ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জীববিজ্ঞান ২য় পত্র

এইচ এস সি পরীক্ষার প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১১ এপ্রিল ২০১৫

এইচ এস সি পরীক্ষার প্রস্তুতি

অধ্যায়- জৈব প্রযুক্তি ও জীন প্রকৌশল-১ প্রশ্ন : ঔষধশিল্পে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার আলোচনা কর। উত্তর : ঐষধশিল্পে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার :- ঔষধশিল্পে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপক যা নিম্নে আলোচনা করা হল :- ১। পেনিসিলিন প্রস্তুত : অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে পেনিসিলিনের ব্যবহার পুরোনো হলেও জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে চবহরপরষষরঁস পযৎুংড়মবহঁস (পেনিসিলিয়াম ক্রাইসোযেনাম) নামক ফাঙ্গাস থেকে সর্বোৎকৃষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ভাবন করা যায়। ২। মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি প্রস্তুত : জীবদেহ বহিরাগত কোন রোগজীবাণু বা অ্যান্টিজেন দ্বারা আক্রান্ত হলে প্রতিরোধক হিসেবে অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয়। মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি সুনির্দিষ্ট অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে কার্যকর। প্রেগন্যান্সী টেস্ট, যৌন সংক্রামক ব্যাধি, যেমন- পষধসুফরধ (ক্ল্যামাইডিয়া) ও অন্যান্য রোগের সনাক্তকরণে এই অ্যান্টিবডি ব্যবহৃত হয়। ৩। ভ্যাকসিন প্রস্তুত : জৈব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হয়। ৪। এনজাইম টেকনোলজী : কোন নির্দিষ্ট রাসায়নিক বিক্রিয়াকে স্বল্প সময়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সম্পন্ন করতে এনজাইম প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। ঔষধশিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এনজাইমের ব্যবহার ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে। ৫। ইন্টারফেরন উৎপাদন : ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রোটিন অণুর সমন্বয়ে গঠিত ইন্টারফেরন উপাদানটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় অত্যন্ত কার্যকর। জীন প্রকৌশল পদ্ধতিতে ইন্টারফেরন উৎপাদনকারী জীন প্লাজমিডের সঙ্গে স্থানান্তর করে ঊ. পড়ষর বাহকের মাধ্যমে ইন্টারফেরনের বাণিজ্যিক ভিত্তিক উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। ৬। হরমোন উৎপাদন : বিভিন্ন হরমোন, যথা- ইনসুলিন, বর্ধনকারী হরমোন (সোমাটোট্রফিন) ইত্যাদি উৎপাদনে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার একটি উল্লেখযোগ্য দিক। জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত ইনসুলিন ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসায় একটি প্রধান উপকরণ। ৭। ট্রান্সজেনিক প্রাণী থেকে মূল্যবান ঔষধ সংগ্রহ : ট্রান্সজেনিক প্রাণী উদ্ভাবন ঔষধ শিল্পে একটি বিপ্লব সূচনা করেছে। বিপুল পরিমাণে মূল্যবান ঔষধ এর ফলে উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় ইথেল (ঊঃযবষ) নামক ট্রান্সজেনিক ছাগলের মধ্যে মানুষের রক্ত তঞ্চন জীন উপস্থাপনের মাধ্যমে যে ট্রান্সজেনিক ছাগলের উদ্ভাবন হয় তার দুধ থেকে হিমোফিলিয়া (যবসড়ঢ়যরষরধ) রোগের ঔষধ বিশ্লেষণ করা সম্ভব। ঔষধশিল্পে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আরও চিন্তা-ভাবনা চলছে এবং অচিরেই অনেক উন্নততর প্রযুক্তির প্রসার ঘটবে। প্রশ্ন : কৃষিক্ষেত্রে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার আলোচনা কর। উত্তর : কৃষিক্ষেত্রে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার : কৃষিক্ষেত্রে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপক যা নিম্নে বর্ণনা করা হল:- ১। নতুন জাতের খাদ্যশস্য সৃষ্টি করা। এই শস্য উদ্ভিদগুলো আবার নিজেদের জন্য প্রয়োজনীয় সার উৎপাদনে সক্ষম। ২। অনুজীব ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্ভিদের মধ্যে উপকারী জৈব পদার্থ সংশ্লেষণ করা হচ্ছে। একে উচ্চ পুষ্টি মানসম্পন্ন খাদ্য উপাদানে রূপান্তর এবং সঞ্চয়ভা-ারে পরিণত করা হচ্ছে। ৩। জৈব প্রযুক্তি প্রয়োগে ফসলী উদ্ভিদকে একদিকে যেমন বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে জন্মানো সম্ভব হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি রোগজীবাণু ও পতঙ্গ প্রতিরোধী করে তোলা হচ্ছে। ৪। মাটিতে নাইট্রোজেন আবদ্ধকরণে অনুজীবের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে, একই সঙ্গে নতুন ধরনের সিমবায়োন্ট ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টির প্রয়াস চলছে। ৫। বনায়ন প্রকল্পে নতুন জেনেটিক গঠন বিশিষ্ট উদ্ভিদের সম্প্রসারণ ঘটানো হয়েছে। ৬। যৌন জননে অক্ষম উদ্ভিদের জেনেটিক ভিন্নতা আনয়ন ও উপযুক্ততা অর্জনের লক্ষ্যে এদের যৌন জননে সক্ষম করে তোলার চেষ্টা চলছে। ৭। জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে কোষ বিভেদকরণ নিয়ন্ত্রণপূর্বক প্রয়োজনে নির্দিষ্ট অঙ্গতে সুগঠিত করা। ৮। দ্রুতবর্ধনশীল জ্বালানি কাঠ বিশিষ্ট উদ্ভিদ সৃষ্টি করা। ৯। প্রোটোপ্লাস্ট কালচারের মাধ্যমে ক্লোরোপ্লাস্টকে উদ্ভিদ কোষের মধ্যে সংযোজিত করে কাক্সিক্ষত বৈষিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদ পাওয়া। ১০। টিস্যু কালচার দ্বারা খাদ্যশস্য উৎপাদনকারী অভ্যন্তরীণ প্রজাতির উন্নয়ন ঘটানো। কৃষিক্ষেত্রে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আরও চিন্তা-ভাবনা চলছে এবং অচিরেই অনেক উন্নতর প্রযুক্তির প্রসার ঘটবে।
×