ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ১২ এপ্রিল ২০১৫

সম্পাদক সমীপে

এ লজ্জা রাখব কোথায়? এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ’৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণআন্দোলন, ’৭০-এর নির্বাচন এবং সর্বোপরি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন- সব কিছুই কিন্তু এক সূত্রে গাঁথা। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজকে সারা পৃথিবী পালন করছে, যা সালাম, রফিক, বরকতের মতো অনেকের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। আমাদের এতটাই ভোলা মন যে, বাঙালী অতি সহজেই তার অতীত ভুলে যায়। ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় দিবস, তথা শহীদ দিবস, ২৬ মার্চ আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বা আমাদের মহান বিজয় দিবস, সেই ১৬ ডিসেম্বরের পাকবাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এই তিনটি জাতীয় দিবসে আমরা জাতীয় পতাকা তুলে সম্মান জানাই। কিন্তু দুঃখ এবং পরিতাপের বিষয় আজকে কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যন্ত জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় পতাকা তোলা থেকে বিরত থাকে, যা বাঙালী জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং নিন্দনীয়। এই লজ্জা আমাদের সবার। এই লজ্জা আমরা রাখব কোথায়? রণজিত মজুমদার সোনাগাজী, ফেনী। বিচার চাই চলতি বছরের ৫ জানুয়ারির পূর্বদিন হতে খালেদা জিয়া ও অন্যদের নিদের্শে হরতাল, অবরোধের নামে দেশে পেট্রোলবোমা, ককটেল ও অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে এ দেশের নিরীহ নিরপরাধ মানুষ হত্যা করা হয়েছে। দেশের অপূরণীয় জানমালের ক্ষতি করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের আত্মীয়স্বজন, স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার আত্মীয়স্বজন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, জঙ্গী, দুর্নীতিবাজ, বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে অবৈধ সুবিধা ভোগী, চোর-ডাকাত জোট বেঁধেছে। তারা অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মৌলবাদী জঙ্গী সংগঠনের মদদে ও আর্থিক সহায়তায় মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ সরকারকে ফেলে দেয়ার জন্য ও জাতির জনক কন্যাকে হত্যা করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করার জন্য এ সকল মানবতাবিরোধী কর্মকা- করা হয়েছে। তিরিশ লাখ শহীদ আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন অবস্থাতাতেই স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে তুলে দেয়া যাবে না। দেশ ও দশের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মানবতাবিরোধী প্রত্যেকটি কর্মকা- তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ। শিক্ষা হোক দুর্নীতিমুক্ত ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকদের কাছে লেখাপড়া শিখে জ্ঞান অর্জন করে দেশের সুনাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবে। এটাই জাতির প্রত্যাশা। কিন্তু আজ দেশে শিক্ষার সেই পরিবেশ আর নেই। ছাত্র-ছাত্রীরা নানাভাবে শিক্ষকদের দ্বারা প্রতারিত হচ্ছে। বেশিরভাগ শিক্ষক তাদের পেশার মহান আদর্শ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। শিক্ষাব্যবস্থায় দুর্নীতি কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাই যে কোন মূল্যে শিক্ষাকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হবে। বর্তমানে সারাদেশে জেএসসির (অষ্টম শ্রেণীর) রেজিস্ট্রেশন চলছে। বোর্ড নির্ধারিত ফি আশি টাকা হলেও ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে পাঁচ থেকে দশ গুণ টাকা। তারা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন প্রকাশ্য দিবালোকে। কিন্তু দেখার কেউ নেই। জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এ ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। একইভাবে এসএসসি পরীক্ষার ফিসও আদায় করা হয়ে থাকে। উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশ দেয়া সত্ত্বেও বেশিরভাগ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসএসসি পরীক্ষার বাড়তি ফি ফেরত দেয়নি। স্থানীয় সাংবাদিকরাও এ ব্যাপারে নীরব। এরপর রয়েছে শিক্ষকদের কোচিং ব্যবসা, যার মাধ্যমে চলে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে চরম দুর্নীতির খেলা। শিক্ষার এই পরিবেশে আমাদের ছেলেমেয়েরা কিভাবে জ্ঞান অর্জন করে দেশের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে? শিক্ষাব্যবস্থায় দুর্নীতি ও অব্যবস্থায় দূর করতে না পারলে দেশের ভবিষ্যত বলতে কিছুই থাকবে না। দলমত নির্বিশেষে সকলকেই এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। বিপ্লব ফরিদপুর। চাকরির সন্ধানে বাবা-মায়ের কত স্বপ্ন সন্তান পড়ালেখা