ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ॥ উন্নয়ন কাজে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ॥ উন্নয়ন কাজে অনিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ কক্সবাজারে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে হাতি বেষ্টনীর সীমানা দেয়াল নির্মাণসহ সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদাররা ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে নির্মাণ কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে বলে অভিযোগ করছেন সাফারি পার্কে দায়িত্বরতদের অনেকে। ঠিকাদারকে সরকারী প্রাক্কলন মতে কাজ করার অনুরোধ জানালেও কার্যাদেশ ও সিডিউল উপেক্ষা করে ঠিকাদার যেততেনভাবে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সীমানা দেয়ালসহ নতুন নির্মিত অবকাঠামো ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছে পার্কের কর্মকর্তারা। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) শনিবার নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে ঠিকাদারের দুর্নীতি ও অনিয়মের সত্যতা পান বলে জানা গেছে। জানা যায়, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ককে দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিকায়ন করতে চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পার্কে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে কয়েক মাস আগে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে টেন্ডার আহ্বান করে। ইতোমধ্যে টেন্ডারের মাধ্যমে সাফারি পার্কের ভেতর তিন কিলোমিটার হাতি বেষ্টনী নির্মাণ, প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের পেছনে নতুন অফিস ভবন নির্মাণ ও পার্কের সামনের মাঠে বাগানের নতুন রাস্তা নির্মাণ, মাটি কেটে পুকুর খনন, বিশ্রামাগার নির্মাণ, মিনি ফাস্টফুডের দোকান নির্মাণ, ড্রেন নির্মাণসহ আরও কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব উন্নয়নমূলক কাজগুলো পান স্থানীয় বাসিন্দা ঠিকাদার পিয়ারুল ইসলাম, চিরিঙ্গার কাজল, গিয়াস উদ্দিন, বাবুল ও ইটভাটা মালিক নুরু বক্স এবং চট্টগ্রামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ ১০টি প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে উন্নয়ন কাজ পাওয়া ঠিকাদারদের অনেকে বেশিরভাগ স্থানীয় হওয়ায় তাঁরা নির্মাণ কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিচ্ছেন। এ ধরনের অভিযোগ তোলেন সাফারি পার্ক সংশ্লিষ্টরাও। ঠিকাদাররা সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করে যেনতেনভাবে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ায় পার্কের কর্মকর্তারা সীমানা দেয়াল নির্মাণ কাজের বিপুল অবকাঠামো ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদাররা সিন্ডিকেট করে সিডিউলবহির্ভূতভাবে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমে বাস্তবায়নাধীন ওইসব উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সহজেই মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে এবং টেকসই ও স্থায়িত্ব নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রাকিবুল হাসান মুকুল বলেন, সীমানা দেয়াল নির্মাণ কাজে ঠিকাদাররা সিডিউল লঙ্ঘন করেছেন। ইতোমধ্যে তাঁরা কাজে ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। ফলে পার্কের কর্মকর্তারা কাজের কিছু অবকাঠামো ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে সেখানে কাজ করার জন্য ঠিকাদারকে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরেজমিন তদন্ত করে দুর্নীতি ও অনিয়মের ঘটনাটি সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।
×