ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চার কোটি টাকার কাজ ভাগবাটোয়ারা

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ২৬ এপ্রিল ২০১৫

টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চার কোটি টাকার কাজ ভাগবাটোয়ারা

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ২৫ এপ্রিল ॥ টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ ও সদর উপজেলা এ দুই সরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার কোটি ৩৪ লাখ টাকার টেন্ডার ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার ছেলের নিয়ন্ত্রণে এসব কাজ নামধারী সরকারদলীয় কতিপয় ক্যাডার ও বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ঠিকাদারদের মাঝে ভাগবাটোয়ারা করা হয়। আর এসব কাজের বিপরীতে শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ টাকা নেয়া হয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বরাবর একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ জেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা উন্নয়নের জন্য গত ২০ এপ্রিল দুই কোটি ৯১ লাখ টাকার ২২ গ্রুপে দরপত্র (নং-৫ উন্নয়ন-২০১৪/২০১৫) আহ্বান করে। জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার ছেলের শুভর নেতৃত্বে সাধারণ ঠিকাদারদারদের দরপত্র কিনতে নিষেধ করা হয়। তিনি তার বাবার অফিসে বসে পুরো টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ ও শেষ করেন। পরে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় জামায়াত-বিএনপি সমর্থিত ঠিকাদার ও চিহ্নিত কতিপয় সন্ত্রাসীদের মাঝে এসব কাজ ভাগভাটোয়ারা করা হয় শতকরা ১০ থেকে ১৫ পার্সেন্ট টাকা নিয়ে। জেলা পরিষদের এক কর্মকর্তা জানান, এ কারণে সরকার প্রায় ২০ লাখ টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। অভিযোগকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক বেনজীর রশিদ জানান, জেলা পরিষদ প্রশাসকের ছেলে শুভর নির্দেশে সরকারদলীয় কয়েকজন চিহ্নিত ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে ও জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় জামায়াত-বিএনপি সমর্থিত ঠিকাদারদের নিয়ে গোপন বৈঠক করে কাজগুলো ভাগাভাগি করা হয়। সাধারণ ঠিকাদারদের কোন সিডিউল কিনতে দেয়া হয়নি। এ কাজ ভাগবাটোয়ারা করে দেয়ায় সাধারণ ঠিকাদারদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আশঙ্কা করছেন জেলা পরিষদের ২২ গ্রুপের একটিরও কাজ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হবে না। তার দেয়া অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা বুঝে নিয়েছেন বলেও জানান তিনি। অপরদিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা এলজিইডির নিয়ন্ত্রণাধীন ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৭ গ্রুপে উন্নয়ন কাজের দরপত্র (নং-৭, এডিপি-২০১৪/২০১৫) আহ্বান করা হয়। একই কায়দায় ওই ২৭ গ্রুপের কাজও এক জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে ভাগবাটোয়ারা করা হয়। সাধারণ ঠিকাদারদের অভিযোগ তারা কেউ দরপত্রে অংশ নিতে পারেননি। এতেও সরকার প্রায় ১০ লাখ টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. গাজী মোঃ সাইফুজ্জামান জানান, যথানিয়মে টেন্ডার কল করা হয়েছে। সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচন করেই কাজ দেয়া হয়েছে। স্বচ্ছভাবে কাজ আদায় করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
×