ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস

বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে একজন করে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৪ মার্চ ২০১৫

বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে একজন করে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়

নিখিল মানখিন ॥ যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে এ সময়ে প্রধান চ্যালেঞ্জ ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা বা এমডিআর যক্ষ্মা। এমডিআর যক্ষ্মার অন্যতম প্রধান কারণ যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর অনিয়মিত ওষুধ সেবন। এমডিআর যক্ষ্মার ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক বেশি। এর চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী, জটিল ও ব্যয়বহুল। এছাড়া যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে শিশু যক্ষ্মা শনাক্তকরণে জটিলতা, নগরে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের সমস্যা ও এইচআইভি যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ। ২০১৪ সালে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর মাধ্যমে ১ লাখ ৯১ হাজার ১৫৫ যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শিশু যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৩১৮ জন। ২০১৩ সালে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর মাধ্যমে শনাক্তকৃৃত কফে যক্ষ্মা জীবাণুযুক্ত রোগীর চিকিৎসার সাফল্যের হার ৯৪ ভাগ। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ মঙ্গলবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ‘ যক্ষ্মা খুঁজব ঘরে ঘরে, সুস্থ করব চিকিৎসা করে ’। সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচী। বিশেষজ্ঞরা জানান, যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে প্রতিসেকেন্ডে এক ব্যক্তি যক্ষ্মার জীবাণু দ্বরা আক্রান্ত হয়। বর্তমানে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত। তবে নিয়মিত পূর্ণ মেয়াদের চিকিৎসায় যক্ষ্মা সম্পূর্ণ ভাল হয়। তিন সপ্তাহের বেশি কাশি যক্ষ্মার প্রধান লক্ষণ। অবহেলা না করে কফ পরীক্ষা করাতে হবে। বিশেষজ্ঞরা জানান, যক্ষ্মা একটি সংক্রামক রোগ, যা মাইকোব্যাটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস নামক অতি সূক্ষ্ম জীবাণুর মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। প্রধানত ফুসফুসই যক্ষ্মা জীবাণু দ্বারা সর্বাধিক আক্রান্ত হয়। যক্ষ্মা জীবাণু দেহের অন্য অংশকেও আক্রান্ত করে যক্ষ্মা রোগ তৈরি করতে পারে। ফুসফুসের যক্ষ্মায় আক্রান্ত কফে জীবাণুযুক্ত রোগী যদি বিনা চিকিৎসায় থাকে, তবে বছরে প্রায় ১০ থেকে ১৫ জনকে যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত করে। জীবাণু দ্বারা সকল সংক্রমিত ব্যক্তিই যক্ষ্মা রোগে ভুগে না। যে সকল ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তারাই প্রধানত যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়। তাই প্রতিটি রোগীর দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা শেষ করা জাতীয়, আঞ্চলিক ও বিশ্বের যক্ষ্মা প্রতিরোধের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায়। বিশ্বে প্রতিবছর ৮৮ লাখের বেশি লোক যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আর প্রতিবছর ১৪ লাখ লোক প্রতিবছর যক্ষ্মায় মারা যায়। ২২টি দেশে বিশ্বের মোট যক্ষ্মা রোগীর শতকরা ৮০ ভাগ বাস করে। মোট যক্ষ্মা রোগীর শতকরা ৪০ ভাগ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে বাস করে। বাংলাদেশে এখনও যক্ষ্মা একটি মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা। স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সরকারের সাফল্য তুলে ধরে সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ যে শুধু অর্থনৈতিকভাবে এগুচ্ছে তা নয়, বরং সামাজিক খাতেও বিস্ময়কর অগ্রগতি লাভ করেছে। এ অগ্রগতির পেছনে অন্যতম প্রধান অবদান রেখেছে স্বাস্থ্যসূচকের লক্ষ্যযোগ্য উন্নতি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ দীন মোঃ নুরুল হক বলেন, পুষ্টিহীনতা, শহরের বস্তি, ভাসমান এবং নগর ও মহানগরীর জনগোষ্ঠী যক্ষ্মা কর্মসূচীর সফলতাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
×