ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাঈদ খোকন, হাজী সেলিম, কবরীসহ অনেকের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ;###;নির্বাচনে অংশগ্রহণে লাভক্ষতি নিয়ে হিসাব করছে বিএনপি ;###;চট্টগ্রাম মেয়র ও কাউন্সিলর পদে এ পর্যন্ত মনোনয়ন নিয়েছেন ৪৮৫ জন

সরগরম সিটি নির্বাচন

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৫ মার্চ ২০১৫

সরগরম সিটি নির্বাচন

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ আসন্ন তিন সিটি নির্বাচন সামনে রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়ন সংগ্রহ করছেন প্রার্থীরা। মঙ্গলবার ঢাকা দক্ষিণে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে সাঈদ খোকন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সাংসদ হাজী সেলিম মনোনয়ন সংগ্রহ করে বলেছেন, মানুষ চায়, তাই প্রার্থী হয়েছি। দক্ষিণে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন অভিনেত্রী কবরী সারোয়ার ও এখলাছ উদ্দিন মোল্লা। ঢাকায় মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন আলোচিত পাঁচ মেয়র প্রার্থী। বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ২৬ জনকে নোটিস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে কৌশলী অবস্থানে বিএনপি। চট্টগ্রামে প্রার্থিতা নিয়ে শুরুতেই বিএনপিতে গৃহদাহ শুরু হয়েছে। ঢাকার প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। মেয়র প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগে ঐক্যের সুর। এককাট্টা হয়েছেন সবাই। এ পর্যন্ত মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সেখানে ৪৮৫ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। মনজুরুলের কুশপুতুল দাহ করেছে নিজ দলের নেতাকর্মীরাই। মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন আলোচিত প্রার্থীরা ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণে মেয়র পদে মনোনয়পত্র সংগ্রহ করেছেন আলোচিত প্রার্থীরা। মঙ্গলবার দক্ষিণের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সাঈদ খোকন, হাজী সেলিম। উত্তরের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন কারাগারে আটক নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য কবরী সারোয়ার ও নেতা এখলাছ উদ্দিন মোল্লা। যদিও কবরী এর আগে গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন রবিবারই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু মঙ্গলবার শহীদুল ইসলাম নামে তার ব্যক্তিগত সহকারী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন ঢাকার সাবেক মেয়র মো. হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ঢাকা দক্ষিণে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। নির্বাচন পরিচালনার জন্য ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ আজিজকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আশা করি এ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমার আস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, আমার যে ব্যাংকঋণ ছিল তা পরিশোধ করেছি। এ সময় হাজী সেলিমকে ইঙ্গিত করে তার বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন। বলেন, অনেকেই আগাম প্রচারণা চালাচ্ছে। অস্ত্র ও পেশী শক্তি প্রদর্শন করে সাধারণ ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে। এগুলো সুস্পষ্ট নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের নির্বাচন কমিশনে করা লিখিত অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ করেছি। কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে আশাকরি। এদিকে সাঈদ খোকন মনোনয়নপত্র সংগ্রহের একঘণ্টা পরই দক্ষিণের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক হাজী মো. সেলিম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকাবাসী, ঢাকাইয়ারা চায় আমি মেয়র পদে নির্বাচনে দাঁড়াই। তাই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। সাঈদ খোকনের অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, উনি যা বলতে পারেন আমি তো বলতে পারি না। আমি এমপি রাস্তায় দাঁড়ালে যদি আমার সঙ্গে এক/দেড়শ’ লোক দাঁড়িয়ে যায় সে কি আমার দোষ? দলের সমর্থনের বিষয়ে বলেন, দল এখনো যাচাইবাছাই করছে। আমার বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত আমাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। এদিকে ঢাকা উত্তরের জন্য মঙ্গলবার মেয়র পদে ৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে আলোচিত জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও নারায়ণগঞ্জের সাবেক সাংসদ কবরী সারোয়ারের পক্ষে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী শহিদুল ইসলাম ১১টার দিকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তিনি বলেন, কবরীর অনেক জনপ্রিয়তা, এই নির্বাচনে তিনি জিতে যাবেন। যদিও কবরী গত রবিবারই গণমাধ্যমকে তার মনোনয়নপত্র সংগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন। এছাড়া দুপুর ১২টার দিকে পশ্চিম আগারগাঁও জেলা নির্বাচন কমিশনের কার্যালয় থেকে ঢাকা উত্তরের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন কারাগারে আটক নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না। তার পক্ষে প্রস্তাবক এবং নাগরিক ঐক্যের সদস্য আতিকুল