মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিহত তামান্নার পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ একমাস আগে রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম বিমানবন্দরে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কো-পাইলট তামান্না রহমান হৃদির নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার পরিবার। সোমবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্তরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে তামান্নার বাবা ডাঃ আনিসুর রহমান একথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত তামান্না রহমানের মা রেহানা ইয়াসমিন। এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ করা হয়, আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী ফ্লাইং একাডেমি এবং সিভিল এ্যাভিয়েশনসহ যে কোন বিমানবন্দরের রানওয়েতে ২৪ ঘণ্টা ফায়ার সার্ভিস টিম, রেসকিউ টিম ও এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার কথা, যাতে কোন দুর্ঘটনা ঘটনার দুই মিনিটের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়। কিন্তু রাজশাহী বিমানবন্দরে যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন সেখানে কিছুই ছিল না। ঘটনার পর স্থানীয়রা এগিয়ে এলেও ২১ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এগিয়ে আসেন। ততক্ষণে মেয়ে তামান্না পুড়ে কয়লা হয়ে যায়। এ সময় আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি তিন দশকেরও বেশি পুরনো এবং প্রায় ভাঙ্গা প্লেন নষ্ট সিটবেল্ট, নষ্ট হুইল, পুরনো ক্ষয়ে যাওয়া ইঞ্জিন দিয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়া। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির চীফ ইঞ্জিনিয়ার মনিরুজ্জামান কোন সার্টিফিকেট ছাড়াই এখানে প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে রয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে তামান্নার বাবা ডাঃ আনিসুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির পাহাড় সমান দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার জন্য আমার সম্ভাবনাময় একমাত্র মেয়েকে হারালাম। তাই বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির নানা অব্যস্থাপনার তথ্য প্রমাণাদি সংগ্রহ করা হয়েছে, খুব দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করব। এছাড়াও ঘটনার দীর্ঘদিন পার হওয়ার পরেও তদন্ত রিপোর্ট না দেয়ার তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বিএমএ’র রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সভাপতি ডাঃ তবিবুর রহমান শেখ, রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ হেদায়েতুল্লাহ, বিএমএ রাজশাহীর সভাপতি ডাঃ দীপক কুমার মোহান্ত উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল রাজশাহীতে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি এ্যান্ড সিভিল এ্যাভিয়েশনের সাসনা-১৫২ প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে তামান্না রহমানের (২২) মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় প্রশিক্ষক লে. কর্নেল (অব) সাঈদ কামাল গুরুতর আহত হন।