স্টাফ রিপোর্টার ॥ নীল জমিনে চিত্রিত ছবিতে ছড়িয়ে আছে নক্সাদার তিনটি হাতপাখা। একটি হাতপাখায় কালো অক্ষরে লেখা রয়েছে ‘সাম্যের গান গাই’। আর পাখাগুলোর পেছনেই উপস্থাপিত হয়েছে নারী দিবসকেন্দ্রিক পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা। সেখানে শিরোনাম হচ্ছে ‘নারীর ক্ষমতায়নে আমরা বদ্ধপরিকর’। সামিনা নাফিজের আঁকা এ চিত্রকর্মটি এখন ঠাঁই পাচ্ছে ধানম-ির গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ানে। তাঁর মতো আরও চল্লিশ নারী শিল্পীর সৃজিত শিল্পসম্ভার ঠাঁই প্রদর্শনালয়টিতে। তাঁদের সৃজনের বৈভবে উপস্থাপিত হয়েছে বহুবিধ বিষয়। অধিকাংশই রং আর রেখায় রাঙিয়ে তুলেছেন আপন ক্যানভাস। আবার কেউ বা প্রাণহীন বৃক্ষের গুঁড়ি কিংবা ডালপালা অথবা ধাতব বস্তুর আশ্রয়ে গড়েছেন ভাস্কর্য। এমন ৪১ শিল্পীর শিল্পকর্ম নিয়ে সজ্জিত এই যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর শিরোনাম যাত্রা। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্্যাপনের অংশ হিসেবে যৌথভাবে প্রদর্শনীর আয়োজক গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ান ও জন্টা ক্লাব। শনিবার চৈত্রের সন্ধ্যায় প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন ও উইমেন এন্টারপ্রেনার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট নাসরিন রাব রুবা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রদর্শনালয়টির নির্বাহী পরিচালক শিল্পী শামীম সুব্রানা।
অনুষ্ঠানে দেশের দুই বরেণ্য শিল্পী হাশেম খান ও রফিকুন নবীকে নবীন শিল্পীদের শিল্পযাত্রার অনুপ্রেরণায় অসামান্য অবদানের জন্য সম্মাননা জানানো হয়। একইসঙ্গে আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে প্রদর্শনীতে ঠাঁই তাঁদের তিনটি চিত্রকর্ম।
কোন এক সড়কে শহুরে শ্রমজীবী নারীর কর্মতৎপরতা, আদিবাসীদের কর্মজীবনে নারীর অংশগ্রহণ, জানালার দিকে তাকিয়ে মুক্তির পথ খুঁজছে এক তরুণী, পদ্মপাতায় ঢাকা জলাধার, ফিলিস্তিনী নারীর বিপর্যস্ত জীবন, বৃক্ষছায়ায় বসে মৃৎশিল্প গড়ছে রমণীদ্বয়, দেশের পতাকা ফসলের মাঠের ভেতর দিয়ে ছুটে চলেছে গর্বিত পল্লীবধূÑএমন বৈচিত্র্যময় নানা বিষয় থেকে শুরু প্রকৃতি-পরিবেশ ও মানবিক নানা অনুভূতি উপস্থাপিত হয়েছে শিল্পীদের এই শিল্পযজ্ঞে। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেনÑ ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, ফারেহা জেবা, ফরিদা জামান, আফরোজা জামিল কংকা, অস্মিতা আলম শাম্মী, আতিয়া ইসলাম এ্যানি, বারকিয়া আজম, বিপাশা হায়াত, দিলারা বেগম জলি, দিলরুবা লতিফ রোজি, এলহাম হক কুহু, ফাহমিদা এনাম কাকলি, ফারজানা চৌধুরী, ফারজানা ইসলাম মিল্কি, গুলশান হোসেন, আইভি জামান, কনক চাঁপা চাকমা, লায়লা আনজুমান আরা, লায়লা শারমীন, মাকসুদা ইকবাল নীপা, মাসুমা খান, মিনি করিম, মনোয়ার আনিস খান, মুনমুন নাহার, নাঈমা হক, নাসিমা খানম কুইনি, নাসরিন বেগম, নাজিয়া আন্দালিব প্রিমা, নাজমুন রোজি, রিমা চৌধুরী, রোকেয়া সুলতানা, সামিনা এম করিম, সামিনা নাফিজ, শামীম সুব্রানা, সুলেখা চৌধুরী, সুমনা হক, সাদিয়া শামীম মনসুর, সোহানা শাহরীন, সুফিয়া বেগম, তৈয়বা বেগম লিপি ও ভিনিতা করিম।
৪১টি চিত্রকর্ম ও ৩টি ভাস্কর্যসহ ৪৪টি শিল্পকর্ম দিয়ে সাজানো প্রদর্শনী চলবে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
সত্যেন সেন সম্মাননা পেলেন শাহরিয়ার কবির ॥ বরেণ্য লেখক, সাংবাদিক ও ’৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির এবারের সত্যেন সেন সম্মাননা পদকে ভূষিত হয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে সত্যেন সেনের জন্মদিন এবং সংগঠনের অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সংগঠনের সভাপতি ড. হায়াৎ মামুদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইটের পরিচালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি শিল্পী ফকির আলমগীর প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত শাহরিয়ার কবিরের জীবনী পাঠ করেন সংগঠনের সহসভাপতি ড. নিগার চৌধুরী। এতে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী , ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী, বহ্নিশিখা, স্ব-ভূমি লেখ শিল্পী কেন্দ্র ও পঞ্চভাস্কর। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন মহিউজ্জামান চৌধুরী ময়না, সমর বড়ুয়া, আরিফ রহমান, আবিদা রহমান সেতু, রতনা সরকার, এসএম মেজবা, শহিদুল ইসলাম সৌরভ ও শ্রাবণী গুহ রায়। একক আবৃত্তি করেন নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে স্পন্দন।
ইরানের নওরোজ উৎসব ও বাংলা নববর্ষ ॥ বসন্তের আগমনে ইরান ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রতিবছর পালিত হয় ঐতিহ্যবাহী নওরোজ উৎসব। শনিবার বাংলাদেশেও বর্ণাঢ্য নানা আয়োজনে পালিত হলো এই উৎসব। আর একইসঙ্গে উদ্যাপিত হলো আসন্ন বাংলা নববর্ষ। বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ঢাকার ইরান দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের আয়োজনে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: