ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানের সংগ্রহে তরুণ সাদ

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২০ এপ্রিল ২০১৫

পাকিস্তানের সংগ্রহে তরুণ সাদ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শুরুটা কিন্তু বেশ ভালভাবেই দেখেশুনে শুরু করেছিল পাকিস্তান দল। কিন্তু রুবেল হোসেন আক্রমণে আসার পর থেকেই চিত্র পাল্টে যেতে থাকল। প্রথম ব্রেক থ্রু রুবেল এনে দেয়ার পর পাক ব্যাটিং লাইনআপে হামলে পড়লের বাংলাদেশের স্পিনাররা। ফলশ্রুতিতে দলীয় মাত্র ৭৭ রানেই উপরের সাড়ির ৫ ব্যাটসম্যানের ঠাঁই হলো সাজঘরে। চরম বিপর্যয়ে পড়ে পাক শিবির শঙ্কায় ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহে গুটিয়ে যাওয়ার। কিন্তু বিপদ থেকে বাঁচালেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা তরুণ অলরাউন্ডার সাদ নাসিম। ষষ্ঠ উইকেটে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে হারিস সোহেলের সঙ্গে জুটি বেঁধে যোগ করলেন ৭৭ রান। প্রথমে দলকে বাঁচালেন, এরপর সপ্তম উইকেটে ওয়াহাব রিয়াজের সঙ্গে দ্রুতগতির ৮৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে পৌঁছে দিলেন সম্মানজনক সংগ্রহে। ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক আদায় করে সাদ অপরাজিত থাকেন ৯৬ বলে ৭৭ রানে। তার দারুণ ব্যাটিংয়ের কারণেই মান বাঁচিয়ে সম্মানজনক একটি সংগ্রহ দাঁড় করাতে সক্ষম হয় সফরকারী পাকিস্তান। সিরিজ হার ঠেকাতে হলে জয়ের বিকল্প নেই। কিন্তু সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে দিশেহারা হয়ে গেল পাক শিবির। রান দেয়ার ক্ষেত্রে যেমন কৃপণ ছিলেন বাংলাদেশী বোলাররা তেমনি অচিরেই তারা একের পর এক উইকেট শিকার করে পাক শিবিরকে কোণঠাসা করে ফেলেছিলেন। তবে সেখানেই দেয়াল হয়ে দাঁড়ালেন হারিস ও সাদ। হারিস বেশকিছু ওয়ানডে খেলে আন্তর্জাতিক ম্যাচে ইতোমধ্যেই নিজের যোগ্যতা ও সামর্থ্য প্রমাণ করে ফেলেছেন। কিন্তু ২৪ বছর বয়সী সাদের গত শুক্রবার চলতি সফরে প্রথম ওয়ানডেতেই অভিষেক হয়েছে। সে ম্যাচে ব্যাটে-বলে একেবারেই ব্যর্থ ছিলেন। ৪ বল মোকাবেলা করে কোন রান না করেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেছিলেন। কিন্তু এদিন দারুণ ধৈর্যের পরিচয় দিলেন তিনি। দলের প্রয়োজনের সময় খেললেন দারুণ কার্যকর একটি ইনিংস। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও এর আগে তিন টি২০ খেলার অভিজ্ঞতা থাকা সাদ নিজেকে উজ্জ্বলভাবেই মেলে ধরলেন। প্রথমে ঘোষিত ওয়ানডে দলেই ঠাঁই পাননি সাদ। কিন্তু পরবর্তীতে মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান শোয়েব মাকসুদের পরিবর্তে দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই পেয়ে গেলেন অর্ধশতক। শুরুতে কিন্তু ৭ ওভারেই বিনা উইকেটে ৩৬ রান তুলে ফেলেছিল পাকিস্তান দল। তবে রুবেল এসেই ভাঙ্গনের সৃষ্টি করলেন। ফিরিয়ে দিলেন সরফরাজ আহমেদকে। এরপর টানা আরও ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকরা ৪১ রানের মধ্যে। কিন্তু উইকেটে এসে দেখেশুনে বেশ সাবলীল ভঙ্গিমায় ব্যাট চালিয়ে ৭০ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক আদায় করেন সাদ। ততক্ষণে বিপদ থেকে দলকে বাঁচিয়েছেন হারিসের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৭৭ রানের জুটি গড়ে। হারিস বিদায় নেয়ার পর মূলত পেসার ওয়াহাবের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে দলকে মজবুত অবস্থানে নিয়ে যেতে আরও ৮৫ রান যোগ করলেন তিনি দ্রুতগতিতে। সে জন্য ৬৬ বল খরচা করেছেন তারা। সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে কামরান আকমল ও মোহাম্মদ ইউসুফ ৫৩ রানের জুটি গড়েছিলেন ২০০৩ সালে ফয়সালাবাদে। সাদ ৯৬ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৭৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতক উপহার দেয়া ওয়াহাব ৪০ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৫১ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
×