ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সৌন্দর্য নিয়ে ফুটেছে

মধুমালতী মাধুরীলতা মধুমঞ্জরীলতা- নানা নামে একটিই ফুল

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২ এপ্রিল ২০১৫

মধুমালতী মাধুরীলতা মধুমঞ্জরীলতা- নানা নামে একটিই ফুল

মোরসালিন মিজান ॥ কবিতা গানে খুব আছে মাধবীলতা। গল্প উপন্যাসের প্রেমিকারা মাধবীলতা নামে সব সময়ই পাঠকের বিশেষ সমীহ আদায় করে নিয়েছেন। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, মাধবীলতা নামে অনেকেই যে ফুলটিকে চেনেন জানেন, প্রকৃতপক্ষে সেটি তা নয়! তাহলে কী এর নাম? উত্তর খুঁজতে গিয়ে পাওয়া যায় তিন তিনটি নাম! নামগুলো- মধুমালতী মাধুরীলতা মধুমঞ্জরীলতা...। জানা যায়, বহুকাল এই দেশে ফুলটি একরকম নামহীন ছিল। একেকজন একেক নামে ডাকতেন। এখন তিন নামের একটিই ফুল। কেউ মধুমালতী নামে জানেন। নামটি বিশেষ প্রতিষ্ঠিত করেছে একটি গান। জনপ্রিয় গানটি- মধুমালতী ডাকে আয়...। রবীন্দ্রনাথ ফুলটিকে মধুমঞ্জরীলতা নাম দিয়েছিলেন। লিখেছিলেন- স্মরণচিহ্ন কত যাবে উন্মুলে/ মোর দেয়া নাম লেখা থাক ওর ফুলে/ মধুমঞ্জরীলতা...। ফুলটি মূলত গ্রীষ্ম ও বর্ষার। আর এখন বসন্ত বিদায়ের বেলা। গ্রীষ্ম শুরুর ক্ষণ। এরই মাঝে বাগান ভরে উঠেছে মধুমালতীতে। এখানে ওখানে রঙিন মধুুমালতী। দোল খাচ্ছে বাতাসে। সুন্দর যেমন, তেমনি মিষ্টি ঘ্রাণ। আশপাশ ভরিয়ে রাখে। অনেকেই বাড়ির সামনে একটু মাচার মতো জায়গা করে রেখেছেন। সেখানে লতাপাতা ছড়িয়ে দিয়েছে মধুমালতী। ডালের আগায় বড় বড় ঝুলন্ত থোকা হয়। উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মা জানান, ফুলটির ইংরেজী নাম রেঙ্গুনক্রিপার। বৈজ্ঞানিক নাম কুইসকুয়ালিস ইন্ডিকা। এটি মালয়েশীয় প্রজাতি। গাছের পাতা একক অখ- আয়তাকার। ৬ থেকে ৮ সেমি লম্বা। শিরা সামান্য রোমশ। বিন্যাস বিপ্রতীপ। মধুমালতীর ঘন সবুজ পাতা দেখতে অনেকটা ঝোপের মতো। সেই ঝোপ থেকেই উঁকি দেয় ফুল। গাছটির লতা বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বিশাল জায়গাজুড়ে দৃশ্যমান হয় ফুল। ঝুলন্ত ফুলের থোকা বাতাসে দোলে। মিষ্টি ঘ্রাণ ছড়ায়। পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় নাকে সেই ঘ্রাণ আসে। আগে যে তাকিয়ে দেখেনি, সেই নিরস মানুষটিও ফুলের দিকে তাকায়। দ্বিজেন শর্মা জানান, মধুমালতীর দলনল প্রায় ৫ সেমি লম্বা। মুখে ৫টি গোল লতি। ফুল চওড়ায় ২ সেমি। সাদা ও ছোট ডবল ফুলের দুটি ভ্যারাইটি আছে। ড্যান্সিফ্লোরা প্রজাতির ফুল বড় হয়। প্রায় ৭ সেমি লম্বা। মুখ ৩ সেমি চওড়া। ম্যালাবারিকা প্রজাতির পাতা, ফুল, ফুলের থোকা ছোট। কিন্তু অজস্র। মধুমঞ্জরীর গোড়ায় শিকড় থেকে চারা গজায়। আর চমৎকার ফুলটি সন্ধ্যায় ফোটে। বলা বাহুল্য, এই সন্ধ্যার কোন তুলনা হয় না।
×