ইসলাম মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। মাহমুদুর রহমান মান্নার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শহীদুল্লাহ কায়সার সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে মাহমুদুর রহমান মান্নার পক্ষে মনোনয়নপত্র আইনজীবীর মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর পর বিধি মোতাবেক জমা দেয়া হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিজয় অবশ্যম্ভাবী। আমাদের জনসমর্থন রয়েছে। দুপুর একটার দিকে নেতা এখলাছ উদ্দিন মোল্লাহ মেয়র পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নির্দলীয় নির্বাচন। গণতন্ত্রে সবার নির্বাচন করার অধিকার রয়েছেন। তার পরিবারের সবাই জনগণের খেদমত করে আসছে। যতদিন বেঁচে আছি নির্বাচন করে যাব। তিনি বলেন সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন হলে দেশ আরও সুন্দর হবে। এদিকে ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং অফিসের কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত ঢাকা উত্তরের জন্য মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে মোট ৫৩৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে মেয়র পদে মঙ্গলবার ৬ জনসহ মোট ১৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে। এছাড়া কাউন্সিলর পদে ৪৩৪ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে। এছাড়া ঢাকা দক্ষিণে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৩ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে বলে জানা গেছে। নির্বাচন কমিশনের উপসচিব ও দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারোয়ার মোর্শেদ বলেন, এ পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ২৬ জনকে নোটিস দিয়ে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নির্দেশ দেয়ার পরও আগাম প্রচারণার ব্যানার ফেস্টুন তোলা হয়নি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব প্রার্থীর ব্যানার ফেস্টুন তুলে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি- মায়া ও কামরুল ॥ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে দলের সমর্থন কোন প্রার্থীকে দেয়া হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মায়া বলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হয়ার পর আ’লীগের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।’ মায়া বলেন, শেখ হাসিনা যে প্রার্থীকে সমর্থন দেবেন- আমাদের দায়িত্ব তার জন্য বিজয় ছিনিয়ে আনা। তার পক্ষেই সবাইকে কাজ করতে হবে। ফাঁক-ফোকরের কোন সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, ‘যারা কাউন্সিলর প্রার্থী হবেন, প্রথমে দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর জন্য তাদের ভোট চাইতে হবে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের তোড়জোড়ের মধ্যে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ডেকে নেন সাঈদ খোকনকে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দলের পক্ষ থেকে সমর্থন পাওয়ার কথা পরে সাংবাদিকদের জানান ঢাকার সাবেক মেয়র হানিফের এই ছেলে। সাঈদ খোকনের মতোই ঢাকা দক্ষিণে প্রচার চালিয়ে আসছিলেন হাজী সেলিম। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে লড়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া হাজী সেলিম এখন মেয়র হতে চান। এজন্য তিনি সংসদ থেকে ২৮ মার্চ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এদিকে খোকন দলের সমর্থন পাওয়ার কথা জানালেও হাজী সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর বিশ্বাস যে শেষ পর্যন্ত দলের সমর্থন তিনিই পাবেন। মায়া বলেন, কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করলে নগর আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক থাকবে না। তা তিনি নিজ দায়িত্বে করবেন। এদিকে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামও ফের বলেছেন, প্রার্থী এখনও চূড়ান্ত নয়। এ বিষয়ে নেত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন মনোনয়নপত্র দাখিলের পর। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করব। তিনি বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে আহ্বান জানান। চট্টগ্রামে বিএনপিতে গৃহদাহ ॥ স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস জানান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে নগরীতে ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ এর মধ্যেই প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। মনোনয়নপত্র গ্রহণও করেছেন দল সমর্থিত প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিন। ফলে চলছে সাংগঠনিক প্রস্তুতিমূলক কর্মকা-। তবে প্রতীক ঘোষণার পূর্বে প্রচারে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় প্রার্থী ও সমর্থকরা রয়েছেন সময়ের অপেক্ষায়। এদিকে বিএনপির সমর্থনে বর্তমান মেয়র এম মনজুর আলম মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এমন আভাস চাউর হলেও এখনও চূড়ান্ত ঘোষণা আসেনি। বরং এক ধরনের গৃহদাহ শুরু হয়েছে। ফলে প্রার্থিতা এখনও বিএনপির কর্মী-সমর্থক ও নগরবাসীর আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। মনজুর আলমের প্রার্থিতায় বিরোধিতা রয়েছে দলের একাংশের মধ্যে। তাদের অভিযোগ বিএনপির