ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী, রাজশাহীতে হত ৪

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৫ এপ্রিল ২০১৫

ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী, রাজশাহীতে হত ৪

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীসহ দেশের অনেক স্থানে শনিবার বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়। এতে রাজশাহীতে চারজনের মৃত্যু ঘটে, আহত হয় ২০ জন। ফরিদপুর সদর থানার শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট বিধ্বস্ত হয়। বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হওয়ায় কালবৈশাখী ঝড় আক্রান্ত এলাকাসমূহে নেমে আসে অন্ধকার। রাজধানীতেও ভেঙ্গে পড়ে গাছের ডালপালা, সাইনবোর্ড এবং বাসাবাড়ির দরজা-জানালার কাঁচ। উড়ে যায় অনেক ভাসমান দোকানপাট। ঝড়ো বাতাসের বেগে আহত হয় অনেক পথচারী। বাতাসের সঙ্গে আকাশে উড়তে থাকে ধুলাবালি। ঝড়োহাওয়া শেষে নেমে আসে বৃষ্টি। সাময়িক দুর্ভোগে পড়ে রাজধানীবাসী। আবহাওয়া অধিদফতর আরও জানায়, এপ্রিল মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১-২ টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আগামী মে মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। ওই মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২ টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। শনিবার সকাল থেকে বিকালজুড়ে তীব্র গরম অনুভূত হয় রাজধানীতে। সূর্যের তির্যক রশ্মি এবং তীব্র গরমে অতীষ্ঠ হয় নগরবাসী। হঠাৎ সন্ধ্যায় বদলে যায় রাজধানীর চিত্র। বইতে থাকে কালবৈশাখী ঝড়। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে চলতে থাকে ঝড়োহাওয়া। শুরু হয় লোকজনের ছোটাছুটি। কেউ কেউ নিকটস্থ স্থাপনায় পৌঁছার আগেই বাতাসের কবলে পড়েন। বাতাসের বেগ সামাল দিতে না পেরে মাটিতে পড়ে গিয়ে আহত হয়। ফুটপাথের ভাসমান দোকানসমূহ গুটিয়ে ফেলার সুযোগ পায়নি অনেকে। স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী থেকে জানান, মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখী আঘাত হেনেছে রাজশাহী অঞ্চলে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার পর হঠাৎ পুরো এলাকায় অন্ধকার নেমে আসে। শুরু হয় কালবৈশাখীর তা-ব। রাজশাহী নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যায় ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী ঝড়। সঙ্গে ছিল বজ্রসহ বৃষ্টিপাত। ঝড়ের শুরু থেকেই বিদ্যুতবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজশাহী মহানগরীর পুরো এলাকা। ঝড়ে আম, লিচুসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। ঘণ্টাব্যাপী এ ঝড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবলিস চত্বরে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জেলার পুঠিয়ায় অটোরিকশার ওপর বিলবোর্ড পড়ে অন্তত ৫ জন আহত হয়। মোহনপুরে এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া গোদাগাড়ী ও তানোরে অন্তত ৪ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। বাঘা উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের জাহানারা বেগম(৫০) দেয়াল চাপায় এবং একই উপজেলার কিশোরপুর গ্রামের ইমাজউদ্দীনের (৪৮) ওপর গাছের ডাল পড়লে সে মারা যায়। বিকেলে শুধু ঝড় হলেও এলাকাজুড়ে অন্ধকার নেমে আসে। ঝড়ে নগরীর সাহেববাজার, গোরহাঙ্গা রেলগেট, নওদাপাড়া, বায়া, বিমানবন্দর থানার মোড়, শালবাগান এবং লক্ষ্মীপুর এলাকার রাস্তার ধারের বিভিন্ন গাছপালা ও সাইনবোর্ড রাস্তায় পড়ে গেছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তার পাশের ছোট ছোট দোকানপাট। জেলার তানোর, গোদাগাড়ী, পবা, পুঠিয়া, বাগমারা, বাঘা, চারঘাট ও মোহনপুর উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে আম, লিচু বাগান ও পানের বরজে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও অনেক স্কুল ও কলেজের টিন উড়ে গেছে। সড়কের পাশের অনেক দোকানপাট উড়ে গেছে। গ্রামের মানুষের ছোট ছোট অসখ্য কুঁড়েঘর উড়ে গেছে বলে এলাকাবাসী জানায়। বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দুর্ভোগে পড়ে এলাকাবাসী। নিজস্ব সংবাদদাতা ফরিদপুর থেকে জানান, ঝড়ে ফরিদপুর সদরের আলীয়াবাদ ও ডিক্রিরচর ইউনিয়নে ৯১টি ঘরবাড়ি ও ৬টি দোকান বিধ্বস্থ হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঝড়ে আলীয়াবাদ ইউনিয়নের গদাধরডাঙ্গি গ্রামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, কাল বৈশাখী ঝড়ে জেলার অনেক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন এবং গাছপালা ভেঙ্গে পড়ায় স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। চরম দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ।
×