ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চাই শক্তিশালী অভিযান

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২১ মার্চ ২০১৫

চাই শক্তিশালী অভিযান

চট্টগ্রামে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন শিবিরের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত দুটি কলেজ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, তারা বড় ধরনের নাশকতা ঘটানোর জন্য প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছিল। অবস্থাদৃষ্টে ধারণা হচ্ছে তাদের রাজনৈতিক মিত্রশক্তি বিএনপির তথাকথিত চলমান অবরোধ-হরতালের নেতিবাচক আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী নাশকতা চালানোর জন্য তারা সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছে। একে ২২ রাইফেলের মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র পাওয়ার বিষয়টি থেকে ধারণা করতে অসুবিধে হয় না যে, দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্তে নিয়োজিত সন্ত্রাসীরা কতখানি সুসংগঠিত এবং তাদের নেটওয়ার্ক কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়। একটি ছাত্রাবাসের পাশে মাটির কয়েক ফুট নিচ থেকে একে ২২ রাইফেল, রকেট ফ্লেয়ারের মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। লক্ষণীয় হলো এসব অস্ত্র মানবতাবিরোধী অপরাধে দ-প্রাপ্ত জামায়াতের নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবি করা একটি ব্যানারে মোড়ানো ছিল। ছাত্রাবাসে তল্লাশির সময় জিহাদী বইও উদ্ধার হয়। সুতরাং এতে বিন্দুমাত্র সংশয়ের অবকাশ নেই যে জামায়াত-শিবির-বিএনপি দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয়ার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মাত্র কিছুদিন আগেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকা ও সীতাকু-ের দুর্গম পাহাড়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বোমা উদ্ধারের ঘটনা দেশবাসীকে বিস্মিত করে। রাজধানীতে তিন ছাত্রদল নেতার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিস্ফোরক ভর্তি বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ৫৮টি ককটেল, ১টি পাইপবোমা, ৪৮টি পেট্রোলবোমা, ৫০০ গ্রাম সালফার পাউডার এবং নাশকতার কাজে ব্যবহৃত অন্যান্য সরঞ্জাম। এ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ পেলে ঘাতকরা কী বিরাট ক্ষতিসাধনই না করত! মারা পড়তে পারত হাজারো মানুষ। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ চারটি স্থাপনায় অভিনব কৌশলে নাশকতা চালানোর প্রস্তুতি নেয় তারা। আমরা আশঙ্কার কথা এর আগেও ব্যক্ত করেছি। বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিশ দলীয় জোটের চলমান নাশকতাই শুধু নয়, ভবিষ্যতে দেশকে অস্থিতিশীল, অকার্যকর এবং একটি জঙ্গী রাষ্ট্রে পরিণত করার নীলনক্সা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে সারাদেশেই অস্ত্র ও গোলাবারুদের এক শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। এমন আশঙ্কাও অমূলক নয় যে, দেশবরেণ্য ব্যক্তিদের জীবননাশের জন্য আত্মঘাতী বোমা হামলাও চালানো হতে পারে। সম্প্রতি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, অস্ত্রবাজরা তাদের কৌশল পরিবর্তন করছে, মানুষ মারার উপায় হিসেবে তারা নিত্যনতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন করছে। তাই শুধু চট্টগ্রাম কিংবা আংশিক ঢাকা নয়, প্রয়োজন সমন্বিতভাবে দেশব্যাপী বড় ধরনের অস্ত্র উদ্ধার অভিযান। জরুরী ভিত্তিতে চালাতে হবে শক্তিশালী উদ্ধার অভিযান। একটি অভিযানে সাফল্য এলেই আত্মসন্তুষ্টি নয়, বরং বাড়তি সতর্কতা নিয়ে নতুন করে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। জঙ্গীবাদের কাছে কোনক্রমেই নতিস্বীকার নয়। বরং জঙ্গীদের সকল অস্ত্রভা-ার খুঁজে বের করে নাশকতার আশঙ্কা নাশের মাধ্যমে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে।
×