ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অভিমত ॥ কেন সেনাবাহিনীকে জনগণ ভয় পাবে?

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২৬ এপ্রিল ২০১৫

অভিমত ॥ কেন সেনাবাহিনীকে জনগণ ভয় পাবে?

সেনাবাহিনীকে জনগণ কেন ভয় পাবে? সেনাবাহিনী জনগণের বন্ধু। মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর মূলমন্ত্র হচ্ছে- ‘সমরে আমরা, শান্তিতে আমরা, সর্বত্র আমরা দেশের তরে।’ সেনাবাহিনী সমরে ও শান্তিতে সব সময় দেশ রক্ষার কাজে সদা প্রস্তুত। জনগণের সেনাবাহিনী একাত্তরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনী দেশের স্বাধীনতার জন্য জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। সেনাবাহিনী জনগণের থেকে আলাদা কোন সত্তা নয়, জনগণেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ যে কোন জাতীয় দুর্যোগ ও সঙ্কটে জনগণের পাশে এসে দাঁড়ায়। জনগণও চায় তাদের সঙ্কটকালে তাদের পাশে এসে দাঁড়াক সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী জনগণের আস্থার প্রতীক, নির্ভরতার প্রতীক। সেনাবাহিনীকে জনগণ তাদের দুর্দিনে কাছে পেয়ে আশ্বস্ত হয়, নিরাপদ বোধ করে। বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে, জনগণকে রক্ষা করে সেনাবাহিনী। এটাই তাদের মূল দায়িত্ব। তাদের দেশের জনগণ নয়, বরং বহিঃশত্রুরা ভয় করে। এটাই স্বাভাবিক। জাতীয় উন্নয়নেও সেনাবাহিনী দক্ষতা ও সততার সঙ্গে অংশগ্রহণ করে আসছে। হাতিরঝিল প্রকল্প দ্রুততা ও দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে সেনাবাহিনী। বনানী ওভারপাস, মিরপুর-এয়ারপোর্ট রোড ফ্লাইওভার (রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার), রুমা ও থানচি সড়ক সেতু নির্মাণ ইত্যাদি উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করেছে সেনাবাহিনী। তাছাড়া কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সরকারের অনুগত হিসেবে তার ওপর অর্পিত যে কোন দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনে নিষ্ঠাবান। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন সিডর ও আইলা পরবর্তী উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে ভূমিকা রেখেছে সেনাবাহিনী। রানা প্লাজা ধস পরবর্তী উদ্ধার ও পুনর্বাসন কাজে সফলতার সঙ্গে অংশ নিয়েছে সেনাবাহিনী,যা দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অবকাঠামো স্থাপনা বঙ্গবন্ধু সেতুর নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনী। তাছাড়া নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ তদারকির দায়িত্ব পালন করছে সেনাবাহিনী। নির্মাণ-পরবর্তী নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও দেয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে। এজন্য গঠন করা হয়েছে আরও একটি কম্পোজিট ব্রিগেড। সরকার কোন গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের দায়িত্ব সেনাবাহিনীর ওপর অর্পণ করে নিশ্চিন্ত থাকতে পারে, আস্থা রাখতে পারে। সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালনে যে পেশাদারিত্ব, দক্ষতা, সততা, নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার নজির স্থাপন করে আসছে তা অন্যরাও যদি অনুশীলন ও কার্যক্ষেত্রে অনুসরণ করে তাহলে দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি আরও বেগবান হবে এবং দেশ এগিয়ে যাবে দ্রুত সমৃদ্ধির পথে। সেই সঙ্গে বর্তমান সরকারের মেয়াদেই বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ থেকে উন্নত রাষ্ট্রের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যেতে পারবে। তবে এজন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে জনগণের আস্থার সম্পর্ক স্থাপন। তাহলেই এ দেশ হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় গোটা প্রজন্ম।
×