ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একুশ শতক ॥ জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীতের কথা

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ২২ মার্চ ২০১৫

একুশ শতক ॥ জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীতের কথা

॥এক ॥ আমি নিশ্চিত করে জানি না বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের মাঝে শতকরা কতজন জানেন যে, আমাদের পতাকাটি কবে, কোথায়, কারা তৈরি করেছিলেন; কখন প্রথম এই পতাকাটি আকাশে উড়ে, এতে কেন বাংলাদেশের মানচিত্র ছিল; কি ছিল সেই মানচিত্রের রং এবং সেই মানচিত্র কোথায় হারিয়ে গেল? কোন্ দর্জি প্রথম সেলাই করেছিল এই পতাকা; কে এঁকেছিল সেই মানচিত্রটা; কে বা কারা এটি হাতে নিয়ে প্রথম ঢাকার রাস্তায় কুচকাওয়াজ করেন; কবে একে বাংলাদেশের পতাকা ঘোষণা করা হয় বা কবে সেটি সারাদেশে উড়ে। দেশের অতি সাধারণ নাগরিক হিসেবে যেমনি আছে এই তথ্যগুলো জানার তেমনি আছে এটি সম্পর্কে সত্য কথা জানার। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর বাস্তব অবস্থাটি কি? বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষার গাইড বই হোক বা এনসিটিবির পাঠ্যবই, বাংলাদেশের পতাকার রূপকারের নাম লেখা থাকে চিত্রশিল্পী কামরুল হাসানের। যাঁরা এই তথ্যগুলো পাঠ করেন তাঁরা কোনদিন প্রশ্ন করেন না-এই পতাকার জন্ম কবেÑ তখন কামরুল হাসান কোথায় ছিলেন? কেমন করে তিনি এই পতাকার রূপকার হলেন? এমন কথাও মানুষ জানে যে, ৭ জুন ১৯৭০ জয়বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজে দেখানো হয় বাংলাদেশের প্রথম পতাকা। ১ মার্চ ১৯৭১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে বাংলাদেশের পতাকা তুলেন তৎকালে ডাকসুর ভিপি আসম আবদুর রব। তাঁরা আরও পড়েন- ১৫ ফেব্রুয়ারি ’৭১ দুনিয়াবাসী ও বাংলাদেশের মানুষ আমাদের জাতীয় পতাকা দেখেছে। ২৩ মার্চ ’৭১ সারা বাংলায় উড়েছে এই পতাকা। তার মানে অন্তত ৭ জুন ১৯৭০-এর আগে কামরুল হাসান এই পতাকা বানিয়ে থাকবেনÑ সেটি জয় বাংলা বাহিনীর প্যারেডে কেমন করে এলো বা রব সাহেবের হাতেই বা কেমন করে গেল? জয় বাংলা বাহিনী বা বটতলার সমাবেশের কোথাও তো কামরুল হাসানের ছায়াও নেই। তাহলে কি কামরুল হাসানকে জড়িয়ে পতাকার গল্পটা মিথ্যা, বানোয়াট বা ভিত্তিহীন? দেশের এমন একজন প্রখ্যাত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে সরকারীভাবে কেন করা হয়েছে এমন মিথ্যাচার? কেনইবা করা হয়েছে? কামরুল হাসান কতটা জড়িত আমাদের জাতীয় পতাকার সঙ্গে? যদি তিনি এই পতাকার রূপকার না হন তবে কারা জড়িত এর সঙ্গে? আরও প্রশ্ন আছে ৬ জুন ৭০-এ বানানো পতাকাই কি ১ মার্চ ১৯৭১ বটতলায় তোলা হয়েছিল? সেটি কি নতুন পতাকা, না পুরনোটার আদলে বানানো নতুন পতাকা? আমি শিশুদের সঙ্গে কথা বলে আরও অদ্ভুত প্রশ্ন শুনেছি। ওরা প্রায়ই লাল সবুজ পতাকার মাঝে একটি মানচিত্র সংবলিত পতাকাও হাতে হাতে দেখে? ওরা জানতে চায়, সেই পতাকাটি কি? আসলে আমাদের পতাকা কি মানচিত্রওয়ালা পতাকাটি, নাকি এখন মানচিত্র ছাড়া যে পতাকাটি উড়তে দেখি সেটা। যদি পরেরটাই হয়ে থাকে তবে কেন, কখন পতাকা থেকে মানচিত্র সরে গেল এবং কেনইবা মানচিত্র ছিল বা কেনইবা তুলে ফেলা হলো? রাষ্ট্রের কি দায়িত্ব নয়, তার নাগরিকদের সামনে প্রকৃত সত্য তুলে