ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পিডিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী

নতুন এডিপি হবে ১ লাখ কোটি টাকার

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ২১ এপ্রিল ২০১৫

নতুন এডিপি হবে ১ লাখ  কোটি টাকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার হবে এক লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে মেগা প্রকল্পগুলোতে বরাদ্দ দেয়া হবে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছর শেষে এসব মেগা প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান হবে। মন্ত্রী সেমাবার পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্ত ১০টি ও ব্যয় বিবেচনায় সর্বনিম্ন অগ্রগতি সম্পন্ন ১০টি মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিং এ এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, আইএমইডির সচিব শহীদুল্লা খন্দকার, পরিকল্পনা সচিব সফিকুল আযম এবং ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান প্রমুখ। ব্রিফিং এ পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এ বছর প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বাস্তবায়ন কার্যক্রম দেখে আগামী বছরের বরাদ্দ দেয়া হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) জনবল বৃদ্ধিসহ সক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সচিবদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আইএমইডির কর্মকর্তার সংখ্যা ৭৮ থেকে ১২০ এ উন্নীত করার কাজ চলছে। এ বছর প্রকল্প বাস্তবায়ন হার কেমন হবে এ বিষয়ে তিনি বলেন, সভায় সচিবরা জানিয়েছেন তাদের স্ব স্ব মন্ত্রণালয় সংশোধিত এডিপি অনুযায়ী শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পারবে। আগামী বছরে বিভিন্ন নতুন প্রকল্প নিয়েও পরিকল্পনামন্ত্রী কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ঢাকা শহরসহ বড় বড় শহরের নামীদামী স্কুলগুলোতে ভর্তি সঙ্কট প্রকট। এজন্য সরকার এসব স্কুলগুলোর ভবনকে ১৫ থেকে ২০ তলা পর্যন্ত উর্ধমুখী সম্প্রসারণ করা হবে। সরকার আশা করা হচ্ছে, এতে করে দুই লাখ ছাত্র-ছাত্রী নতুনভাবে ভর্তির সুযোগ পাবে। গ্রামের স্কুলগুলোও তিন থেকে চার তলা করা হবে বলেও তিনি জানান। মন্ত্রী আরও বলেন, পরীক্ষার জন্য কোন স্কুল বন্ধ থাকবে না। পরীক্ষা নেয়ার জন্য স্কুল খোলা রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হবে। দেশে বিদ্যমান মহাসড়কগুলোর কাছে বিক্ষিপ্তভাবে গড়ে উঠা গ্রামীণ হাটবাজার নিয়েও কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকারী উদ্যোগে প্রকল্পের আওতায় মহাসড়কের পাশে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে হাটবাজার করে দেয়া হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, আগামীতে সংসদ সদস্যদের অগ্রাধিকার দিয়ে একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় একজন সংসদ সদস্য পাঁচ বছরে মোট ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাবে। তবে তিনি সরাসরি একটি টাকাও ব্যয় করতে পারবেন না। তিনি তাঁর চাহিদা এলজিইডিকে জানাবেন। এলজিইডি প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করবে। সব এলাকার জন্য এই বরাদ্দ সমান হবে। এখন থেকে একজন প্রকল্প পরিচালককে (পিডি) একটি প্রকল্পের দায়িত্ব দেয়া হবে। তবে যেসব প্রকল্প দেশব্যাপী বাস্তবায়িত হয়, যেমন একটি বাড়ি একটি খামার সেখানে একজন এনপিডি (জাতীয় প্রজেক্ট ডাইরেক্টর) নিয়োগ দেয়া হবে। তাঁর অধীনে ৭ জন ডেপুটি থাকবেন। সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছর সবচেয়ে বেশি এডিপি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল স্থানীয় সরকার বিভাগে। ১৩ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে বিভাগটি নয় মাসে ব্যয় করতে পেরেছে ৭ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এ বিভাগটি ৬০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে পারায় জাতীয় পর্যায়ে এডিপি বাস্তবায়ন ৪৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বেশি বরাদ্দ পাওয়া অন্যান্য বিভাগে বিরাজ করছে হতাশা। অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, ৩ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে শীর্ষ দশে রয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। ৮৯ প্রকল্পের অনুকূলে মন্ত্রণালয়টি ব্যয় করতে পেরেছে মাত্র ১ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। মাত্র ৩০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে পেরেছে মন্ত্রণালয়টি। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নয় মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ৩২ শতাংশ। ৫৬ প্রকল্পের বিপরীতে মূল এডিপিতে বিভাগের বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে মাত্র ১ হাজার ২৭৯ কোটি টাকা।
×