ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তদন্ত হচ্ছে অবরোধে ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষুব্ধ হয়ে হামলা চালাতে পারে

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৪ এপ্রিল ২০১৫

তদন্ত হচ্ছে অবরোধে ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষুব্ধ হয়ে হামলা চালাতে  পারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় একে অন্যকে দোষারোপ করে বিএনপি ও ছাত্রলীগের তরফ থেকে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এর আগে গত ২০ এপ্রিল রাজধানীর কাওরানবাজারে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায়ও দুটি পাল্টাপাল্টি মামলা হয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের তরফ থেকে। মামলা চারটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছে, টানা তিন মাসের অবরোধে ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষুব্ধ হয়ে হামলার ঘটনা ঘটাতে পারে। আবার পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কৌশল হিসেবেও বিএনপি এমন হামলার ঘটনা ঘটাতে পারে। প্রকৃত হামলাকারীদের শনাক্ত করতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা চলছে। গত বুধবার বিকেলে নিজ দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় বাংলামোটরে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে একদল যুবক লাঠি ও হকিস্টিক নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় খালেদা জিয়ার গাড়ি ও তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনী সিএসএফের কয়েকটি গাড়ির কাঁচ। হামলাকারীরা সিএসএফ সদস্যসহ কয়েকজনকে মারধর করে। রাতেই এ ব্যাপারে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুল কাইয়ুম অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলার এজাহার লিখে রমনা মডেল থানায় পাঠান। এজাহারে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও গাড়িতে ভাংচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। একই ঘটনায় বুধবার রাতেই শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক বাবু হাসান অজ্ঞাত ৩০-৪০ জনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ রমনা মডেল থানায় জমা দেন। রমনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, অভিযোগ দুটি বৃহস্পতিবার সকালে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। মামলা তদন্ত চলছে। হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। রমনা থানা পুলিশ জানায়, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদপ্রার্থী সাঈদ খোকনের নির্বাচনী লিফলেট বিলির সময় নেতাকর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গাড়ি ধাক্কা দেয়। এতে লিটনসহ কয়েকজন আহত হন। এর প্রতিবাদ করলে গাড়িতে থাকা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের হুকুমে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাকর্মীরা শটগান ও লাঠিসোটা দিয়ে তাদের ওপর আঘাত করে। এছাড়া সাঈদ খোকনের লিফলেট কেড়ে নিয়ে কর্মীদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়। আহত লিটন শেখ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, গত ৫ জানুয়ারি থেকে প্রায় তিন মাস বিএনপি সারাদেশে টানা অবরোধ আর খ- খ- হরতাল পালন করে। হরতালে চোরাগোপ্তা পেট্রোলবোমা হামলায় দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হন অন্তত আড়াইহাজার মানুষ। আহতদের মধ্যে অন্তত হাজারখানেক মানুষকে চিরতরে পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়েছে। অন্তত তিন হাজার যানবাহন ভাংচুর করা হয়েছে। এতে যানবাহন মালিকদের ক্ষতি হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচীর কারণে এমন ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। অথচ ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপারে বিএনপি নির্বিকার। এসব কারণে ক্ষতিগ্রস্তরা বিএনপির ওপর চরম ক্ষিপ্ত। ক্ষুব্ধ জনতা বিএনপি চেয়ারপার্সনের গাড়িবহরে হামলা চালাতে পারে। এছাড়া নির্বাচনে জয়ী হতে সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপাতেও বিএনপিও এমন পরিকল্পিত হামলার নাটক সাজাতে পারে। প্রকৃত হামলাকারীদের শনাক্ত করতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা চলছে। যদিও সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হামলার সঙ্গে জড়িত কেউ শনাক্ত হয়নি।
×