ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ মাঠে গড়াচ্ছে মঙ্গলবার

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ৪ এপ্রিল ২০১৫

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ মাঠে গড়াচ্ছে মঙ্গলবার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কথায় আছে, ‘সবুরে মেওয়া ফলে।’ অনেক বিলম্ব আর অপেক্ষার পর অবশেষে মেওয়া ফলছে। সেই মেওয়া ফলের নাম হচ্ছে ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লীগ’-এর সপ্তম আসর। প্রথমে ৯ মার্চ। তারপর ৩ এপ্রিল। এরপর ৫ মার্চ। তিন তারিখেও লীগ শুরু করা যায়নি নানা কারণে। তবে শুক্রবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে পেশাদার ফুটবল লীগ কমিটির ৫৩তম সভার পর (সভায় উপস্থিত ছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন, লীগ কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফে সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডের সভাপতি মনজুর কাদেরসহ আরও ১০ ক্লাবের কর্মকর্তা) ঘোষণা করা হয়েছে লীগ শুরুর চূড়ান্ত দিনক্ষণ, ‘আগামী ৭ এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের খেলা। আসলে স্পন্সর না পাওয়া এবং ক্লাবগুলোর অংশগ্রহণ ফি বৃদ্ধির দাবিসহ অন্য কিছু কারণেই আমরা যথাসময়ে লীগ শুরু করতে পারিনি।’ সালাম মুর্শেদীর অভিমত। উল্লেখ্য, ক্লাবগুলো গত লীগ মৌসুমে বাফুফের কাছ থেকে অংশগ্রহণ ফি বাবদ পেত ১০ লাখ টাকা। এবার তাদের দাবি ছিল সেটা বাড়াতে হবে আরও ১৫ লাখ টাকা। শুক্রবারের সভায় ক্লাবগুলোর সেই দাবি মেনে নিয়েছে বাফুফে। সেটাই জানান মুর্শেদী, ‘ক্লাবগুলোর দাবি অনুযায়ী এবার তাদের অংশগ্রহণ ফির পরিমাণ ২৫ লাখ টাকায় উন্নীত করেছি আমরা। আজকের (শুক্রবার) সভায় অংশ নেয়া ১১ ক্লাবকে প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ টাকা করে মোট ৫৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।’ তার মানে ১১ ক্লাব ২৫ লাখ টাকা পেলে মোট খরচ ২ কোটি ৭৫ লাখ। তবে রেফারি খরচ ও অন্য খরচ মিলে লীগের খরচ হবে ৫ কোটি টাকার মতোÑ এমনটাই জানান সালাম। ক্লাবগুলোকে অংশগ্রহণ ফি সামনের লীগ মৌসুমে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে দেবে বাফুফে, জানান মুর্শেদী, ‘আমরা তখন ক্লাবগুলোকে পেমেন্ট দেব ভিন্ন স্টাইলে। প্রথম শীর্ষ চার দলকে ৩০ লাখ, মাঝের শীর্ষ চার ক্লাবকে ২০ লাখ এবং নিচের চার ক্লাবকে ১০ লাখ টাকা করে দেয়ার পরিকল্পনা আছে। যারা কম টাকা পাবে তারা নিশ্চয়ই পাতানো ম্যাচ খেলতে চাইবে না।’ এবারের লীগে অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলো হলোÑ ঢাকা আবাহনী লিমিটেড, ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ক্লাব লিমিটেড, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড, টিম বিজেএমসি, ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেড, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র, চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড, ফেনী