ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তিস্তার আগে স্থল সীমান্ত চুক্তি ॥ মোদির ঢাকা সফরে ইতিবাচক কিছু ফল মিলবে

বাংলাদেশ-ভারত দশ বছরের বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২৩ মার্চ ২০১৫

বাংলাদেশ-ভারত দশ বছরের বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তিস্তা চুক্তির বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর বাংলাদেশের আস্থা রয়েছে। এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের অপেক্ষায় রয়েছে সরকার। এছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১০ বছরের বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে। ভারতের ভুবনেশ্বরে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের এসব কথা বলেছেন। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা রবিবার এ খবর প্রকাশ করেছে। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমুদ্র অর্থনীতি বিকাশের লক্ষ্যে আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে যোগ দিতে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক ভারতে যান। তিন দিনব্যাপী সেমিনার রবিবার শেষ হয়েছে। ভুবনেশ্বরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পররাষ্ট্র সচিব জানান, ঢাকায় এসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তিস্তা চুক্তি নিয়ে তাঁর ওপর আস্থা রাখতে বলেছেন। আমরা তাঁর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেছি। তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আমরা এখন অনেক বেশি আশাবাদী। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ঢাকায় এসে বুঝেছেন, তিস্তা চুক্তি বাংলাদেশের পক্ষে কতটা প্রয়োজনীয়। ১৭ বছর পর তাঁর ঢাকা সফর অত্যন্ত ইতিবাচক। মমতা এ বিষয়ে যে আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দিয়েছেন, তা নিয়ে দুই দেশ কাজ শুরু করেছে বলেও জানান এম শহীদুল হক। তিনি বলেন, সন্ত্রাস মোকাবেলায় দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা এজেন্সিগুলোর সমন্বয় খুব ভাল। জঙ্গীদের কোন দেশ হয় না। ফলে তারা কোথা থেকে এসে কোথায় হামলা চালাচ্ছে, তার চেয়েও বড় কথা সন্ত্রাস মোকাবেলায় সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। ইতোমধ্যেই ঢাকা ও নয়াদিল্লী তা করছে বলে জানান শহীদুল হক। পররাষ্ট্র সচিব আরও জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিছু দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ সফর করতে পারেন। আমরা সেই সফরের জন্য অপেক্ষা করছি। মোদির ঢাকা সফরকালে কোন ঘোষণা আসছে কিনাÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে শহীদুল হক বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী একসঙ্গে বৈঠকে বসলে কিছু না কিছু ফল তো মেলেই। তবে তিস্তার আগে তো স্থলসীমান্ত চুক্তিটি রয়েছে। ভারতের সঙ্গে আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে নতুন বোঝাপড়া গড়ে উঠছে। তা নিয়েও কোন উল্লেখযোগ্য ঘোষণা হতে পারে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য চুক্তি প্রতি তিন বছর অন্তর করা হতো। একটি দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্যিক চুক্তির জন্য নয়াদিল্লী বেশ কয়েক বছর ধরেই বলে আসছে। বাংলাদেশ এখন এতে সম্মত হয়েছে। স্থলসীমান্ত চুক্তির অগ্রগতির কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্যিক চুক্তিতে সম্মত হয়েছে বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেছেন, ভারতের দীর্ঘদিনের দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। তিন বছরের বদলে ১০ বছরের বাণিজ্যিক চুক্তি হচ্ছে। ফলে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক যোগাযোগ আরও বাড়বে। জানা গেছে, আগামী সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী দিল্লী যাচ্ছেন। তিনি সেখানে বিদ্যুত রফতানি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। এ ছাড়া সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষায় দুই দেশ একসঙ্গে বেশকিছু পদক্ষেপ করতে রাজি হয়েছে। শিলং-গুয়াহাটি-ঢাকা এবং কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা রুটে নতুন বাস নিয়েও কথা শুরু হয়েছে। ভারত থেকে ২০১৩ থেকেই বাংলাদেশ ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করছে। সম্প্রতি আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত দেয়ার ঘোষণা করেছে নয়াদিল্লী।
×