ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বড় অঙ্কের লোকসানে দেওয়ানগঞ্জ জিলবাংলা সুগার মিল

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৯ মার্চ ২০১৫

বড় অঙ্কের লোকসানে দেওয়ানগঞ্জ জিলবাংলা সুগার মিল

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় এবারও বড় অঙ্কের লোকসানে পড়েছে দেওয়ানগঞ্জ জিল বাংলা সুগার মিল। বছরের পর বছর ক্রমাগত লোকসানের কারণে শ্বেতহস্তিতে পরিণত হয়েছে জামালপুরের কৃষিভিত্তিক বৃহৎ এ শিল্প কারখানাটি। তবে মিলটির আধুনিকায়ন এবং চিনির মূল্য বৃদ্ধি পেলে লোকসানের বোঝা অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করছেন মিল সংশ্লিষ্টরা। যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বিধৌত জামালপুরের মাটি আখচাষে অত্যন্ত উপযোগী। যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের বিস্তীর্র্ণ চরাঞ্চলের বালি জমিতে আখ ও কিছু এলাকায় ভুট্টা ছাড়া অন্য কোন ফসল ফলে না। আর এ কারণে এই অঞ্চলের কৃষকরা আখকেই একমাত্র ফসল হিসেবে চাষ করে আসছে যুগ যুগ ধরে। তবে নদী ভাঙ্গনে প্রতিবছর আখের চাষ কমে যাওয়া এবং বন্যার কারণে ফলন বিপর্যয় ঘটার পাশাপাশি কৃষকরা গুড় তৈরি করায় মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্র অর্জনে ব্যর্থ মিল কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিবছর বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হয় মিল কর্তৃপক্ষকে। ক্রমাগত লোকসানের ফলে এপর্যন্ত প্রায় দুই শ’ কোটি টাকা পুঞ্জীভূত লোকসানের ভারে নুয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষিভিত্তিক এ শিল্প-কারখানাটি। আখচাষীদের অভিযোগ, মিলের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী, সিবিএ নেতারা টাকার বিনিময়ে পুর্জি বিতরণ এবং মাসের পর মাস আখের টাকা বকেয়ার কারণে অনেক আখচাষী মিলে আখ সরবরাহ না করে গুড় তৈরি করায় আখের একটি অংশ থেকে বঞ্চিত হয় মিল কর্তৃপক্ষ। এতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অনেকটা বাধাগ্রস্ত হয় মিল কর্তৃপক্ষ। মিলের ইক্ষু বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ২০১৪-১৫ মাড়াই মৌসুমে ১ লাখ ৫০ হাজার আখ মাড়াইয়ের বিপরীতে ১২ হাজার ৩শ’ ৭৫ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০১৪ সালের ১২ নবেম্বর মিলের মাড়াই শুরু করা হয়। পরবর্তীতে আখের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ৮৫ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে প্রায় ৬ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করা হয়, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। এতে মিলের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্র অর্জিত না হওয়ায় এ বছরও প্রায় ৫০ কোটি টাকা লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। ফলে দুই হাজার মেট্রিক টন চিনি বিক্রির পরও এখন পর্যন্ত ৪ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে আখচাষীদের। চলতি মাড়াই মৌসুমে লোকসানের কথা স্বীকার করে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রউফ খান বলেন, দুই দফা বন্যায় আখের ফলন বিপর্যয় হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে আগামীতে লোকসান কমিয়ে আনার জন্য আখের চাষ বৃদ্ধিসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
×