সকার ক্লাব ফেনী, ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব এবং রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। গত মৌসুমে অবনমিত হয়েছে উত্তর বারিধারা ক্লাব। বাংলাদেশ চ্যাম্পিনয়নশিপ লীগে গত মৌসুমে যথাক্রমে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হওয়ার সুবাদে এবার প্রিমিয়ার লীগ খেলার ছাড়পত্র পেয়েছে রহমতগঞ্জ ও ফরাশগঞ্জ। আগামী মৌসুমে ১১-এর পরিবর্তে লীগে অংশ নেবে ১২ ক্লাব। এক্ষেত্রে এ বছরও প্রিমিয়ার লীগ থেকে একটি দল অবনমিত হবে এবং চ্যাম্পিয়নশিপ লীগ থেকে দুটি দল উন্নীত হবে প্রিমিয়ার লীগে। ৭ এপ্রিল খেলা শুরু হলেও লীগের ফিক্সচার এখন চূড়ান্ত করেনি বাফুফে। সেটা ৬ এপ্রিল চূড়ান্ত হবে বলে বাফুফে সূত্রে জানা গেছে। তরুণ ও দক্ষ ফুটবলার তৈরির লক্ষ্যে লীগে বিদেশী ফুটবলার কমানোর জন্য বাফুফের প্রতি যে চাপ ছিল, তা থেকে এবারও সরে আসেনি তারা। তার মানে এই লীগেও প্রতি ক্লাব ৫ বিদেশী ফুটবলারকে নিবন্ধন করাতে পারবে, তবে ম্যাচে খেলতে পারবে ৩ জন। ‘তবে পরের লীগ মৌসুমে সংখ্যাটা অবশ্যই কমানো হবে। তখন ৩ বিদেশীকে সাইন করে ম্যাচে খেলানো যাবে ২ জনকে।’ ভাষ্য সালামের। গত মৌসুম ১০ দল নিয়ে লীগের খেলা হয়েছিল তিন লেগে। এ নিয়ে অনেক সমালোচিত হয়েছিল বাফুফে। এবার তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই লেগেই হবে লীগ। ‘নিয়মিত খেলা হলে প্রথম পর্বের লীগ খেলা হয়ে যাবে ২৪ মের মধ্যেই’Ñ আশাবাদ ব্যক্ত করেন সালাম। তিনি আরও জানান, দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য লীগের প্রথম পর্বের খেলাগুলো ঢাকাতেই অনুষ্ঠিত হবে। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ঢাকার বাইরে হবে দ্বিতীয় পর্বের খেলা। ‘ক্লাবগুলোকে আমরা অনুরোধ করেছি একটু কষ্ট হলেও তারা যেন চারদিনের পরিবর্তে তিন দিন অন্তর একটি ম্যাচ খেলে। এটা তারা মেনে নিয়েছে।’ যোগ করেন সালাম। তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে ফিফা প্রেরিতে আমাদের পাওনা ফুটবল টার্ফটি শুল্ক আদায়ের জন্য ছাড়ছে না কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সেই শুল্কের পরিমাণ ট্যাক্স এতই বেশি যে (দেড় কোটি), সেই টাকা দেয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই। অথচ প্রথমবার কিন্তু তারা আমাদের টার্ফটি বিনা শুল্কেই ছেড়ে দিয়েছিল! এখন সংবাদমাধ্যমের প্রচারই পারে টার্ফটিকে বিনা শুল্কে ছাড়িয়ে আনতে। তাহলে একমাসের মধ্যেই টার্ফটি কমলাপুর স্টেডিয়ামে স্থাপন করে লীগের ম্যাচগুলো সেখানেও আয়োজন করে নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা লীগ শেষ করতে পারব।’ সাধারণত লীগ শুরুর আগে অনুষ্ঠিত হয় স্বাধীনতা কাপের আসর। কিন্তু মার্চ গড়িয়ে এপ্রিল চলে যাচ্ছে। এখনও মাঠে গড়ায়নি স্বাধীনতা কাপের খেলা। কারণটা কী? গত মৌসুমের সুপার কাপের মতো কি এবার স্বাধীনতা কাপও অনুষ্ঠিত হবে না? ‘অবশ্যই হবে। স্বাধীনতা কাপই নয়, সুপার কাপও হবে।’Ñ নিশ্চয়তা সালামের।
×