ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাজেটে শুল্ক মূসক ও আয়কর কমানোর দাবি

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২ এপ্রিল ২০১৫

বাজেটে শুল্ক মূসক ও আয়কর কমানোর দাবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে শুল্ক, মূসক আর আয়করের পরিমাণ কমানোর দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে করদাতার ওপর করের বোঝা আর না বাড়িয়ে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে এর আওতায় আনার দাবি জানান তাঁরা। ব্যবসা ও শিল্পভেদে করের হার সমন্বয়ের দাবিও করে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। ব্যবসায়ীদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য শুল্ক নীতি মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, এখনও রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে ৭০-৮০ শতাংশ। যারা কর ফাঁকি দেয় তাদের করের আওতায় আনতে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকেও এনবিআরকে সহযোগিতা করার পরামর্শ দেন তিনি। বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলনকক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে। অনুষ্ঠানে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে মুদ্রণশিল্প, পেপার মিল মালিক, ট্যুরিজম অপারেটরস, ট্যুরিজম ডেভেলপার, মেডিক্যাল যন্ত্রাংশ আমদানিকারক, দোকান মালিক, নিরাপত্তা সেবাদানকারীসহ বিভিন্ন সেবা খাতের ২৬টি সংগঠন নিয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে এনবিআর। এনবিআর চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান বলেন, এনবিআর সবার সঙ্গে আলাপ করে করের হার নির্ধারণ করবে। এছাড়া কারা কত টাকা কর দিচ্ছেন তার হিসাবও পর্যালোচনা করা হবে। এনবিআরের সদস্য শুল্ক নীতি মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমাদের দেশে ‘কমপ্লায়েন্স’ খুবই দুর্বল। মাত্র ১২-১৩টি খাত ভ্যাট দেয়। এখনও রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে ৭০-৮০ শতাংশ। তিনি বলেন, ১৫ শতাংশ ভ্যাট সত্যিই অসহনীয়। তা কমাতে হলে ‘কমপ্লায়েন্স’ বাড়াতে হবে। তাহলে সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে এবং বিনিয়োগ করতে পারবে। তবে ‘কমপ্লায়েন্স’ না বাড়লে করের হার বাড়তে থাকবে। মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, যারা কর ফাঁকি দেয় তাদের করের আওতায় আনতে এনবিআরকে সবার সহযোগিতা করতে হবে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা ও বাজেট প্রণয়ন কমিটির সদস্য মঞ্জুর আহমেদ বলেন, ব্যবসায়ীরা সবাই কর দিতে চান। তবে করের ক্ষেত্রে সুশাসন হয় না। অনেক ব্যবসায়ী টিআইএন খোলার পর আর কর দেন না। নানাভাবে তাঁরা ব্যবসা করে যাচ্ছেন। আবার অনেকের টিআইএন নেই। তাই করদাতা ব্যবসায়ীদের পক্ষে তাঁদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকে করের আওতায় নিয়ে এলে বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে। তিনি বলেন, সব ব্যবসায়ী ও শিল্পের পক্ষে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দেয়া সম্ভব নয়। শিল্প ও ব্যবসাভেদে এই হার নির্ধারণ না করা হলে অনেক ব্যবসা ও শিল্প হারিয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক দরপত্রের বিপরীতে যেসব ব্যবসায়ী কাজ করেন, তাঁদেরও শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার দাবি জানান তিনি। উৎপাদনকারী খাতের মেশিনপত্র আমদানির সময় অগ্রিম আয়কর (এআইটি) আদায় না করে এটাকে ‘পোস্ট ইনকাম’ আদায় করার পরামর্শ দেন মঞ্জুর আহমেদ। এছাড়া কর্পোরেট করের হার কমালে দেশী বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে বলে মত দেন তিনি। এছাড়া বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাড়ি ভাড়াকে ভ্যাটমুক্ত করার পরমর্শ দেন এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ। এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আব্দুল হক বলেন, দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নকে টিকিয়ে রাখার জন্য সবাইকে কর দিতে হবে। তবে এ ভ্যাটের চাপের কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে অর্থনীতি টিকবে না।
×