ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গলাচিপায় আত্মহত্যা বাড়ছে, সিংহভাগ ক্ষেত্রে দায়ী প্রেম

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৮ মার্চ ২০১৫

গলাচিপায় আত্মহত্যা বাড়ছে, সিংহভাগ ক্ষেত্রে দায়ী প্রেম

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর গলাচিপায় প্রেমঘটিত আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে। এর মধ্যে ১৫-২০ বছরের কিশোরী যুবতীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গত তিন মাসে পুলিশের হিসাবে ৭টি আত্মহত্যার মধ্যে ৪টিই প্রেমঘটিত কারণে ঘটেছে। এর মধ্যে গত ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে আত্মহত্যা করেছে দুই কিশোরী-যুবতী। এছাড়া একই কারণে ২০১৪ সালে আত্মহত্যা করেছে ১১ নারী। প্রেমের কারণে যুবকদের আত্মহত্যার সংখ্যাও একেবারে কম নয়। ওই বছরে ৬ যুবক আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার এ হিসাব পুলিশের হলেও বেসরকারী হিসাবে এ সংখ্যা বেশি বলে বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছে। প্রেমঘটিত কারণে গলাচিপায় সর্বশেষ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে পূর্ব আটখালী গ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুরে। কৃষক জাকির হোসেনের মেয়ে জাহানারা বেগম রেশমা (১৬) ঘরের আড়ার সঙ্গে রশি দিয়ে ঝুলে এদিন আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে পরিবার ও পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন প্রেমের পরে রেশমা একই গ্রামের কামরুল খান নামের এক যুবককে বিয়ে করেছিল। কিন্তু কামরুলের পরিবার প্রেমের এ বিয়ে মেনে নেয়নি। উপরন্তু কামরুলকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। এ নিয়ে রেশমার সঙ্গে কামরুলের ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে অভিমানে রেশমা আত্মহত্যা করে। এ ঘটনার মাত্র একদিন আগে বুধবার ভোরে গলাচিপা ডিগ্রী কলেজের এইচএসসির ছাত্রী স্বর্ণালী বেগম (১৬) একই কায়দায় গাছের ডালে রশি দিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করে। স্বর্ণালী গলাচিপা উপজেলা শহরের কুটিয়াল পাড়ার বাসিন্দা আফাজউদ্দিন মৃধার মেয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, স্বর্ণালীর সঙ্গে এক যুবকের দীর্ঘদিন ধরে প্রেম চলছিল। প্রেমের সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে তীব্র অভিমানে স্বর্ণালী আত্মহত্যা করে। পুলিশের রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত কয়েক বছর ধরেই পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যার সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। যার বেশিরভাগ নারী এবং বয়স বিশের কোঠায়। স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্য এবং ঝগড়ার রেশ ধরেও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। প্রাথমিক হিসাবে ২০১৩ সালে মোট ৯ প্রেমিক-প্রেমিকা আত্মহত্যা করেছে। পরবর্তী বছরে এ সংখ্যা বেড়ে ১৭ জনে দাঁড়ায়। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের এ পর্যন্ত প্রেমের কারণে আত্মহত্যা করেছে ৪ জন। পুলিশের রেকর্ডের বাইরেও অনেক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। যা স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করা হয়। প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে থানার অফিসার ইনচার্জ শিশির কুমার পাল জানান, মূলত বয়ঃসন্ধিকালীন আবেগে যেমন বাড়ছে প্রেম, একইভাবে বাড়ছে আত্মহত্যা। মোবাইল ফোনের অপব্যবহার থেকেই বেশিরভাগ প্রেমের সূচনা ঘটছে বলেও মনে করেন তিনি।
×