ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বেগম জিয়ার হরতাল অবরোধ কেবল মিডিয়ায়, বাস্তবে নেই

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৩১ মার্চ ২০১৫

বেগম জিয়ার হরতাল অবরোধ কেবল মিডিয়ায়, বাস্তবে নেই

সংসদ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, দেশকে ধ্বংস করতে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া হিংসাত্মক কায়দায় দেশের মানুষ, ছাত্র ও নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। কিন্তু দেশের মানুষ খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেছে। খালেদা জিয়ার টানা ৮৪ দিনের হরতাল-অবরোধ এখন শুধু মিডিয়া-কাগজে, বাস্তবে এর চিহ্নমাত্র নেই। মাগরিবের নামাজের বিরতির পর সোমবার স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এসব কথা বলেন। পয়েন্ট অব অর্ডারে আরও বক্তব্য রাখেন জাসদের মইনউদ্দীন খান বাদল, জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম। পয়েন্ট অব অর্ডারে তোফায়েল আহমেদ জেন্ডার (লিঙ্গ) বৈষম্য দূরীকরণে অভূতপূর্ব সাফল্যে সম্মানজনক এওয়ার্ড প্রাপ্তির কথা তুলে ধরে বলেন, ২৩-২৫ মার্চ ইথিওপিয়ায় নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বের মধ্যে যে ১০ দেশ লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে পেরেছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ওই সম্মেলন থেকে এওয়ার্ড গ্রহণ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তোফায়েল বলেন, ৮৪ দিন ধরে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া লাগাতার অবরোধ-হরতাল চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ব এজতেমা, স্বাধীনতা দিবসে, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি, এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে অবরোধ রেখেছেন, কিন্তু দেশের মানুষ খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। অবরোধ এখন শুধু মিডিয়া-কাগজে, বাস্তবে নেই। হরতালেও ঢাকা শহরে ট্রাফিক জ্যাম। তিনি বলেন, সারাবিশ্বে বাংলাদেশ আজ সমাদৃত। প্রত্যেকটা খাতে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক সকল ক্ষেত্রে পাকিস্তান থেকে আমরা এগিয়ে রয়েছি। অনেক ক্ষেত্রে ভারত থেকেও আমরা এগিয়ে রয়েছি। ’২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে চলেছে। সেই মুহূর্তে খালেদা জিয়া দেশকে ধ্বংস করার জন্য বাংলাদেশের মানুষ, ছাত্র ও দরিদ্র মানুষের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সন্ত্রাস-নাশকতা ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না। জাসদের মইনউদ্দীন খান বাদল বলেন, সম্প্রতি আন্দোলনের নামে যা করেছে, গোটা দেশের মানুষের সামনে অপমাণিত হয়েছে, সারাবিশ্বের সামনে হেয় হয়েছে, সর্বশেষ পরাজিত হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাদেশে নতুন প্রজন্মের অভূতপূর্ব গণজাগরণের সৃষ্টি করেছে। জাতি তাঁর নেতৃত্বে সঠিক পথে এগোচ্ছে। ভয় উপেক্ষা করে পরবর্তী প্রজন্ম এগিয়ে আসছে, শত অরাজকতার মধ্যেও পরীক্ষা দিয়েছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় সংবিধানে নাগরিকদের সমান সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে, সমান আশ্রয় নেয়ার অধিকারী। কুষ্টিয়ার দামুড়হুদা এলাকায় হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষরা কেন সেলুনে চুল কাটতে পারে না, একসঙ্গে হোটেলে খেতে পারে না? এটা হতে পারে না। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ দেখবে বলেই আমি আশা করি। হাজী মোহাম্মদ সেলিম লাঙ্গলবন্ধে ১০ পুণ্যার্থীর পদদলিত হয়ে দুঃখজনক মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রতিবছরই এই তীর্থস্থানে দেশ-বিদেশের লাখো লাখো পুণ্যার্থীর আগমণ ঘটে। কিন্তু সেখানে কেন সরকারী কর্মকর্তা ছিল না? আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি? জায়গা দখল করে রাস্তা দখল করে ফেলেছে। ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। কেন নতুন করে তৈরি করা হয়নি? তিনি ১৬ ঘাটের দুটি করে ৩২ অত্যাধুনিক ঘর নির্মাণ ও দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়ে বলেন, এত মৃত্যুর দায় সরকার এড়াতে পারে না। জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, বিএনপি-জামায়াতের ৮৪ দিনের কথিত হরতাল-অবরোধে বহু মানুষের জীবনহানি ঘটেছে। ১৭শ’ মামলা হলেও ৫২ চার্জশীট তৈরির অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু ৮৪ দিনে একটি মামলারও আদালতে চার্জশীট দাখিল হয়নি। এ ঘটনায় দেশবাসীর সঙ্গে আমরাও মর্মাহত, হতাশ। বিষয়টি সরকারকে আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখা উচিত।
×