ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আমরা দায়িত্ব সচেতন ॥ আরাফাত সানি

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২১ এপ্রিল ২০১৫

আমরা দায়িত্ব সচেতন ॥ আরাফাত সানি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপে দারুণ নৈপুণ্য দেখানোর পর বাংলাদেশ দলের চেহারাটাই পাল্টে গেছে। দলের ক্রিকেটাররা এখন আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছেন। সিরিজ শুরুর আগেই ক্রিকেটাররা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেছেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে আনবে বাংলাদেশ। সেই বিশ্বাসটাকে কার্যকর হিসেবে প্রমাণ করতে পেরেছে টাইগাররা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়টা মাঠে বসে থেকেই অবলোকন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের সরকার প্রধানের উপস্থিতি দলের জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা বলে জানালেন বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি। তিনি মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি এবং অভিনন্দন ভবিষ্যতে দলের উন্নতির ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জয়। অথচ এই পাকদের বিরুদ্ধেই গত ১৬ বছর জিততে পারেনি বাংলাদেশ দল। সেই পাকিস্তানকে পরপর দুই ওয়ানডেতে মাথা তুলেই দাঁড়াতে দেয়নি টাইগাররা। কিন্তু এটা নিয়ে আশ্চর্য হওয়ার কিছু দেখছেন না বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি। তিনি বলেন, ‘এত বড় ব্যবধানে জিততে পারব কিনা তা নিয়ে আমরা চিন্তা করিনি। আমরা কেবল যার যার দায়িত্ব নিয়ে সচেতন ছিলাম। পাকিস্তানকে হারাতে পারায় আমরা বিস্মিত হইনি। আমাদের বিশ্বাস ছিল যে ভাল ক্রিকেট খেললে ওদের হারাতে পারব।’ বাংলাদেশের মানুষের ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ। ক্রিকেট নিয়ে অনেক আবেগীও। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সবসময় খেলার প্রতি অনুরাগী। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয়টা তিনি দেখেছেন মাঠে উপস্থিত থেকেই। ক্রিকেটাররা আরও অনুপ্রাণিত হয়েছেন দেশের সরকার প্রধানের মাঠে উপস্থিতির কারণে। এ বিষয়ে আরাফাত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অনেক ব্যস্ত থাকেন। তারপরও তিনি যে খেলা দেখতে আসেন, এটা খুব ভাল লাগে। গতকাল ম্যাচ জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। ভবিষ্যত ক্রিকেটারদের জন্য এটি দারুণ অনুপ্রেরণার হবে।’ গত বছরটা বেশ কিছু ম্যাচে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও জয় পাওয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে আরাফাত বলেন, ‘২০১৪ সালে আমরা ভাল ক্রিকেট খেলেছি, যদিও জিততে পারিনি। আপনারা ম্যাচগুলো দেখলে বুঝবেন আমরা ভাল ক্রিকেট খেলেছি। আমরা খুব কাছে গিয়ে হেরেছি। বড় ও ছোট দলের মধ্যে পার্থক্য হলো অভিজ্ঞতা। সেখানেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি।’ আরাফাত কোনভাবেই মনে করেন না পাকিস্তান দল বাংলাদেশের চেয়ে দুর্বলতর। তবে বাংলাদেশ দলে বেশ কয়েক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছে এবং সে তুলনায় ওরা একটু অনভিজ্ঞ বলে দাবি তার। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দুই তিনটা সিরিজ খেললে ওরাও গুছিয়ে নিতে পারবে। তামিম-মুশফিক অসাধারণ ব্যাটিং করছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে যেমন ব্যাটিং প্রয়োজন, সেটাই ওরা দুজন করছে।’ ঘরোয়া ক্রিকেটে ১০ বছর ধরে খেলছেন আরাফাত। এক বছর আগেও চিন্তা করেননি বিশ্বকাপ খেলবেন। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপেও খেলেছেন এবং এখন নিয়মিত সদস্য হয়ে গেছেন বাংলাদেশ দলের। নিজের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলে থাকতেই হবে বা ভাল খেলতেই হবে, আমি এভাবে ভাবি না। এটা আমার কাছে অতিরিক্ত চাপের বিষয়। পারফর্ম করতে পারলে আমি দলে থাকবই। ওয়ানডে ক্রিকেট অনেক কঠিন হয়ে গেছে। পাঁচ ফিল্ডার বৃত্তের ভেতরে রেখে বোলিং করতে হয়। সেটার জন্য একটু আলাদা পরিকল্পনা করতে হয়। গতিতে বৈচিত্র্য আনতে হয়। সেটাই এখন চেষ্টা করছি।’ আগে ভাগে সিরিজ জিতলেও খুব বেশি উদযাপন করতে দেখা যায়নি বাংলাদেশ দলকে। এছাড়া হোয়াইটওয়াশ নিয়েও চিন্তা করছে না দল। এ বিষয়ে আরাফাত বলেন, ‘অল্পতেই খুশি হলে বিপদ। এটাই শেষ সিরিজ নয় সামনে আমাদের আরও সিরিজ আছে। এখন আমরা যত জিতব, আত্মবিশ্বাস তত বাড়বে। একই সঙ্গে আমাদের অনুপ্রেরণা বাড়াবে। আমরা অন্য সময়ের মতো ড্রেসিংরুমে দলীয় সঙ্গীতটা গাই। সবাই একসঙ্গে ওই সময়টা দারুণ লাগে। হোয়াইটওয়াশ নিয়ে ভাবছি না। আমরা ভাল ক্রিকেট খেলতে চাই। ভাল ক্রিকেট খেলে হারলে মন খারাপের কিছু থাকবে না।’
×