ধরার? এমনকি আমাদের দেশের গণমাধ্যমের দায়িত্ব নয়, পতাকার ইতিহাসটি উপস্থাপন করা? দুর্ভাগ্যজনকভাবে এসব প্রশ্নের জবাব হাতের কাছে নেই। জবাব পেতে গবেষণা করতে হয়। আমাদের হাতের কাছে কিছু গবেষণার তথ্য আছে। আসুন সেইসব তথ্য থেকে আমাদের পতাকাটির ইতিহাসটি একটু দেখি। একই সঙ্গে আমরা জানার চেষ্টা করব আমাদের জাতীয় সঙ্গীত নির্ধারণের বিষয়টিও। আমার নিজের কাছে মনে হয়েছেÑ এই বিষয়গুলোতে যিনি সবচেয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারতেন তিনি আজ এই পৃথিবীতে নেই। আমি ডঃ আফতাবের কথা বলছি। আফতাব হচ্ছে আমাদের মাঝে দিন-ক্ষণ তারিখ গুনে সঠিক ইতিহাসটা মনে রাখার লোক। সে বেঁচে থাকলে আমি অন্তত নিশ্চিত করে সঠিক তথ্যটা উপস্থাপন করতে পারতাম। আমি নিজে এসব ঘটনার সাক্ষী হলেও দিন-ক্ষণ মনে রাখতে পারি না বলেই আফতাবের কথা অনেক মনে পড়ছে। যাঁরা কামরুল হাসানকে আমাদের জাতীয় পতাকার রূপকার বলে মনে করেন না, তাঁরা কেউ কেউ বলেন, এই পতাকার রূপকার শিব নারায়ণ দাস। কিন্তু এটিও কি পুরো সত্য। শিব নারায়ণ দাসের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই আমি বলতে চাই; সত্যটা আমার চোখের দেখা এবং এর অনেকটাই অর্ধসত্য। পতাকার সঙ্গে শিব নারায়ণ দাসের একটি আত্মিক সম্পর্ক আছে। তবে পতাকাটির রূপকার তিনি নন। প্রথমত এই বিষয়টিতে ঐতিহাসিক সমর্থন পাওয়া যায় যে, ১৯৭০ সালের ৭ জুন ঢাকার পল্টন ময়দানে জয় বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজে প্রদর্শনের জন্য একটি পতাকা তৈরির কথা ভাবা হয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনপন্থী গ্রুপটির নেতৃত্বে এই ঘটনাটি ঘটে। সেই সময়ে এই গ্রুপটির নেতত্ব দিতেন সিরাজুল আলম খান। সেই সময়ে ছাত্রলীগ করতেন এবং পরবর্তীতে লেখক গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি বই-এর ২৯ পৃষ্ঠায় পতাকা তৈরির প্রেক্ষিত সম্পর্কে বিবরণ দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “১৯৭০ সালের জুনের ৫-৬ তারিখে মতিঝিলের হোটেল ইডেনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় এ উপলক্ষে ছাত্রলীগের সমাজতন্ত্রী গ্রুপটি একটি শো ডাউনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার একটি উল্লেখযোগ্য কর্মসূচী ছিল ৭ জুন পল্টন ময়দানে একটি র‌্যালি করা। এই উপলক্ষে জয়বাংলা বাহিনী নামে একটি দল তৈরি করে কুচকাওয়াজের মহড়া দেয়া হয়। এর আগে সার্জেন্ট জহুরুল হকের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে ছাত্রলীগের সিরাজ গ্রুপ জহুর বাহিনী তৈরি করে।” স্মরণ করা যেতে পারে, সার্জেন্ট জহুরুল হক ’৬৯-এর শহীদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হল তার নামেই নামাঙ্কিত হয়। ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে এই বাহিনী ছাত্রলীগের পতাকাসহ কুচকাওয়াজ করে। মহিউদ্দিন সমাজতন্ত্রী বা সিরাজ গ্রুপ বলতে যা বুঝিয়েছেন সেটি বস্তুত আমার বর্ণনা অনুসারে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতাপন্থী অংশটিকেই বোঝায়। মহিউদ্দিন আহমেদ জহুর বাহিনী বা জয় বাংলা বাহিনী সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য প্রদান করেছেন। তিনি তাঁর বইতে লিখেছেন, “কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী ছেলে মেয়েদের