ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যৌথ বাহিনীর অভিযান

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২২ এপ্রিল ২০১৫

যৌথ বাহিনীর অভিযান

তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা জোরদারে যৌথ বাহিনীর অভিযান গতিশীল হওয়াই বাঞ্ছিত। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের বোমা কারখানা আবিষ্কার এবং জামিনে ছাড়া পাওয়া দুর্বৃত্তদের নজরে রাখার কাজটিতে শ্লথগতি পরিস্থিতিকে অস্বাভাবিক করে তুলতে পারে। অতীতের সব কটি নির্বাচনের আগে যৌথ বাহিনীর অভিযান অনেক আগে থেকেই পরিচালিত হয়ে আসত। অবশ্য এখনকার পরিস্থিতি নাজুক। এমনিতেই গত তিন মাস এবং তারও আগে জঙ্গী ও সন্ত্রাসীরা বিএনপি-জামায়াত জোটের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে দেশব্যাপী নাশকতা অব্যাহত রাখে। জনগণের বিরুদ্ধে একতরফা যুদ্ধ ঘোষণা করে সাধারণ মানুষসহ পুলিশ হত্যা করে। সহজলভ্য পেট্রোলবোমার ব্যবহার ব্যাপকতর করে। যৌথ বাহিনী ঢাকা ও চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ বোমা তৈরির কয়েকটি কারখানা আবিষ্কার করেছে। অনেকে ধরা পড়েছে। আবার কেউ কেউ জামিনে ছাড়া পেয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে এদের শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে। এই জঙ্গীরা ২০ দলের ডাকা অবরোধ-হরতালে তাদের ছত্রছায়ায় নাশকতা চালিয়ে বহু মানুষকে হত্যা করেছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে তিন সিটি এলাকায় আপাত বোমাবাজি বন্ধ রাখলেও দেশের অন্যত্র এখনও তাদের তৎপরতা রয়েছে। নাশকতা যে বন্ধ হয়েছে, তা নয়। এটি সাময়িক বিরতি মনে হতে পারে। কিন্তু যে কোন সময় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার সম্ভাবনা নেই বলা যাবে না। যৌথ বাহিনী অবশ্য দাবি করছে নাশকতা নির্মূলের বিষয়টিকে তারা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি হতে দেশব্যাপী শুরু করেছে তাদের অভিযান। বিভিন্ন স্থানে তালিকা ধরে গ্রেফতারও করা হচ্ছে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও বোমাবাজদের। যারা পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করেছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে সোপর্দ না করা পর্যন্ত তাদের অভিযান চলবে। এরপরও তারা মাঠে থাকবে। এটাই কাম্য দেশবাসীর। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিস্থিতি বদলালেও জঙ্গীরা থেমে নেই। তারা কৌশল পাল্টায়। সুতরাং সে সব মোকাবেলা করার কাজটিও করা বাঞ্ছনীয়। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বশেষ বৈঠকে অভিযান অব্যাহত রাখার ওপর জোর দিয়ে বলা হয়েছে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী মাস্তানদের খুঁজে বের করে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে, যাতে এরা সুষ্ঠু নির্বাচনে কোন প্রভাব ফেলতে না পারে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না ঘটে সে কারণে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলা হয়েছে। নির্বাচনে সন্ত্রাসী মাস্তানদের ব্যবহার অতীতে দেখা গেছে। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধাদানও করা হয়েছে অতীতে। এবারের নির্বাচন অতীতের মতো নয়। কারণ নাশকতাকারীদের অবস্থান, তাদের চোরাগোপ্তা তৎপরতার পাশাপাশি যৌথ বাহিনীকে আগাম প্রস্তুত রাখাই হবে সঙ্গত। সহিংসতা, হানাহানির পরিবর্তে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারাটাই জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদের বিনাশের পক্ষে আরেক ধাপ অগ্রগতি। যৌথ বাহিনী তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পিছপা হবে না এমন আশা সবার।
×