ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হাসান আলীর মামলার জেরা শেষ, ১৫ এপ্রিল থেকে যুক্তিতর্ক

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১ এপ্রিল ২০১৫

হাসান আলীর মামলার জেরা শেষ, ১৫ এপ্রিল থেকে যুক্তিতর্ক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত কিশোরগঞ্জের রাজাকার কমান্ডার পলাতক সৈয়দ মোঃ হাসান আলী ওরফে হাছেন আলীর বিরুদ্ধে শেষ সাক্ষী মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হরিদেব নাথকে জেরা শেষ করেছে রাষ্ট্রকর্র্তৃক নিয়োজিত আইনজীবী। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষে ১৫ এপ্রিল থেকে এ মামলার যুক্তিতর্ক শুরু করার দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেছেন রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান। এ সময় মামলার প্রসিকিউটর আবুল কালাম ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। ২০১৪ সালের ১১ নবেম্বর হাসান আলীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুট, আটক ও নির্যাতনের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর হাসান আলীর অনুপস্থিতিতে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তার পক্ষে কোন আইনজীবী না থাকায় আব্দুস শুকুর খানকে রাষ্ট্রীয় খরচে আসামিপক্ষের আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়। ২৪ আগস্ট হাসান আলীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নিয়ে পলাতক এ রাজাকার কমান্ডারকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়ার আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। পরে তাকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দেয় প্রসিকিউশন। ২০১৪ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে হাসান আলীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রসিকিউশন পক্ষের ২৬ জন সাক্ষী। তারা হচ্ছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হরিদেব নাথ, রেণু চন্দ্র পাল, সমেন্দ্র চন্দ্র পাল, সুনীল চন্দ্র পাল, খগেশ চন্দ্র পাল, নূরুল হক লাল মিয়া, রাহিমা ওরফে আবুনি, মোঃ এমদাদ হোসেন ভূঁইয়া, মোঃ শাহজাহান ভূঁইয়া, রেখা রানী ঘোষ, সঞ্জিব কুমার সরকার, বাঁধন চক্রবর্তী এবং মোঃ আতাহার আলী ভূঁইয়া। ২০১৩ সালের ৬ জুন থেকে হাসান আলীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন তদন্ত সংস্থা। ২০১৪ সালের ১৯ জুন তদন্ত শেষ হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন হরিদেব নাথ। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন হাসান আলী। সে সময় তিনি তাড়াইল থানা এলাকায় ‘রাজাকারের দারোগা’ নামে পরিচিত ছিলেন। তবে মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে না থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাছিহাতা গ্রামে বসবাস করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রাস ছিলেন রাজাকার হাসান আলী। হাসান আলী অন্য সহযোগীসহ তাড়াইল থানার বিভিন্ন এলাকাসহ কিশোরগঞ্জে নির্যাতন, হত্যা, গণহত্যা, বাড়িঘর লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, জোর করে টাকা আদায় ও ধর্মান্তরিতকরণসহ যাবতীয় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠন করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দু ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন তিনি। তার নির্দেশেই তাড়াইলে হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে।
×