ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘শেখ জামাল পাঁচে পাঁচ’

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ২৪ এপ্রিল ২০১৫

‘শেখ জামাল পাঁচে পাঁচ’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত লীগের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডের জয়রথ অব্যাহত আছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ‘মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে দিনের এক ম্যাচে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচেও টানা জয় কুড়িয়ে নিয়েছে ‘বেঙ্গল ইয়োলোস’ খ্যাত জামাল। তারা ২-১ গোলে হারায় টিম বিজেএমসিকে। খেলার প্রথমার্ধে স্কোরলাইন ছিল ১-১। জামালের পক্ষে গোলদুটি করেন দুই বিদেশী ফরোয়ার্ড ওয়েডসন এ্যানসেলমে ও এমেকা ডার্লিংটন। আর বিজেএমসির পক্ষে গোল করেন অধিনায়ক-মিডফিল্ডার নাইজিরিয়ান স্যামসন ইলিয়াসু। ৫ ম্যাচের সবই জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানটি অক্ষুণœ রেখেছে জামাল। পয়েন্ট ১৫। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে চতুর্থ হারে ১ পয়েন্ট নিয়ে ১১ দলের মধ্যে আগের অষ্টম অবস্থানেই আছে বিজেএমসি। ম্যাচের শুরু থেকেই গোলের জন্য খেলতে থাকে দু’দল। আক্রমণে করে প্রথম সফলতা পায় টিম বিজেএমসি! খেলার ২৩ মিনিটে সময় অধিনায়ক-মিডফিল্ডার নাইজিরিয়ান স্যামসন ইলিয়াসু পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে দর্শনীয় শটে গোল করে এগিয়ে নেন টিম বিজেএমসিকে (১-০)। গোল হজম করে বিজেএমসির সীমানায় আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় কোচ মারুফুল হকের শিষ্যরা। ৩৩ মিনিটে জামালের হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েডসন এ্যানসেলমে গোল করে খেলায় ফেরান শেখ জামালকে (১-১)। বিরতির পর মাঠে ফিরে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে উভয় দলই। শেখ জামালের আক্রমণ প্রতিহত করে মাঝে মাঝেই আক্রমণে যায় টিম বিজেএমসি। ৭১ মিনিটে ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবনের শট জামালের গোলরক্ষক মাজহারুল ইসলামকে পরাস্ত করে বল গোলপোস্টের পাশ গেলে গোল থেকে বেঁচে যায় শেখ জামাল। এর দুই মিনিট পর (৭৩ মিনিটে) প্রতিপক্ষের সীমানায় ফ্রিকিক পায় জামাল। মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম বাঁ পায়ে নিজ খেলোয়াড়কে উদ্দেশ্য করে বলটিকে উড়িয়ে দেন পেনাল্টি বক্সের ভেতরে। বাতাসে ভাসা বলে হেড করে নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা ডার্লিংটন বল পাঠিয়ে দেন বিজেএমসির জালে (২-১)। শেষ পর্যন্ত আর গোল না হলে ২-১ গোলের জয় ও পূর্ণ তিন পয়েন্ট পাওয়ার আনন্দ নিয়ে মাঠ ছাড়ে শেখ জামাল দল। শেখ জামাল এবার মৌসুম-সূচক ফেডারেশন কাপ জিতেছে। দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই জাতীয় দল এবং যুব দলের হয়ে খেলায় পুরো দল নিয়ে বেশিদিন অনুশীলন করতে পারেনি কোচ মারুফুল হকের অধীনে। ফলে প্রস্তুতি তেমনটি হয়নি। তারপরও কোচ মারুফুল দলকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো করেই গড়ে তুলেছেন। তারই প্রমাণ তাদের টানা পাঁচ ম্যাচে জয়। গত মৌসুমে বেশ জাঁকজমক সহকারে দলবদল করেছিল শেখ জামাল। ১০ কোটি টাকা দিয়ে দল গড়েছিল তারা। দলে ছিল জাতীয় দলের ১১ ফুটবলার। রেকর্ড ৬০ লাখ টাকায় হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড সনি নর্দেকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলামকে দেয়া হয় ৩৭ লাখ টাকা, যা ছিল দেশীয় ফুটবলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়ার রেকর্ড। রেজাল্ট? ফেডারেশন কাপ ও প্রিমিয়ার লীগে চ্যাম্পিয়ন, ভারতের আইফএ শিল্ডে রানার্সআপ এবং ভুটানের কিংস কাপে চ্যাম্পিয়ন (২০১১ সালে নেপালের সাফাল পোখারা গোল্ডকাপ জেতার পর এটা তাদের বিদেশ থেকে জেতা দ্বিতীয় সাফল্য) সব মিলিয়ে ৩টিতে চ্যাম্পিয়ন ও ১টিতে রানার্সআপ নিঃসন্দেহে নজরকাড়া সাফল্য। শুধু তাই নয়, জামালের এমন সাফল্যের কারণেই তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলার আগ্রহ প্রকাশ করে দক্ষিণ কোরিয়ার শক্তিশালী ফুটবল ক্লাব বুসান আই পার্ক। ঢাকায় এসে তারা জামালকে ২-০ গোলে হারিয়ে গেলেও জামালের আক্রমণাত্মক খেলা সবার প্রশংসা কুড়ায়। মোট কথা, বাংলাদেশের মধ্যে তো বটেই, জামালকে এখন অনেক ফুটবলবোদ্ধাই রায় দিচ্ছেন ‘দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফুটবল ক্লাব’ হিসেবে।
×