সমর্থনে গেলবার মেয়র নির্বাচিত হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি দলীয় কোন কর্মসূচীতে। মঙ্গলবার চট্টগ্রামে মেয়র মনজুর আলমের কুশপুতুল দাহ করেছে মেয়র প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শাহাদাত সমর্থিত নেতাকর্মীরা। তবে বিরোধিতা থাকলেও বিএনপিতে শীর্ষ নেতারা বাদ দিলে মনজুর কোন বিকল্পও নেই বলে মনে করছেন ভোটাররা। এ কারণেই বিএনপির স্থানীয় শীর্ষ নেতারা আলাপ-আলোচনা করে দলের সমর্থনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে পুনরায় মনজুর আলমের নাম প্রেরণ করেছে হাইকমান্ডের কাছে। হাইকমান্ডের পক্ষ থেকেও নাম ঘোষণার অপেক্ষা মাত্র। নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, শেষ পর্যন্ত মনজুকে সমর্থন দান ছাড়া বিএনপির কোন বিকল্প নেই। মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলে মনজুর আলম জনকণ্ঠকে জানান, দলের ক্ষুদ্র একটি অংশ তার বিরোধিতা করছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে সহসা ঘোষণা করা হবে বলে তিনি আশাবাদী। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ায় দলের নেতাকর্মীদের সকল উৎকণ্ঠার অবসান হয়ে গেছে। বিবদমান সকল নেতাই এক হয়েছেন দলের সমর্থিত প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনকে জয়ী করতে। বিশেষ করে সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে তাঁর অনুসারীসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানানোর ফলে বিরোধ কেটে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সাবেক মেয়রের অনুসারী আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে তা দূরীভূত হতে আরও একটু সময় নেবে- এমনই প্রতীয়মান। নাছিরকে প্রার্থী ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ॥ নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনকে মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী করায় দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অভিনন্দন জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার সকালে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত কার্য নির্বাহীর সভায় এ অভিনন্দন জ্ঞাপন করা হয়। মনজুর আলমকে নিয়ে বিএনপিতে গৃহদাহ ॥ বিএনপির পক্ষ থেকে বর্তমান মেয়র এম মনজুর আলমের নাম চূড়ান্ত হয়েছে বলে কেন্দ্র থেকে আভাস দেয়া হলেও চট্টগ্রামের নেতৃত্ব এখনও তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি। ফলে মনজুর আলমও রয়েছেন ঘোষণার অপেক্ষায়। মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। মনোনয়ন ফরম গ্রহণ ও জমা দেয়ার সময় রয়েছে আর মাত্র ৫ দিন। বিএনপির মধ্যে মনজুর আলমের বিরোধিতাও রয়েছে। বিশেষ করে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শাহাদাত হোসেন মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার অন্যতম দাবিদার। বিএনপির ডাঃ শাহাদাতের পক্ষে সমাবেশ ॥ চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শাহাদাত হোসেনকে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে মুরাদপুর শিক্ষা ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান বলেন, ডাঃ শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রামের গণমানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা ও রাজপথের লড়াকু সৈনিক। তিনি তৃণমূল নেতাকর্মী ও গরিব দুখী মানুষের বিপদের সঙ্গী এবং দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তাকে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিলে চট্টগ্রামের গণমানুষ তাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে রায় দেবে। ৬ষ্ঠ দিনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ॥ সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র গ্রহণের ৬ষ্ঠ দিন মঙ্গলবার মেয়র, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর পদের জন্য মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছেন মোট ৮৮ জন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৩ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৩ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৭২ জন প্রার্থী হয়েছেন। এ নিয়ে মেয়র পদে ১১ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৯ জন ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৪১৫ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন। মেয়র পদে মঙ্গলবার যারা মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছেন তারা হলেন- বিএনপির এ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, ইসলামিক ফ্রন্টের এমএ মতিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ শাহজাহান। এর আগে যে ৮ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আ জ ম নাছির উদ্দিন, জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ, ইসলামিক ফ্রন্টের হোসাইন মোহাম্মদ মুজিবুল হক, আরিফ মঈনুদ্দিন, গাজী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, সৈয়দ সামসুজ্জোহা, ফখরুদ্দিন চৌধুরী ও গোলাম ইয়াজদানি। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে চসিকের দুই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীকে মঙ্গলবার কারণ দর্শাও নোটিস দিয়েছে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়।
×