শেষ করেছে, এই বুঝি দুঃখ ঘুচে যাচ্ছে। থাকবে না আর দারিদ্র্য, পড়তে হবে না পুরনো কাপড়, বয়স বেড়ে যাওয়া মেয়েটির বিয়ে অতি দ্রুত সম্পাদন করা সম্ভব হবে। এরকম কত আশাই না করেন বাবা-মা। কিন্তু এই স্বপ্নের কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারছে এ দেশের ছাত্রসমাজ। পড়ালেখা শেষ তবুও চাকরির দেখা নেই। চাকরির দেখা মিলবে কী করে? কোন সার্কুলার নেই। মাঝে মধ্যে যখন দুই-একটা সার্কুলার আসে তাও আবার কোটাধারীদের জন্য। আবেদন করার সুযোগটুকু নেই। কোটার জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে যাচ্ছে চাকরি প্রত্যাশীরা। কত বৈষম্য এই স্বাধীন দেশে। মনের মাঝে বিরাজ করছে ক্ষোভ। কেউই প্রকাশ করছে পারছে না। অথচ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার জন্য। তিনি ভেবেছিলেন আমাদের পরিচয় হবে একটাই আমরা বাঙালী। অথচ আজ আমরা বিভক্ত হয়ে পড়ছি চাকরির ক্ষেত্রে। হতাশ হয়ে পড়ছে এ দেশের ছাত্রসমাজ। জড়িয়ে পড়ছে মাদকাসক্তিতে, বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ে। মানুষের মনের অবস্থা কেউ জানতে চায় না কিংবা জানার চেষ্টাও করে না। সবাই স্বার্থ উদ্ধারে মরিয়া হয়ে পড়ছে। ছাত্রদের ভবিষ্যত হয়ে পড়ছে অন্ধকারাচ্ছন্নময়। কোথায় যাবে তারা, কার কাছে বলবে মনের আকুল আবেদন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটকে ব্যাপকভাবে সমর্থন দিয়েছিল তরুণ প্রজন্ম। গরিব-দুঃখী মানষের একমাত্র আশ্রয়স্থল ছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা। আমাদের স্বপ্ন ছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা ক্ষমতায় এলে দুর্নীতি থাকবে না, কোন কোটা থাকবে না, হাওয়া ভবন থাকবে না। কিন্তু রক্ষণশীল কোটা ব্যবস্থা থাকার কারণে আমাদের স্বপ্ন আজ চুরমার হয়ে যাচ্ছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে চাই, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা স্বপ্ন দেখি চাকরিতে সকলের সমান সুযোগ হবে, বাবা-মার মুখে হাসি ফুটবে, ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে। আবু সানিফ ঢাকা ঝযধহরভংৎি০৭@মসষ.পড়স জন্মদুঃখী বস্তিবাসী গ্রামে কর্মসংস্থানের তেমন সুযোগ না থাকায় গ্রাম থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ রাজধানীমুখী হচ্ছে। তার ওপর ফি-বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, বন্যা আর নদী ভাঙ্গনে ফসল, ঘরবাড়ি ও জীবিকার উপায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এসব কারণে স্বাধীনতার চার দশক পর সারাদেশে যেখানে লোকসংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ, সেখানে ঢাকার লোকসংখ্যা বেড়েছে কমপক্ষে ১০ গুণ। তাই স্বল্প আয়তনে অধিক জনসংখ্যার শহর হিসেবে ঢাকা ইতোমধ্যে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে। ঢাকার জনসংখ্যা বর্তমানে প্রায় ২ কোটির কাছাকাছি। এর প্রায় ৪০ লাখ বসবাস করে ৪৭২০টি বস্তিতে। এদের বেশির ভাগই আবার নিরুপায় হয়ে কাজের খোঁজে ঢাকায় এসেছে। স্বল্প মজুরিতে কাজ করতে হয় বলে ভাল আবাসন জোটেনি তাদের। জন্ম থেকেই অবহেলিত বস্তিবাসীরা। বস্তিতে শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ ন্যূনতম জীবনমানও নেই। বিপুলসংখ্যক বস্তিবাসীদের এড়িয়ে সরকারী-বেসরকারী কর্মসূচীর সার্বিক উন্নয়ন অসম্ভব। কয়েক কোটি দরিদ্র মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা পেট্রোলবোমার চেয়েও ভয়ঙ্কর, যা যেকোন সময় বিস্ফোরিত হতে পারে। এনিয়ে গবেষণা, আলাপ-আলোচনা হয় যত, কাজ শুরুই হয় না তত। কিন্তু কথা হচ্ছে, কেন কাজ হচ্ছে না। বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে, অর্থায়ন হচ্ছে, শুধু প্রকল্পের বাস্তবায়ন হচ্ছে না। কারা লুটেপুটে খাচ্ছে বস্তিবাসীদের টাকা এর জবাব সংশ্লিষ্টদেরই দিতে হবে। আবুল খায়ের ভুঁইয়া রামপুরা, ঢাকা। ইছামতি নদী ইছামতি নদী দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি নদী। একসময় এই নদীটি ছিল নবাবগঞ্জবাসীর শহরে যাওয়া-আসার একমাত্র নৌপথ। তখন নবাবগঞ্জবাসীর গাড়িতে চড়ে শহরে যাওয়া-আসার কোন স্থলপথ ছিল না। আমার কিশোরবেলা কেটেছে ইছামতি নদীতে ভেসে ভেসেই শহরে যাওয়া-আসায়। শুধু তাই নয়; কলেজ জীবনে আমি দোহার নবাবগঞ্জ কলেজেও যাওয়া-আসা করতাম ইছামতি নদীতে ভেসে ভেসে। তবে আমি কলেজে ও শহরে যাওয়া-আসার জন্য স্থলপথও পেয়েছি। সময়ের আবর্তনে ইছামতি নদী আর আগের মতো বর্ষাকাল ব্যতীত নদীতে ভেসে ভেসে যাতায়াত করার উপায় নেই। কারণ বর্তমানে নদীটি মৃতপ্রায়। নদীটিকে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন। এখন সুচিকিৎসা পেলে নদীটি প্রাণে বেঁচে যাবে। তাই নদীটি খনন করা জরুরী। আসলে দেশের স্থলপথের পাশাপাশি প্রতিটি নৌপথও সচল রাখা প্রয়োজন। তাই ইছামতি নদীকে বাঁচানোর জন্য, নৌপথ সচল রাখার আহবান জানাই দেশ ও মহাবিশ্বের সব মানুষের কল্যাণে। দিপু প্রামাণিক নবাবগঞ্জ।
×