে চসিক নির্বাচনে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে কমিশনের আগেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় বলে আভাস মিলেছে। তফসিল ঘোষণার জন্য নির্বাচন কমিশন এখন সুবিধামতো সময়ের অপেক্ষায়। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খোরশেদ আলম জনকণ্ঠকে জানান, যাবতীয় প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু হয়ে গেছে। তফসিল কখন ঘোষিত হবে তা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত। তবে উপর থেকে নির্দেশনা এসেছে ভোট গ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ ও ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত করার। সে অনুযায়ী কাজও চলছে। চসিক নির্বাচনের জন্য এবার প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের জন্য প্রায় ১৭ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করা হবে। মূলত স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও সরকারী-আধাসরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই এ দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন। নিয়োগের পর তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও আচরণবিধি সম্পর্কে ধারণা দেয়া হবে। তবে অধিকাংশই এর আগেও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করায় এ কাজটি তাদের জন্য কঠিন নয়। ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার ভোট কেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়ছে। চসিক নির্বাচনে এবার ভোট কেন্দ্র হবে প্রায় সাড়ে ৭শ’। প্রসঙ্গত, সর্বশেষ হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী প্রায় ৫০ লাখ জন অধ্যুষিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভোটার সংখ্যা ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯৮ । যাচাই-বাছাই শেষেও মোট ভোটার খুব একটা হেরফের হবে না। অর্থাৎ চসিকে এবার ভোটার হবে সাড়ে ১৮ লাখের কিছু কম বা বেশি। চসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা নির্বাচন অফিসে এ বিরাট কর্মযজ্ঞের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এখন অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এদিকে, নির্বাচন কমিশন থেকে চসিক নির্বাচনের বিষয়ে পরিষ্কার নির্দেশনা চলে আসায় চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রবাহিত হতে শুরু করেছে ভোটের হাওয়া। বিশেষ করে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা নেমে পড়েছেন। নগরীর অলিগলিতে শোভা পাচ্ছে দোয়া ও আশীর্বাদ চেয়ে নেতাদের ছবি সম্বলিত পোস্টার ও বিলবোর্ড। এক্ষেত্রে এগিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতারা। অপরদিকে, বিরাজমান বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকটাই নীরব বিএনপি। নেতারা রয়েছেন আত্মগোপনে। বিএনপি সমর্থিত বর্তমান মেয়র এম মনজুর আলমকেও তেমন তৎপর দেখা যাচ্ছে না। বিএনপি শেষ পর্যন্ত চসিক নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা তা নিয়েও আলোচনা রয়েছে খোদ দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে। আওয়ামী লীগ থেকে চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হতে চান চার নেতা। এর মধ্যে শোডাউনসহ বিভিন্ন কারণে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। তিনি এর মধ্যে ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন- দলীয় সমর্থন নিয়ে নাগরিক কমিটির ব্যানারে মেয়র পদে প্রার্থী হবেন। এরপর আরও যারা মেয়র পদে দলীয় সমর্থন চান তারা হলেন- নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির উদ্দিন এবং কোষাধ্যক্ষ ও চউক চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম।
×