ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এডেনের কেন্দ্রস্থলে হুতি ট্যাঙ্ক

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ৩ এপ্রিল ২০১৫

এডেনের কেন্দ্রস্থলে হুতি ট্যাঙ্ক

হুতি বিদ্রোহী ও মিত্ররা ট্যাঙ্কবহর নিয়ে ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর এডেনের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছেছে। এ শহরটিই প্রেসিডেন্ট আব্দুরাবু মনসুর হাদির অনুগত যোদ্ধাদের সর্বশেষ প্রধান আশ্রয়স্থল। সুন্নীপ্রধান উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোর জোট সমুদ্রপথ থেকেও উত্তরাঞ্চলীয় শিয়া হুতিদের ওপর হামলা চালায়, কিন্তু এডেন অভিমুখে হুতিদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকে। খবর বিবিসি ও ইয়াহু নিউজের। হুতি বিদ্রোহীরা এডেন দখলের চেষ্টা করায় সেখানে লড়াই তীব্ররূপ নিয়েছে। স্থানীয় মিলিশিয়া যোদ্ধা এবং বিদ্রোহী বাহিনীর মধ্যে প্রচ- সংঘর্ষের পর হতাহতের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্রোহীদের গোলাবর্ষণ ও প্রতিপক্ষের চোরাগোপ্তা হামলার পর রাস্তায় রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। হুতি বিদ্রোহীরা এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহের প্রতি অনুগত সৈন্যরা এডেনের আরও অভ্যন্তরে এগিয়ে গেছে বলে জানা যায়। তারা প্রেসিডেন্ট হাদির অনুগত যোদ্ধাদের কাছ থেকে শহরটির নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নিতে চায়। বিবিসির সংবাদদাতা বলেন, বিদ্রোহীদের ট্যাঙ্কবহর এডেনের কেন্দ্রস্থলে প্রবেশের খবর সত্য হলে ইয়েমেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশে তাদের দখলদারি আরও সুসংহত হলো বলে মনে করতে হবে। এডেনের পরিস্থিতিতে হাদির সহকারীরা উদ্বেগ ব্যক্ত করেছেন। রিয়াদ ইয়াসিন আবদুল্লাহ আলজাজিরা টেলিভিশনে বলেন, এখন যা ঘটছে তাতে এডেনের পতন হলে এডেন ও এর বাসিন্দাদের জন্য এক বিপর্যয়ই হবে। হুতি দলকে উল্লসিতই মনে হয়। দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ আবদুল সালাম মিলিশিয়ার আল মাসিরা টেলিভিশনে বলেন, আমরা বলতে পারি যে, ইয়েমেনে এক সপ্তাহ ধরে বোমাবর্ষণের পর আক্রমণকারীরা কোন ফল অর্জন করতে পারেনি। আজ এডেন জয় ওই আক্রমণের জন্য বিব্রতকরই হয়েছে এবং তা আগ্রাসী রাষ্ট্রগুলোকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। এক সৌদি সামরিক মুখপাত্র তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, জোট ২৬ মার্চ অভিযান শুরু করার আগেই এডেনে হুতি বাহিনী ছিল এবং শহরের জনসাধারণের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই লড়াই করত। সেখানে ট্যাঙ্কগুলোর উপস্থিতি সর্বদাই এক সম্ভাব্য ঘটনা ছিল। সাবেক প্রেসিডেন্ট সালেহের অনুগত সেনা ইউনিটগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন নিয়ে হুতিরা ছয় মাস আগে রাজধানী সানা দখল করার পর ইয়েমেনে সর্বাপেক্ষা বড় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। তারা এখন আরব উপদ্বীপের দেশ ইয়েমেনের অনেকাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। এডেন থেকে ১০০ কিলোমিটার (৬০ মাইল) দূরবর্তী দহলিয়াতে বিমান বাহিনীর সমর্থনপুষ্ট মিলিশিয়ারা হুতিদের সঙ্গে রাস্তায় রাস্তায় লড়াইয়ে লিপ্ত হয়। হুতিরা সৌদি আরবের আঞ্চলিক বৈরী ইরানের মিত্র। তারা দীর্ঘদিনের শাসক সালেহের অনুগত সেনা ইউনিটগুলোরও সমর্থন পাচ্ছে। তিন বছর আগে ‘আরব বসন্ত’ বিক্ষোভে পর পর সালেহ ক্ষমতাচ্যুত হন। এডেনের বাসিন্দারা বলেন, তাঁরা ঘোর মাকসার এলাকায় কয়েক দল যোদ্ধাকে রকেটচালিত গ্রেনেড নিয়ে যেতে দেখেন। চারটি ট্যাঙ্ক ও তিনটি সাঁজোয়া যানও তাদের সঙ্গে ছিল। ওই এলাকাটি এডেনের কেন্দ্রস্থল এবং শহরের অন্যান্য অংশের মধ্যে সংযোগ সাধনকারী এক সঙ্কীর্ণ ভূখ-ের অংশ। ওই যোদ্ধারা স্থানীয় মিলিশিয়াদের কাছ থেকে তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। বাসিন্দারা রাস্তায় আট হুতি যোদ্ধার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। রকেটের গোলা শহরের কেন্দ্রস্থলের ক্র্যাটার এলাকায় গিয়ে পড়ে। অনেক লোক ওই এলাকা থেকে পালিয়ে যায় এবং কেউ কেউ বন্দর ছেড়ে যাওয়া এক জাহাজে ওঠার চেষ্টা করে।
×