ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পুঁজিবাজারে চারশ’ কোটি টাকার লেনদেন

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ৩০ মার্চ ২০১৫

পুঁজিবাজারে চারশ’ কোটি টাকার লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের পুঁজিবাজারে আবারো সুবাতাস ফিরে আসতে শুরু করেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনে অংশ নেয়ায় গত সপ্তাহ থেকেই পুুঁজিবাজারে লেনদেনে গতি বাড়তে থাকে। মূলত নির্বাচনের হাওয়া সূচকের পালে লাগাতেই সূচকের তীর ওপরের দিকে উঠছে। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রবিবার লেনদেন ৪০০ কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছছে। ডিএসইতে ৩৯৩ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ; যা গত আড়াই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন। এদিন ডিএসইতে মূল্য সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। একইভাবে অন্য বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও সব ধরনের সূচক বেড়েছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সকালে বেশিরভাগ কোম্পানির দর বাড়ার প্রবণতা দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে লেনদেনের গতি বাড়তে থাকে, সেই সঙ্গে সূচকেও উর্ধগতি দেখা দেয়। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবারে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৪২ কোটি ২০ লাখ টাকার বা ১২ শতাংশ। আগের দিন এ বাজারে লেনদেন হয়েছিল ৩৫০ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নেয় ৩০৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৯টির, কমেছে ৯৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির শেয়ার দর। সকালে সূচকের উর্ধগতি দিয়ে লেনদেন শুরুর পর দিনশেষে সার্বিক সূচক বা ডিএসইএক্স সূচক ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৫৫৮ পয়েন্টে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১১১ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ৭৩৭ পয়েন্টে। এর আগে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে কিছু অস্থিরতা সৃষ্টির কারণে জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে দেশের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে অবনতি হতে থাকে। লেনদেন ২০০ কোটি থেকে ২৫০ কোটি টাকায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ব্যক্তি পর্যায়ের বড় বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ায় লেনেদেনে এ ধরনের খরা তৈরি হয়। এতে শেয়ারের চাহিদা কমে যাওয়ায় বেশিরভাগ কোম্পানিরই শেয়ারের দর কমে যায়। তবে দেশের প্রধান দুটি সিটি ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে দেশের বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক জোটের অংশ গ্রহণের সম্ভাবনাকে ঘিরে রাজনৈতিক অচলাবস্থা দূর হতে পারে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। আর এ কারণে দেশের পুঁজিবাজারেও তার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে যেসব বিনিয়োগকারী হাত গুটিয়ে নিয়েছিলেন তারা ফের সক্রিয় হয়ে উঠছেন। ফলে বাজার লেনদেন ৪০০ কোটি টাকার কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছেছে। ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে থাকা দশ কোম্পানি হচ্ছে : এসিআই লিমিটেড, গ্রামীণফোন, এমজেএল বাংলাদেশ, শাশা ডেনিমস, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, এসিআই ফরমুলেশনস, শাহজিবাজার পাওয়ার, যমুনা অয়েল এবং স্কয়ার ফার্মা। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, ফাস ফাইনান্স, আরামিট, খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং কোম্পানি লিমিটেড, পদ্মা ওয়েল, আইসিবি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও আইডিএলসি। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : আইসিবি ১ম এনআরবি, এ্যামবে ফার্মা, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, শ্যামপুর সুগার মিল, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, এইচ আর টেক্সটাইল, এসিআই ফর্র্মুলেশন, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, এ্যাপেক্স ফুটওয়ার ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। দিনটিতে প্রধান বাজারের মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও সব ধরনের সূচকই বেড়েছে। সেখানেও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের হাওয়া লেগেছে। তবে সেখানে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন বেশ কমেছে। রবিবারে সিএসইতে মোট ২৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এদিন সিএসই সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৯৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৯৪৫ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৩১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫১টির, কমেছে ৫৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির। সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : শাশা ডেনিমস, মবিল যমুনা বিডি, এসিআই, গ্রামীণফোন, বেক্সিমকো, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, এসিআই ফর্মুলেশন, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড ও লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট।
×