সাদা শার্ট-প্যান্ট ও সাদা জুতা এবং মেয়েদের জন্য একই রঙের শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ নির্ধারণ করা হয়। মাথায় পরার জন্য একটি টুপি তৈরির ব্যবস্থা হয়। টুপিটা ছিল অনেকটা নেতাজী সুভাস বসুর সামরিক পোশাকের সঙ্গে ব্যবহৃত টুপির মতো। টুপির রং ছিল ওপরের দিকে গাঢ় সবুজ এবং নিচে লাল রঙের একটা মোটা ফিতার মতো পট্টি। টুপির সামনে গোল করে বসানো হরুদ রঙের মাঝে জয় বাংলা লেখা, যা টুপির সঙ্গে সেপটিপিন দিয়ে আটকানো। কাপড় দিয়ে কয়েক হাজার টুপি তৈরি হয় নিউ মার্কেটের এক নাম্বার গেটের পশ্চিম দিকের এক দর্জির দোকানে। ওই দোকানের মালিক ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কে এম ওবায়দুর রহমানের ভাই হাবিবুর রহমান। তিনিই টুপিগুলো তৈরি করিয়ে দেন। কুচকাওয়াজের মহড়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের খেলার মাঠে। অনুষ্ঠানকে আকর্ষণীয় করার জন্য একটি বাদনদল সংযোজন করা হয়। ৬ জুন সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত হয় জয় বাংলা বাহিনীর জন্য একটি পতাকা তৈরির। যাতে থাকবে গাঢ় সবুজ জমিনের ঠিক মাঝখানে একটি লাল বৃত্ত। ইকবাল হলের ১১৮ নম্বর কক্ষে পতাকা তৈরির কাজসহ জয়বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজের সকল পরিকল্পনা সমন্বয় করছিলেন মনিরুল ইসলাম। তিনি তখন ছাত্রলীগের সহসভাপতি। মহিউদ্দিনের বিবরণ থেকে এটি স্পষ্ট যে কালচে সবুজ, লাল ও হলুদ রং ছাত্রলীগের কাছে আগেই পরিচিত ছিল। জয় বাংলা বাহিনীর টুপিতে এর প্রতিফলন ঘটে। এই প্রসঙ্গে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা ও স্বাধীনতা উত্তরকালে দৈনিক গণকণ্ঠের প্রকাশক জনাব মনিরুল ইসলাম ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সমাজতন্ত্র’ বইয়ের ১২৮ পৃষ্ঠায় লিখেন, (আমরা মার্শাল মনি হিসেবে তাকে চিনি), ‘চূড়ান্ত মহড়া ৬ জুন বিকালে শেষ হয়। ওই দিনই সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত হয় জয় বাংলা বাহিনীর একটা পতাকা তৈরির বিষয়ে- যা পরদিন (৭ জুন) সকালের অনুষ্ঠানকে আরও তাৎপর্যম-িত করবে।... কালচে সবুজ জমিনের ঠিক মাঝখানে পরিমিত আকারে একটা লাল বৃত্ত।... ছাত্রলীগের ৭ জুন পালনের সকল কার্যক্রম তখন জহুরুল হক হলের নিচ তলার ১১৬ নম্বর কক্ষ থেকে পরিচালিত হচ্ছিল। ওই হলেই তিন তলার একটি কক্ষে সিরাজুল আলম খান প্রায়ই থাকতেন। স্বভাবতই, স্বাধীনতার কার্যক্রমের একজন উর্ধতন নেতা হিসেবে তার কাছে অনুমোদন নিতে যাওয়া হলো। তিনি পতাকা তৈরি ছাড়া সকল কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত থাকায় আগামীকালের (৭ জুন ১৯৭০) কার্যক্রমকে আরও অর্থবহ করার জন্য পতাকা তৈরির কথা জানিয়ে তা প্রদর্শনের জন্য তাঁর অনুমতির জন্য আবেদন করা হলো। সমস্ত কথা শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন যে নাম দিয়েই পতাকা প্রদর্শন কর না কেন তাকে জনগণের ভবিষ্যতের স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা বলে ভেবে নিতে কোন বাধা থাকবে না।... বলাকা ভবনে ছাত্রলীগ অফিস হওয়ার কারণে নিউ মার্কেটের পাশের কাঁচাবাজারসংলগ্ন এক রঙের দোকান থেকে, দোকানিকে জাগিয়ে, সোনালি রং ও তুলি যোগাড় করা হলো। মানচিত্রের নকশা অঙ্কন এবং রং করার জন্য একজন শিল্পীর প্রয়োজন দেখা দিল। সে সমস্যাও সহজেই সমাধান হয়ে গেল। সলিমুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন উপলক্ষে ব্যানার ফেস্টুন আঁকার জন্য কুমিল্লা ছাত্রলীগের নেতা শিবনারায়ণ দাস তখন কর্মরত ছিল। সে একজন ভাল শিল্পীও বটে। ফলে তাকে নিয়ে আসা হলো কালচে সবুজ জমিনের মধ্যখানে লাল বৃত্তের মাঝে সোনালি রং দিয়ে পূর্ব বাংলার মানচিত্র আঁকার জন্য। ১১৬ নম্বর কক্ষের মেঝেতে বিছিয়ে লাল বৃত্তের মাঝে পূর্ব বাংলার সোনালি মানচিত্র আঁকা হলো। তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা ইউসুফ সালাহউদ্দীন আহমদ জাতীয় পতাকা তৈরির সময়টার কথা স্মরণ করে লেখেন, কাজী আরেফ আহমেদের প্রস্তাব অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হলো পতাকায় সবুজ জমিনের ওপর থাকবে একটি লাল বৃত্ত, আর লাল বৃত্তের মাঝে থাকবে পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র। সবুজ জমিন বাংলার চির সবুজের প্রতীক, লাল সূর্য রক্তে রাঙা হয়ে উঠবে স্বাধীনতার সূর্য, আর জন্ম নেবে একটি নতুন দেশ সোনালি আঁশের রঙে হবে তার পরিচয়। লাল বৃত্তের মাঝখানে সোনালি রঙের মানচিত্র তারই প্রতীক। ...খসরু ভাই গেল তখন বলাকা সিনেমা হলের চারতলায় এক বিহারী দরজির দোকানে। বড় এক টুকরা সবুজ কাপড়ের মাঝে সেলাই করে আনলেন লাল বৃত্তাকার সূর্যের প্রতীক। এখন হলো আরেক সমস্যা। পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র। সিদ্ধান্ত হলো ওটা লাল বৃত্তের মাঝে রঙ দিয়ে আঁকা হবে। আঁকাআঁকিতে কুমিল্লার শিবুদার হাত ছিল ভাল। তিনি বললেন, ‘আমি বাপু পেইন্ট করতে পারব, তবে মানচিত্র আঁকতে আমি পারব না।’ কী করা যায়? ঠিক করলাম হাসানুল হক ইনু আর আমি পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র ট্রেসিং পেপারে ট্রেস করে নিয়ে আসব। আমরা গেলাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন জিন্নাহ্ হলে (বর্তমানে তিতুমীর হল)। উল্লেখ্য, আমি এবং ইনু ভাই উভয়েই তখন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। জিন্নাহ্ হলে ৪০৮ নং কক্ষে থাকেন এনামুল হক (ইনু ভাইয়ের কাজিন)। তার কাছ থেকে অ্যাটলাস নিলাম। ট্রেসিং পেপারে আঁকলাম পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র। নিয়ে এলাম ইকবাল হলের ১০৮নং কক্ষে। বাকি সবাই সেখানে অপেক্ষা করছিল। শিবুদা তাঁর নিপুণ হাতে ট্রেসিং পেপার থেকে পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র আঁকলেন লাল বৃত্তের মাঝে। তাতে দিলেন সোনালি রং। পতাকা তৈরির এই বিবরণের সঙ্গে মহিউদ্দিন আহমদ ও সেই সময়কার আরও অনেকের বক্তব্য বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করতে পারবে। এখানেও আমরা জানতে পারিনি পতাকার কাগজ এসেছিল কেমন করে? একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে ইকবাল হলের রুম নম্বর সম্পর্কে। সেটি কি ১০৮ নম্বর রুম, নাকি ১১৬ নম্বর, নাকি ১১৮ যেখানে শিব নারায়ণ দাস পতাকায় সোনালি মানচিত্রটা এঁকেছিলেন? আমি বিভিন্ন দলিল দস্তাবেজ দেখে নিশ্চিত হয়েছি যে ১১৬ নম্বর রুমে শাহজাহান সিরাজ থাকতেন এবং আসম আবদুর রব থাকতেন ৩১৩ নম্বর রুমে। (চলবে) ঢাকা, ২০ মার্চ ২০১৫ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক ॥ ই-মেইল : [email protected], ওয়েবপেজ:ww w.bijoyekushe.net,ww w.bijoydigital.com
×