ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তৃণমূলে খেলাধুলার সুবিধা নিশ্চিত করতে এ উদ্যোগ

৪৮৭ উপজেলায় ৪৯০ খেলার মাঠে স্টেডিয়াম হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৮ মার্চ ২০১৫

৪৮৭ উপজেলায় ৪৯০ খেলার মাঠে স্টেডিয়াম হচ্ছে

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ তৃণমূল পর্যায়ে ক্রীড়া সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য দেশের ৪৮৭টি উপজেলায় স্টেডিয়ামের প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৩ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। এর মাধ্যমে ৪৯০টি খেলার মাঠকে স্টেডিয়ামে রুপান্তর করে উন্নয়ন করা হবে। ফলে খেলাধুলার চর্চা ও অনুশীলন বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে শুধু ক্রিকেটই নয় ফুটবলসহ অন্যান্য খেলার মান বাড়বে এবং যোগ্য খেলোয়াড় তৈরি হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা। আগামী বছরের জুনের মধ্যে এ উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য হুমায়ুন খালিদ জানান, বর্তমান সরকার খেলাধুলার মান উন্নয়নে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করছে। তৃণমূল পর্যায়ে যুবসমাজের কাছে ক্রীড়া সুবিধা পৌঁছে দিতে উপজেলা পর্যায়ে খেলার মাঠের অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। দেশের ৪৮৭টি উপজেলার ৪৮৯টি খেলার মাঠকে স্টেডিয়ামের প্রাথমিক অবকাঠামো সুবিধা নির্মাণ করা হলে খেলাধুলার সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। এ সব বিবেচনায় এ সংক্রান্ত প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশের প্রত্যেক জেলায় স্টেডিয়াম রয়েছে। জেলা পর্যায়ে এ সব স্টেডিয়ামে নিয়মিত বিভিন্ন টুর্নামেন্টের আয়োজনসহ খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দেশের জনসাধারণের বড় একটি অংশ গ্রামে বসবাস করে। উপজেলা পর্যায়ে ভাল খেলার মাঠ না থাকায় গ্রামের ছেলে-মেয়েরা নিয়মিত খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে পারে না। ফলে যুবসমাজের একটি বড় অংশ বিভিন্ন অসামাজিক ও অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। তাই দক্ষতাসম্পন্ন খেলোয়ার তৈরি ও যুবসমাজের শারীরিক এবং মানসিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তাদের বিভিন্ন খেলাধুলায় সম্পৃক্ত রাখার জন্য সরকার খেলাধুলার পরিবেশ সৃষ্টিসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রত্যেক উপজেলায় বিদ্যমান খেলার মাঠে অবকাঠামো নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয়ার নির্দেশ দেন। এ নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যেক উপজেলা পর্যায়ে কমপক্ষে একটি করে খেলার মাঠ উন্নয়নের জন্য এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, খেলার মাঠ উন্নয়ন, খেলোয়াড়দের জন্য ড্রেসিং রুম নির্মাণ এবং বসার জন্য আরসিসি বেঞ্জ নির্মাণ করা হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর ২০১৪ সালের ১১ নবেম্বর এ প্রকল্পটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ণ কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সুপারিশ অনুযায়ী উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ কাজ শেষ করে পরিকল্পনা কমিশন। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) সূত্র জানায়- জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে খেলাধুলা ও ক্রীড়া সুবিধাদির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ বিষয়ে ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কৌশলগত লক্ষ্যে উল্লেখ রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে স্টেডিয়ামের প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ শীর্ষক এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪৮৭টি উপজেলার ৪৯০টি খেলার মাঠ ক্রীড়া অবকাঠামো সুবিধা সৃষ্টি করা হবে। ফলে দেশে খেলোয়াড় বা ক্রীড়াবিদদের বিভিন্ন খেলার সুবিধা বাড়বে। এক্ষেত্রে প্রকল্পটি ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য চলতি অর্থবছরে (২০১৪-১৫) প্রয়োজনীয় ১০ কোটি টাকা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন খাতের থোক বরাদ্দ থেকে এবং অবশিষ্ট ১১৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা আগামী অর্থবছরের (২০১৫-১৬) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মধ্যমেয়াদী বাজেট কাঠামোর (এমটিবিএফ) আওতায় প্রাক্কলিত বরাদ্দ থেকে ব্যয় করা হবে বলে এক প্রত্যয়ন পত্রে পরিকল্পনা কমিশনকে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব। সূত্র জানায়, আগামী মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা।
×