ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কুমিল্লায় ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে সংঘর্ষ ॥ গুলিবিদ্ধসহ আহত ১৬

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১২ এপ্রিল ২০১৫

কুমিল্লায় ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে সংঘর্ষ ॥ গুলিবিদ্ধসহ  আহত ১৬

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা, ১১ এপ্রিল ॥ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কর্মী সম্মেলন শেষে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টাধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ৫ জনসহ কমপক্ষে ১৬ জন আহত হয়েছে। শনিবার বিকালে নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ৪৫ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৫ রাউন্ড গ্যাসগান ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কর্মী সম্মেলন উপলক্ষে গতকাল শনিবার কুমিল্লায় আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি এএইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমসহ নেতৃবৃন্দ। বিকালে কুমিল্লা টাউন হল মিলনায়তনে সম্মেলন শেষ করে বিকাল ৫টার দিকে তারা ঢাকার উদ্দেশে সম্মেলনস্থল ছেড়ে যান। এ সময় দলীয় পদ-পদবীকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের স্থানীয় এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন সমর্থিত গ্রুপ ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এ্যাড. আফজল খান গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে টাউন হল মাঠ ও কান্দিরপাড় এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয়গ্রুপে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় কান্দিরপাড় ও আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। নগরীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। এ্যাড. আফজল খান সমর্থিত প্রত্যক্ষদর্শী নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, পুলিশের দুই এসআই সালাউদ্দিন ও সামছুদ্দিন এ সময় কান্দিরপাড়ের রেলপথমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কার্যালয় লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে জেলা পরিষদের প্রশাসক আলহাজ ওমর ফারুকসহ ওই কার্যালয়ে অবস্থানরত নেতা-কর্মীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ সময় রেলমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ও আশপাশের দোকানপাটে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ভাংচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অর্ধশতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও গ্যাসগান ছুড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন শহর ছাত্রলীগের সভাপতি ও নগরীর গোবিন্দপুর এলাকার এম সাইফুল ইসলাম, শাসনগাছা এলাকার ফয়েজ, ছাত্রলীগ নেতা গোলাম সারোয়ার কাউসার, শুভপুর এলাকার যুবলীগের ইউসুফ, জিলা স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান এবং ককটেলের আঘাতে আহত হন শুভপুর এলাকার যুবলীগের পারভেজ। এছাড়া কামাল, মামুন, কবির উদ্দিন মিন্টুসহ উভয়গ্রুপের ছাত্রলীগ-যুবলীগের আরও ১১ জন আহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত সাইফুল ইসলামের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। তাকে নগরীর ঝাউতলা এলাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপর আহতদের কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ, সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মোঃ খোরশেদ আলম জানান, ৪৫ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৫ রাউন্ড গ্যাসগান ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে নগরীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এদিকে সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নগরীর কান্দিরপাড় ও আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
×