ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষণাপত্র বিশ্বে অনন্য

আলোচনাসভায় বক্তারা

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১১ এপ্রিল ২০১৫

আলোচনাসভায় বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৯৫টি রাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র আছে। এসব ঘোষণাপত্রের মধ্যে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পঠিত স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষণাপত্রটি প্রকৃতিগত ও তাৎপর্যগত দিক থেকে অনন্য। অন্যান্য রাষ্ট্রের ঘোষণাপত্রে মানুষের জন্মগত ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকারের দর্শনকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ওই স্বাধীনতাকে দর্শনের কারাগার থেকে মুক্ত করে তুলে দিয়েছে নিপীড়িত ও অধিকারবঞ্চিত জনগণের হাতে। ঘোষণা দিয়েছে একটি স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াবার। তাই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা মৌলবাদ-জঙ্গীবাদ রুখে দাঁড়াতে নতুন প্রজন্মকে ঘোষণাপত্রে বর্ণিত সমতাভিত্তিক জাতিগত চেতনা হৃদয়ে লালন করার শিক্ষা দিতে হবে। এজন্য এটিকে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং ১০ এপ্রিলকে জাতীয় দিবসের মর্যাদা দেয়া জরুরী। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধানম-িতে ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বনাম জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাস’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ৪৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি এর আয়োজন করে। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল (অব) আবু ওসমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ঘোষণাপত্রের রচয়িতা ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলাম ছিলেন প্রধান বক্তা। এছাড়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব) আবদুর রশিদ, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল সভা পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে নিহত ব্লগার ওয়াশিকুর রহমানের ওপর হামলকারী জঙ্গীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ভ্যানচালক রফিক হোসেন ও লাবণ্যকে (হিজড়া) সংবর্ধনা দেয়া হয়। সাহসীকতার স্বীকৃতি হিসেবে আয়োজকরা এই দুজনের হাতে মানপত্র. ফুলের তোড়া ও নগদ ৩৫ হাজার টাকা তুলে দেন। ঘোষণাপত্র রচনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে এর রচয়িতা আমীরুল ইসলাম বলেন, ওই সময় সরকার গঠন করা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি ছিল। কেউ কেউ বিপ্লবী সরকার গঠনের প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়েই সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। আর সরকারর গঠনের দালিলিক বৈধতার ১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র রচনা করা হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ঘোষণাপত্রটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বৈধ দলিল। গণতান্ত্রিক ধারায় সত্তরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এর ভিত্তি গড়েছিলেন। নতুন প্রজন্মকে এ সম্পর্কে জানাতে হবে। এ প্রসঙ্গে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সমালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ওই নির্বাচনে গণতন্ত্রের অঙ্গহানি হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন না হলে গণতন্ত্রের দাফন হয়ে যেত।
×