ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গজারিয়ায় বিদেশী কোম্পানির যন্ত্রপাতি আটকে রেখেছে প্রভাবশালী

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২২ এপ্রিল ২০১৫

গজারিয়ায় বিদেশী কোম্পানির যন্ত্রপাতি আটকে রেখেছে প্রভাবশালী

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ গজারিয়ায় এক প্রভাবশালী আটকে রেখেছে বিদেশী কোম্পানির মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও মালামাল। তুরস্কের এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ফেরনাস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি’ বাখরাবাদ-সিদ্ধিরগঞ্জ উচ্চ চাপসম্পন্ন গ্যাস সঞ্চালন পাইপ স্থাপনের কাজ শেষে তাদের মালামাল ফের নিতে গিয়েই বিপাকে পড়েছে। এই বিষয়ে কোম্পানিটি গজারিয়া থানায় মেঘনা মাল্টিপারপাস কোল্ড স্টোরেজের মালিক মেজর (অব) জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেছে। এহেন কার্যকলাপে বিদেশীদের কাছে বাংলাদেশে ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে উল্লেখ করে গজারিয়া ইউএনও তাকে পত্র দিয়েছে। এই পত্রে অবিলম্বে সরঞ্জামাদি কোম্পানিকে হস্তান্তরের জন্য বলেছেন। মঙ্গলবার ইউএনও মাহবুবা বিলকিস জানান, পত্রের একটি জবাব তিনি দিয়েছেন। এটি পর্যালোচনা চলছে। গজারিয়া উপজেলার মেঘনা-গোমতী নদীর পশ্চিম দিকে বাউশিয়া মৌজায় এই মালামাল আটকে রাখা হয়েছে। ইউএনও সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তুর্কী কোম্পানিটির আইনজীবী এবিএম হাবিব বিন সফি সন্ধ্যায় জানান, এখনও পর্যন্ত যন্ত্রপাতি ও মালামাল আটক রাখা হয়েছে। এগুলো আনতে গেলেই মেজর (অব) জসিম উদ্দিন লোকজন নিয়ে বাধ দিচ্ছে। জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল হাসান বাদল জানান, বিষয়টি দেশের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে মারাত্মকভাবে ক্ষুণœ করছে। তাই সরকারে উচ্চ পর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে। এদিকে পেট্রোবাংলা কোম্পানির জিটিসিএল’র (গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড) বাখরাবাদ-সিদ্ধিরগঞ্জ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ আইনুল কবির যাবতীয় বিষয় ও সংশ্লিষ্ট কাগজ দিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেছেন। পুলিশ সুপার এবং ইউএনওসহ সংশ্লিষ্টদের অনুলিপি দিয়েছেন। এর আলোকেই ইউএনও পত্রটিতে উল্লেখ করা হয়েছে- ভূমি ব্যবহারের অযুহাত দেখিয়ে এই বিদেশী কোম্পানির কাছে মেঘনা মাল্টিপারপাস কোল্ড স্টোরেজের মালিক মেজর (অব) জসিম উদ্দিন ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে এবং ভয় দেখিয়ে ৫০ লাখ ৬০ হাজার টাকা করেছেন। পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে- কোম্পানি ঘটনাটি বাংলাদেশস্থ দূতাবাসকেও অবগত করেছেন। কোন রকম চুক্তিপত্র ছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানের নিকট ক্ষতিপূরণ দাবি করায় বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণœ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বিগত ২০ অক্টোবর ২০১১ তারিখ উক্ত প্রতিষ্ঠানটি গ্যাস ট্রান্সমিশন লিমিটেডের (জিটিসিএল) সঙ্গে উল্লেখিত গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন স্থাপনের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করে। প্রকল্পের আওতায় ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ উচ্চ চাপসম্পন্ন পাইপলাইন গ্যাস কমিশনিং সফলভাবে স্থাপন করেছে প্রতিষ্ঠানটি চুক্তি অনুযায়ী কাজ শেষ করে সরঞ্জাম নিতে যাচ্ছিল। আটকে রাখা এসব যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে পুনঃরফতানির বাধ্যকতা যন্ত্রপাতিও। মেজর (অব) জসিম উদ্দিনের সঙ্গে ফোনে কথা এই বিষয়ে জানতে চাইতেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তুরস্কের কাছে যৌক্তিভাবেই ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
×