ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যত্রতত্র আবর্জনা খানাখন্দে বেহাল অবস্থা

রাসিকের অভিজাত এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ৯ এপ্রিল ২০১৫

রাসিকের অভিজাত এলাকায়  সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ নগরীর অভিজাত আবাসিক এলাকা হিসেবে পরিচিত ‘উপশহরে’ এখন আভিজাত্য নেই। ড্রেন উপচে ময়লা অবর্জনা, যত্রতত্র খানা খন্দকে ভরে গেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সবার আগে জলমগ্ন হওয়ার দৃশ্য এখন এক সময়ের নিরিবিলি আবাসিক এলাকা উপশহরে মিলবে সহজেই। বর্তমান সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ অনেক রাজনৈতিক নেতার পাশাপাশি ভিআইপিদের ঠিকানা এই উপশহরে এখন কেউ প্রবেশ করলেই আঁতকে উঠবে নোংরা আবর্জনার চিত্র দেখে। উপশহরের বাসিন্দারাও ক্ষিপ্ত ও বিরক্ত এলাকার করুণ দশা দেখে। একদিকে মশার উৎপাত অন্যদিকে ড্রেন উপচে ময়লা আবর্জনা এখন চির জঞ্জালে পরিণত হয়েছে উপশহরজুড়ে। এ অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলেও সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের যেন কোন দায় নেই। এ এলাকায় বসবাসকারীরা এখন ক্ষোভ প্রকাশ করেই মনের ঝাল মেটাচ্ছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আগের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন থাকাকালীন কিছুটা পরিচ্ছন্ন হয়েছিল উপশহরের চিত্র। তবে নতুন মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নির্বাচিত হওয়ার পর অবকাঠামোগত সংস্কারের কোন কাজ না করায় বর্তমানে করুণ অবস্থায় ঠেকেছে উপশহরের অবস্থা। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার কালবৈশাখীর সঙ্গে ৪১ মিলিমিটারের বৃষ্টিপাতে কোমর পানি জমে যায় উপশহরের অলিগলি। অনেক বাড়িতে ড্রেন উপচে পানির সঙ্গে মিশে উঠেছে ময়লা আবর্জনা। এতে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয় উপশহরের বাসিন্দাদের। কোমর পানি মাড়িয়ে বাড়ি ফেরার সময় মঙ্গলবার বাসিন্দাদের ক্ষোভ ঝাড়তে দেখা যায়। উপশহরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপশহরের এ অবস্থা নতুন নয়। সামান্য বৃষ্টিপাতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ড্রেন পরিষ্কার করা হয় নি। মশা মারার কার্যক্রম নেই সিটি কর্পোরেশনের। মশার উপদ্রুপে দিনের বেলায় ঘরে টেকা দায় হয়ে পড়ে। মাত্র ৩০ মিনিটের বৃষ্টিতে রাজশাহী মহানগরীতে সৃষ্টি হওয়া জলাবদ্ধতায় বিড়ম্বনায় পড়েন নগরবাসী। শুধু তাই নয়, এ সময় নগরীর দড়িখরবোনা, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, তেরখাদিয়া, নিউমার্কেট, কাদিরগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ঝাউতলা, ভাটাপাড়া এলাকাসহ আশপাশের এলাগুলোতে চরম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে বাড়ি ফেরা মানুষকে চরম বিড়ম্বনার পড়তে হয়। বৃষ্টি শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই নগরীর উপশহর এলাকার রাস্তাগুলো পানিতে ডুবে যায়। ব্যস্ত এ আবাসিক এলাকায় মানুষকে পড়তে হয় চরম অসুবিধায়। ড্রেন উপচে পানি অনেকের বাড়িতে প্রবেশ করে। উপশহর এলাকার স্কুল শিক্ষক সিরাজুন মুনিরা বৃষ্টি শেষে বাড়ি ফেরেন হাঁটু পানি মাড়িয়ে। ক্ষোভ ঝেড়ে তিনি বললেন, আসলে এটা উপশহর নয়, উপকূল। সামান্য বৃষ্টিতেই জমে যায় পানি। সহজে পানি নামে না। জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরে ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পরেই হাঁটু পানিতে রাস্তাঘাটগুলোতে ভরে যায়। নগর জুড়ে জলাবদ্ধতার কারণে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন সাধারণ মানুষ। অনেকে অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করার কারণে অল্প বৃষ্টিতেই পানি ড্রেন উপচে রাস্তা ভরে যায়। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় না কোন ব্যবস্থা। স্থবির সিটি কর্পোরেশনের কারণে নাগরিক সেবা পাচ্ছেন না নাগরিকরা।
×