ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জামায়াতপন্থী ডাক্তারের কারসাজিতে কিশোরীর নিম্নাঙ্গ অচল!

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ৩০ এপ্রিল ২০১৫

জামায়াতপন্থী ডাক্তারের কারসাজিতে কিশোরীর নিম্নাঙ্গ অচল!

বাবুল হোসেন, ময়মনসিংহ ॥ জামায়াতপন্থী অর্থলোভী অর্থোপেডিক্স সার্জনের কারসাজিতে কিশোরী খোদেজা আক্তারের কোমর থেকে নিম্নাঙ্গ অচল হয়ে গেছে। অভিযোগ, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সংযুক্ত উক্ত সার্জনের মনগড়া চিকিৎসায় এই কিশোরী গত দুই বছর ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। শহরের চরপাড়া এলাকায় আলোচ্য সার্জনের স্ত্রীর মালিকানাধীন ট্রমা সেন্টার এ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক একটি অপারেশনের পর থেকে খোদেজার কোমর থেকে নিম্নাঙ্গ অচল হয়ে পড়ে। বিতর্কিত এই সার্জনের শরণাপন্ন হওয়ার পর থেকে খোদেজাকে বাসাভাড়া ও চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে গুনতে হয়েছে ছয় লাখ টাকার উপরে। এজন্য বাড়ির জায়গাজমি ও জমানো টাকাসহ সহায়-সম্বল সবই বিক্রি করে দিতে হয়েছে। খোদেজা জানায়, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসাতালের নিউরো সার্জন ডাঃ সৌমিত্রের কাছে পরামর্শ আনতে গেলে তাঁর সঠিক চিকিৎসা হয়নি ও গাফিলতির কথা জানতে পারে। ভুল চিকিৎসা ও গাফিলতির কারণে তার জীবনের সর্বনাশের জন্য দায়ী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে খোদেজা। একই সঙ্গে দায়ী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) কাছেও তদন্ত দাবি করেছে পঙ্গু খোদেজা। নাম প্রকাশ করতে চাননি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একাধিক বিশেষজ্ঞ সার্জন জানান, খোদেজার সোজা হয়ে উঠবস ও চলাফেরা করার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। স্থানীয় মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা জানান, খোদেজা মেডিসিনের রোগী হওয়ার পরও কিভাবে একজন অর্থোপেডিক্স সার্জন অপারেশনসহ চিকিৎসা দিতে পারেন, এটি তদন্ত হওয়া উচিত। অমানবিক ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সংলগ্ন চরপাড়া এলাকাজুড়ে তোলপাড় চলছে। দাবি উঠেছে একের পর এক ভুল চিকিৎসার জন্য আলোচিত চিকিৎসকের তদন্তপূর্বক বিচারের। ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডাঃ মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ক্লিনিক ও দায়ী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওই চিকিৎসক জানান, খোদেজাকে সারিয়ে তোলার সব চেষ্টাই তিনি করেছেন। অপারেশন না করে পুঁজ বের করা যেত কিনা কিংবা রড স্ক্রু ঢোকানোর প্রয়োজন কতটুকু ছিল- প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ক্ষয়ে যাওয়া স্পাইন সোজা ও সচল রাখতেই এটি করতে হয়েছে। চিকিৎসায় ভুল ও গাফিলতিসহ খোদেজার সুস্থ হয়ে ওঠার আশ্বাসের কথাও স্বীকার করেননি এই চিকিৎসক। রোগীরা কখনও মিথ্যা কথা বলে না এমন অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে ময়মনসিংহ মেডিক্যালের একাধিক সার্জন জানান, অপারেশনের আগে রোগীকে এর ভালমন্দের দিক বলে নিলে এখন এই প্রশ্ন উঠত না।
×