ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তিন সিটিতেই আওয়ামী প্রার্থীর প্রতি তরিকতের সমর্থন ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২১ এপ্রিল ২০১৫

তিন সিটিতেই আওয়ামী  প্রার্থীর প্রতি তরিকতের সমর্থন ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল সমর্থিত তিন প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন প্রচারাভিযানের জন্য ‘তরিকত নাগরিক ঐক্য’ নামে একটি কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মদিনা সনদের আলোকে প্রতিষ্ঠিত দেশের তরিকতপন্থী সুন্নিদের বৃহৎ এ জোট। ১৪ দলের শরিক এ তরিকত নেতৃবৃন্দ বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছেন, খালেদা জিয়া গাড়িবহর নিয়ে, পুলিশী পাহারায় অস্ত্র নিয়ে তাঁর নিজস্ব বাহিনী নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছে। যা নির্বাচনী আচরণবিধি স্পষ্টতই লঙ্ঘন করছে। তাই দ্রুত নির্বাচন কমিশনকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তরিকত নেতারা খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে আরও বলেছেন, তিনি কোন মুখে ভোট চাইতে নেমেছেন। তার হাতে এখনও পোড়া মানুষের গন্ধ, মুখে এখনও সশব্দে উচ্চারিত হচ্ছে নাশকতার বুলি। তার নেতারা এখনও নাশকতা মামলার আসামি। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের জন্য ১১০ সদস্যের কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়। এতে ঢাকার দুই সিটির আহ্বায়ক করা হয়েছেন তরিকতের মহাসচিব লায়ন এম এ আউয়াল এমপিকে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জন্য দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক তৈয়বুল বশর মাইজভা-ারীকে আহ্বায়ক ঘোষণা করা হয়। দুই কমিটিতে সদস্য রয়েছেন ১০১ জন। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ সৈয়দ নজিবুল বসর মাইজভা-ারি এমপি, মহাসচিব লায়ন এম এ আউয়াল এমপি। উপস্থিত ছিলেন তরিকতের প্রেসিডিয়ামের সদস্য সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, শাহ মিরান আল কাদেরী, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ডাঃ সৈয়দ আবু দাউদ মসনভী হায়দার, সৈয়দ মুতাওয়াক্কিল বিল্লাহ, জাহাঙ্গীর হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আলী ফারুকী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ সৈয়দ সৈয়দ তৈয়্যবুল বসর মাইজভা-ারী, দফতর সম্পাদক সেলিম মিয়াজী প্রমুখ। সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভা-ারী বলেন, বিএনপির সমর্থকরা বাস জ্বালাও পোড়াও করে তাই তাদের প্রার্থীর একজনের প্রতীক হচ্ছে বাস। আরেকজন পেট্রোল ঢালার প্রতীক হিসেবে পেয়েছে মগ। আর জ্বালাও পোড়াও শেষে বিএনপির নেত্রী তার কর্মীদের কমলার জুস খাওয়াবেন, তাই চট্টগ্রামে তাদের নির্বাচনের প্রতীক হচ্ছে কমলা লেবু। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা আসন্ন সিটি নির্বাচনে যে প্রতীক পেয়েছেন তা আল্লাহর তরফ থেকেই। তাদের অপকর্ম অনুযায়ী তারা এই প্রতীক পেয়েছে। নজিবুল বশর মাইজভা-ারী অভিযোগ করে বলেন, প্রথমে প্রয়োজন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। কারণ খালেদা জিয়া তার গাড়িবহর নিয়ে, পুলিশী প্রহরায় এবং অস্ত্র নিয়ে তার নিজস্ব বাহিনী নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছে। যা নির্বাচনী আচরণবিধি স্পষ্টতই লঙ্ঘন করছে। তাই দ্রুতই নির্বাচন কমিশনার এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন আশা করি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতায় প্রায় এক শ’ লোক প্রাণ হারিয়েছে। কিন্তু তখন সেনাবাহিনী নামানোর কোন প্রয়োজন হয়নি। তাই এখন এমন কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি যে নির্বাচনে সেনাবাহিনী লাগবে। তিনি (খালেদা) এত মানুষকে হত্যা করার পরও কিভাবে এখন ভোট চাইতে রাস্তায় নামেন। তাঁর ভোট চাওয়ার আগেই দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। তরিকত চেয়ারম্যান বলেন, খালেদার প্রার্থীকে সমর্থন দেয়া হলো প্রকৃতপক্ষে পেট্রোলবোমা ও জ্বালাও পোড়াওকেই সমর্থন দেয়া হবে। তাই সবাইকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সঙ্গে থাকার আহ্বান জানান তিনি। মহাসচিব লায়ন এম এ আউয়াল এমপি খালেদা জিয়ার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, তিনি কোন্ মুখে ভোট চাইতে নেমেছেন। তাঁর হাতে এখনও পোড়া মানুষের গন্ধ, মুখে এখনও স্বশব্দে উচ্চারিত হচ্ছে নাশকতার বুলি। তার নেতারা এখনও নাশকতার মামলার আসামি। তিন মাস কেন তিনি মানুষ মেরেছেন, অর্থনীতির ক্ষতি করেছেন। মায়ের বুক খালি করেছেন। স্ত্রীকে বিধবা করেছেন। সন্তানেরা তার কাছে কী দোষ করেছিল। তিন মাসের আন্দোলন হঠাৎ করে বন্ধ করে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এখনও তিনি কোন্ যুক্তিতে মাঠে নেমেছেন? এই উত্তর বাংলাদেশের মানুষ জানতে চায়। তরিকত মহসচিব আরও বলেন, যে কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য নির্বাচন একটি স্বতঃস্ফূর্ত পদ্ধতি। এই গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সরকারের সময়ে নতুন মাত্রা পেয়েছে। এর আগেও সারাদেশে বাকি সিটিগুলো ও উপজেলা নির্বাচনে এই সরকার প্রমাণ করেছে, তাদের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অবাধভাবে অনুষ্ঠিত হয়। আগামী নির্বাচনও সুষ্ঠু ও অবাধ হবে।
×