ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাবাস বাংলাদেশ!

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ২১ এপ্রিল ২০১৫

সাবাস বাংলাদেশ!

সফরকারী পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে ধরাশায়ী করে সিরিজ জিতে স্বাগতিক বাংলাদেশ ক্রিকেটবিশ্বকে চিনিয়ে দিল তাদের শক্তিমত্তা। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই অর্জিত হলো এই অসাধারণ বিজয়। টাইগারদের অভিনন্দন। আবেগ-উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়ে দেশের সকল ক্রিকেটপ্রেমীরই হৃদয়ে ধ্বনিত হচ্ছে-সাবাস বাংলাদেশ! ফিল্ডিং-বোলিং-ব্যাটিং- প্রত্যেকটি অঙ্গনে বাংলাদেশ দল এবার ক্রিকেটীয় বুদ্ধি ও ক্ষমতার পরিচয় রেখেছে। গত শুক্রবার প্রথম ম্যাচটিতেই কুপোকাত হয়েছিল পাকিস্তান দল। খেলা দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল যেন বাঘের সামনে কাঁপছে হরিণ! সত্যিই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলশালী বাঘের আত্মবিশ্বাসেই যেন ওদের ওপর চড়াও হয়েছিল বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা। ওদের ছোড়া বলের দাপুটে জবাব দিয়েছে তামিম-মুশফিকরা; আর ক্রিকেটের তরুণতুর্কি তাসকিন-আরাফাতের ছোড়া বলগুলো যেন একেকটি অগ্নিগোলক। একের পর এক পাকিস্তানী ব্যাটসম্যান তাতে পরাস্ত হয়েছে। পর পর দুটি ম্যাচ দেখে দর্শকরা বুঝে গেছেন বিশ্বকাপে সাফল্যের নতুন উচ্চতায় ওঠা বাংলাদেশ দল বদলে গেছে বিপুলভাবে। সর্ববিচারেই উন্নতি ঘটেছে টিমের। সিরিজ জয়ের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। রবিবার খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিতে প্রধানমন্ত্রী গ্যালারিতে উপস্থিত থেকেছেন। খেলাশেষে জাতীয় পতাকা নাড়িয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আনন্দ প্রকাশ করেন তিনি। উল্লেখ্য, বর্তমান সরকার দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার প্রকাশ ঘটিয়ে চলেছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম জয়টিতে ওয়ান ডে ম্যাচে তিন তিনটি ব্যাটিং মাইলফলক স্পর্শ করে বাংলাদেশ। এগুলো হলো একই খেলায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান, যে কোন উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি এবং এক ইনিংসে প্রথম দুই সেঞ্চুরি। অবশ্য ২০ ওভারে ৬৭ রান তুলতে দুই উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দল বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল। এ সময় মুশফিকুর রহিম ব্যাট হাতে নেমে তামিমের হাতকে শক্তিশালী করে তোলেন। রানের গতি বাড়তে থাকে। এই জুটির সেঞ্চুরির সুবাদেই বাংলাদেশ দল নিশ্চিত জয়ের দিকে অগ্রসর হয়। দুর্দান্ত পারফরমেন্সের মধ্য দিয়ে তামিম ইকবাল পরপর দু ম্যাচে টানা সেঞ্চুরি করলেন। সিরিজ জয় এনে দেয়া ম্যাচটিতে তিনিই জয়ের নায়ক। তাঁর ব্যাটে তোলা ঝড় থামাতে পারেনি পাকিস্তানী বোলাররা; শেষ পর্যন্ত তিনি ছিলেন অপরাজিত। তাঁর শিল্পিত ব্যাটিং নিয়ে ক্রীড়া প্রতিবেদকদের এখন যেন কাব্য করার সুযোগ। ‘উদ্ধত সুন্দর’, ‘শাণিত উজ্জ্বলতা’ এমন শব্দবন্ধ ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সীমিত ওভারের ম্যাচে প্রথম সিরিজ জয় করে বাংলাদেশ। এরপর ২০১৪ সাল পর্যন্ত এক দশকে দেশের ক্রিকেট দল ওয়ান ডে ম্যাচে আরও ১৫ বার সিরিজ জয় করেছে। এর ভেতর নয়বারই প্রতিপক্ষকে সোনার ছেলেরা হোয়াইট ওয়াশ করেছে। চলতি বছর প্রথমবারের মতো সিরিজ জয় করার পর তাদের সামনে আরেকটি বাংলা ওয়াশের হাতছানি। ১৬ বছর যে দলকে হারানো যায়নি, তাদের তিন দিনের মাথায় দুবার হারিয়ে সিরিজ জিতে নেয়া সামান্য কথা নয়। প্রবল পরাক্রমশালী পাকিস্তানকে বিড়াল বানিয়ে সিরিজ জিতে এমনিতেই ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। এখন দেশবাসীর প্রত্যাশা, বাংলা ওয়াশের সুবর্ণ সুযোগটি যেন হাতছাড়া না করে টাইগাররা।
×