ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্বাধীনতার প্রতি

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২১ মার্চ ২০১৫

স্বাধীনতার প্রতি

স্বাধীনত দিবসে প্রতিটি বাঙালী মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে । এই স্বাধীন দেশকে পিছিয়ে দিতে হত্যা করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে। সংবিধান থেকে সুকৌশলে বাদ দেয়া হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালী জাতীয়তাবাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুই মূলনীতিকে। সংবিধান পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার রহিত করা হয়। দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে ছিটকে ফেলে মৌলবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়াস চালিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ক্ষমতাসীন সরকারগুলো। দালাল আইন বাতিল করে, যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে আনার ফলে দেশ কলঙ্কিত হতে থাকে। যুদ্ধাপরাধীরা মৌলবাদী রাজনীতি চর্চা করার কারণে দেশ পিছিয়ে যায়। মৌলবাদী রাজনীতির ধারকরা হয়ত ভাবতে পারেনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ এ দেশে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হবে, চার জাতীয় নেতার বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে। দেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতাকে দূর করতে হলে অবশ্যই চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা । এদেশে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হওয়াটা জরুরী। তা-না হলে দেশ জঙ্গীবাদের দিকে ধাবিত হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিপর্যস্ত হবে। মেছের আলী শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ৪৫ বছর আগের কথা। আমি তখন ওয়েস্ট এ্যান্ড স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। ’৬৯ থেকে ৭১-এর সেই সময়ে দেশের আপামর মানুষ স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ হয়। মনে পড়ে সেই সময়ে আমি ও আমার দুই ভাই মিলে ট্রেন থামিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করি। আমাদের সেøাগান ছিল ‘জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো, ৬দফা, ১১দফা মানতে হবে মেনে নাও, আবদুল গণি সড়কের রাজপথ তখন উত্তেজিত ছাত্রজনতা সেøাগান দিয়ে যাচ্ছেÑ ‘ঢাকা না পি-ি, ঢাকা-ঢাকা, জয় বাংলা’। এক পর্যায়ে ছাত্র জনতার উপর গুলি ছুড়লো পুলিশ। পীর ইয়ামেনী মসজিদের পাশে মাথায় গুলি খেয়ে পড়ে গেল এক তরুণ। আমি তার কাছে গেলে সে বলেছিল আমাকে আমার মায়ের কাছে দিয়ে আস। কিছুক্ষণের মধ্যে সে মৃত্যু বরণ করে। তার নাম ছিল মতিউর রহমান মল্লিক। তার লাশ নিয়ে পরে সবাই মিছিল বের করে। মনে পড়ে ’৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা ভবনে পতাকা উত্তলন করলেন আসম রব। সেই সময়ে আমার থাকার সুযোগ হয়েছিল। ৭ মার্চে বিশাল ঐতিহাসিক জনসভায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার সুযোগ হয়েছিল। তারপর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেই। মুক্তিযুদ্ধের সেই স্মৃতি আজও চোখে ভাসে। হাজী কুতুব উদ্দিন আহমেদ লালবাগ, ঢাকা।
×